• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:০১ অপরাহ্ন

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার শিলক ইউনিয়ন যুবলীগ এখন মাদক সিন্ডিকেটের কবলে! 


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ১৩, ২০২১, ১১:২৬ অপরাহ্ন / ৫১৭
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার শিলক ইউনিয়ন যুবলীগ এখন মাদক সিন্ডিকেটের কবলে! 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া শিলক ইউনিয়ন যুবলীগ এখন বেপরোয়া ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট গ্রাসে নিমজ্জিত। বেপরোয়া এই সিন্ডিকেটের হাতে লাঞ্চিত খোদ ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ। সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন অন্যতম সদস্যের মধ্যে পারভেজ ও আরিফ অন্যতম আতঙ্ক হিসেবে এলাকাবাসীর নিকট পরিচিত।

ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ ও কক্সবাজারে থাকা আরিফ যিনি চাকরি করার নামে পারভেজ বাহিনীর ইয়াবা সরবরাহকারী হিসাবে এলাকায় পরিচিত। পারভেজ ও আরিফ সহ এই গ্রুপ মাদক ব্যবসা, ছিটকে চুরি, ডাকাতির মত সকল অপকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানা যায়।
যেকোনো তুচ্ছ ঘটনায় সাধারণ মানুষের ঘর বাড়িতে আক্রমণ যুবলীগের এই গ্রুপের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
সাইনবোর্ড হিসেবে যুবলীগের পদে থেকে মানুষের সাথে জোর জুলুম করে শিলক ইউনিয়নকে পরিণত করেছে আতঙ্কের জনপথে। পারভেজ গ্রুপের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে মামলা-হামলা করে দেয়া হয় চরম শিক্ষা। সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপটে এতটাই বেপরোয়া তারা যে তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ কিছু বলতে পারেনা। এমন কি ফেসবুকেও কেউ তাদের অপকর্ম ও তাণ্ডবের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসে বাহিনীর লোকজন । সবাই মিলে মারধর করে। এলাকায় এমন কয়েকটি ঘটনার পর কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস দেখায়না।
বাহিনীর প্রধান পারভেজের বাবাও একজন এলাকার জুলুমবাজ ও অর্থ আত্মসাৎকারী হিসাবে পরিচিত। এলাকার কৃষি উন্নয়নে সেচ প্রকল্প (লাভার ড্রেনের) সভাপতি থাকাকালীন কৃষকদের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেন তিনি। দলীয় ক্ষমতা আর ছেলে পারভেজের বেপরোয়া বাহিনীর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। পরে দলীয় ক্ষমতায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া হয়েছে।
পারভেজ বাহিনীর প্রধান পারভেজের ভয়ে এলাকার কেউ কিছুই বলতে বা করতে পারেনি বাবার অর্থ আত্মসাৎ ঘটনায়।
এছড়াও শিলকে কোন প্রবাসী বাড়ি নির্মাণ করলে পারভেজ বাহিনীকে চাঁদা দিতে হবে, তাদের চাঁদা না দিলে বাড়ির কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি কেউ তাদের এই নির্দেশ অমান্য করে তাহলেই সেসব পরিবারের উপর হামলা ও নির্যাতন করে পারভেজ বাহিনীর লোকজন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে দেয়া হয় মারধরের হুমকি। এলাকার উঠতি বয়সী কিশোরদের দিয়ে নিরবে ইয়াবা ব্যবসা, ছিটকে চুরি ও ডাকাতির সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী হিসাবে এই বাহিনী এলাকার লোকমুখে এক আতঙ্কের নাম।
এলাকায় হামলা মামলা নির্যাতন মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অসামাজিক ও সমাজ বিরোধী কার্যকলাপের পরেও বারবার যুবলীগের সাইনবোর্ড দিয়ে রেহাই পেয়ে যান বলে এলাকাবাসীর অনেকের মাঝেই ক্ষোভ বিরাজ করছে।
রাঙ্গুনিয়ার শিলক ইউনিয়ন যুবলীগের এই বেপরোয়া সিন্ডিকেটে জড়িত সদস্য সংখ্যা প্রায় ডজনখানেক। যার মধ্যে হিমু ডাকাত, ইয়াবা সেলিম, কক্সবাজার থেকে ইয়াবা সরবরাহকারী আরিফ, আসিফ, প্রকাশ সহ রয়েছে দলে আরো বেশ কয়েকজন সদস্য। সাথে রয়েছে তাদের সহযোগী হিসেবে গঠিত এলাকার কিশোর গ্যাং। এসব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এলাকায় জোর-জুলুম মাদক ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে পারভেজ বাহিনী।
এলাকায় কারো জমিজমা নিয়ে কোনো বিরোধ সমস্যা দেখা দিলে মীমাংসার কথা বলে চাঁদা দাবি করে। এলাকায় মুদি দোকান থেকে জোর করে বাকিতে বাজার নিয়ে দোকানি টাকা-পয়সা চাইলে উল্টা মারধর মামলা-হামলার ভয় দেখানোর ঘটনাও ঘটেছে। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে, সামান্য কিছু বেপরোয়া মাদক সিন্ডিকেটের কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের দুর্নাম হচ্ছে বলে মনে করেন এলাকার অন্যান্য দলীয় নেতাকর্মীরা।
এলাকায় যেভাবে মাদক আসে:
আরিফুল হক ওরফে (আরিফ) দীর্ঘদিন কক্সবাজারে চাকরি করে সেই সুবাদে কক্সবাজার থেকে ইয়াবার ব্যবসা পারভেজ বাহিনীকে সরবরাহ করে।
পারভেজ এর নেতৃত্বে পারভেজ বাহিনীর হিমু ডাকাতের মাধ্যমে উঠতি বয়সী কিশোরীর দিয়ে এলাকায় চলে মাদক বিক্রির জমজমাট ব্যবসা। শিরকের শিলক বাজার, ফকিরহাট, আমতল, কুদ্দুস মার্কেট এলাকায় মাদকের হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত। এসব স্পট ছাড়াও পারভেজ এর নেতৃত্বে পারভেজ বাহিনীরা এলাকায় মাদকের হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকে বলে জানা গেছে।
রাঙ্গুনিয়া শিলক ইউনিয়নের পারভেজ বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য বিভিন্ন সময় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে জানা যায়।
ক্ষমতাসীনদলের যুবলীগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এলাকায় এসব সিন্ডিকেটের বেপরোয়া কার্যক্রমের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা এলাকাবাসীর মানে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে।
এ সিন্ডিকেটের আরও বিস্তারিত তথ্য ও প্রশাসন ভুক্তভোগী অভিযুক্তদের বক্তব্য সহকারে থাকবে সকালের সংবাদ এর পরবর্তী পর্বে।