• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচন : নির্বাচন ফেলে ‘পিকনিকে রামুর শতাধিক জনপ্রতিনিধি!


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৭, ২০২২, ১২:৪৪ অপরাহ্ন / ৭৭
কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচন : নির্বাচন ফেলে ‘পিকনিকে রামুর শতাধিক জনপ্রতিনিধি!

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার: কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনের শতাধিক ভোটারকে (সবাই তৃণমুল জনপ্রতিনিধি) রাঙামাটি-বান্দরবানে পিকনিকে’ নেওয়া হয়েছে। রামু উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন পরিষদের শতাধিক চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দল গত দু’দিন ধরে পাহাড়ে ‘পিকনিকে’ মেতে উঠেছেন। তাদের আজ সোমবার পাহাড় থেকে নামিয়ে সরাসরি ভোটকেন্দ্রে আনার কথা জানা গেছে। পিকনিকের আয়োজক হিসাবে জেলা পরিষদের সদস্যপ্রার্থী ফরিদুল আলমের নাম উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে জেলা পরিষদের একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ প্রভাবশালীরা নেপথ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও প্রভাবশালীর নাম কেউই প্রকাশ করতে রাজি নন।

এদিকে পাহাড়ে পিকনিকের নামে এসব ভোট আদায়ের কৌশল হিসাবে তাদের ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্ধি সদস্য প্রার্থী শামসুল আলম মন্ডল। প্রতিদ্বন্ধি সদস্য প্রার্থী এসব বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ নির্বাচনী আইন-শৃংখলা বিষয়ক সভায় মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো সমাধান না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবারই রামু উপজেলা সদরের মন্ডল পাড়া এলাকা থেকে বিলাসবহুল ২টি এসি বাস এবং আরো কয়েকটি মাইক্রো ও প্রাইভেট কার যোগে রামু উপজেলার এসব চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দল রাঙ্গামাটিতে রওনা দেয়। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে রয়েছেন ১৪৫ জন চেয়ারম্যান ও মেম্বার। এদিকে বান্দরবানের একটি বিলাস বহুল হোটেলে উঠা চেয়ারম্যান-মেম্বারগণ তাদের ফেসবুকে পিকনিকের নানা ছবিও পোষ্ট করছেন। এতো সংখ্যক জনপ্রতিনিধিকে (ভোটার) নির্বাচনের সময় পাহাড়ে পিকনিকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি এখন গোটা কক্সবাজারে আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।

পাহাড়ের কথিত পিকনিকে যোগ দেওয়া রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার শহিদুল ইসলাম শফিক রবিবার রাতে জানান, আমরা রাঙ্গামাটি থেকে বান্দরবানের পথে রয়েছি। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা অন্যান্য মেম্বারগণ এখানে এসেছি। জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী ফরিদুল আলম বান্দরবানে আমাদের সাথে মিলিত হবেন। তিনি জানান, একটি ভোট উপলক্ষে তাদের সবাইকে পরিকল্পিত ভাবে পাহাড়ে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কক্সবাজার জেলা পরিষদের নির্বাচনে রামু উপজেলায় রয়েছেন ৪ জন সদস্য প্রার্থী। তাদের মধ্যে ফরিদুল আলম নামের একজন সদস্য প্রার্থী উপজেলার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিয়ে পাহাড়ে পিকনিকের আয়োজন করেন।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী এবং রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল বলেন, জোর জবরদস্তি করেই চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পিকনিকের নামে পাহাড়ে অবরুদ্ধ করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের কারো সাথে সাক্ষাতেরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তাদের প্রত্যেককে চোখে চোখে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, পিকনিকের নামে পাহাড়ে কৌশলে ভোটারদের অবরুদ্ধ করে রাখার নেপথ্যে আরো অনেক প্রভাশালীরা জড়িত রয়েছেন। তবে তিনি প্রভাবশালীদের নাম প্রকাশ করেননি। তিনি জানান, এসব কৌশলের অংশ হিসাবে আজ সোমবার বান্দরবান থেকে সরাসরি রামুতে ভোট কেন্দ্রে এনে বুথে ঢুকিয়েই ভোট আদায় করে নেওয়া হবে।

জেলা পরিষদের রামুর সদস্য প্রার্থী ও পিকনিকের উদ্যোক্তা ফরিদুল আলম জানান, আমিও এখন বান্দরবানে আমার ভোটারদের সাথে রয়েছি। ইনশাল্লাহ আগামীকাল (আজ) সোমবার সকালে এখান থেকে রামুর ভোট কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেব। দোয়া করবেন। সব জনপ্রতিনিধিরা স্বেচ্ছায় পিকনিকে গেছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের অবরুদ্ধ করার প্রশ্নই উঠে না।  পিকনিকের নেপথ্যে জড়িত প্রভাবশালী এবং জেলা পরিষদের অপর একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর নাম তিনি জানাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেছেন।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ৯৯৪ জন। চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন ৪ জন এবং নারী ও পুরুষ সদস্য প্রার্থী রয়েছেন ৪৩ জন।