• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

যশোরের বেনাপোলে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা’র অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন : প্রশাসন নীরব 


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৩০, ২০২৩, ১০:০৩ অপরাহ্ন / ৮৯
যশোরের বেনাপোলে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা’র অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন : প্রশাসন নীরব 

নিজস্ব প্রতিবেদক,বেনাপোল,যশোরঃ যশোরের বেনাপোলে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পরও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। এদিকে নিজেদের দোষ ঢাকতে দোড়ঝাপসহ ধামাচাপা দিতে বেনাপোলের বিতর্কিত সংবাদকর্মী দ্বারা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার এবং বিবাদীদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। যা জনমহলসহ সাংবাদিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

উল্লেখ্য, যশোরের শার্শা উপজেলাধীন বেনাপোল ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা কামালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এমন ধরনের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদে প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে উল্লেখ ছিলো বেনাপোল ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা কামালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

সুত্রে জানা গেছে, বেনাপোলের গয়ড়া গ্রামের মৃত্যু মিজানুর রহমানের পুত্র তোতামুল হক টুকু বাদি হয়ে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যশোর আদালতে মামলা করেন। যার মামলা নং পি-৯৩৬/২০২২।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, বাদী তোতামুল হক টুকুর পৈত্তিক সম্পত্তি ৮৬ নং গয়ড়া মৌজায় আর এস ৭৮৮ খতিয়ানে ৯১৩ দাগে ১১৯ শতক জমিতে ফলজ আম গাছ লাগানো আছে। বিবাদী একই গ্রামের তফেল আওলিয়ারের ছেলে মুছা করিম অবৈধ ভাবে জোর পুর্বক আম বাগানের ভিতর দিয়ে স্যালো মোটরের বিদ্যুৎ সংযোগ লাগায়। বিদ্যুৎ সংযোগে ১৩০ ফুট ড্রপ তার লাগানোর নিয়ম থাকলেও সেটা না মেনে অবৈধভাবে প্রায় ৮০০ ফুট ড্রপ তার লাগিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ করে উক্ত মোটর চালু করে।

এ বিষয়ে শার্শা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস গোপন সংবাদে জানতে পেরে বিবাদী মুছা করিমের স্যালো মোটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন সহ ড্রপ তার ও মিটার খুলে নিয়ে আসে। অথচ মোটর বসানোর জায়গাটি বিবাদীর নামে এবং সেখানে মুছা করিমের নিজস্ব কোন জমি নাই। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদী মুছা করিম গং বাদির দুই ভাই তুহিন ও হোসাইনকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও লোহার রডের আঘাতে মারাত্বক আহত করে।

এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানায় বিবাদী মুছা করিমসহ ১১ জনকে আসামী করে পৃথক ২টি মামলা হয়েছে। মামলা নং-৪, তাং- ৬/৮/২২ ইং, ও মামলা নং-৩০ তাং-২৩/৮/২২ ইং।

প্রকাশ থাকে যে বিবাদী মুছা করিম গং সন্ত্রাসী প্রকৃতির হওয়ায় বাদি তার ফলজ আম বাগান নিরাপদ রাখার জন্য ১৪/১১/২২ ইং তারিখে মুছা করিমকে বিবাদী করে যশোর বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করে। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট মামলা সঠিক তদন্তের জন্য শার্শা সহকারী ( ভুমি) কমিশনার’ এর মাধ্যমে বেনাপোল ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা কামাল হোসেনের নিকট দায়িত্ব দেন। অজ্ঞাত কারণে উক্ত ভুমি সহকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল গিয়ে সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিতে ব্যর্থ হন বলে অভিযোগ করেছেন বাদী মোঃ তোতামুল হক টুকু। অভিযোগে তিনি আরোও জানান, ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা কামাল হোসেন আদালতে যে তথ্য প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তা সম্পুর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে আদালতে জমাকৃত পত্রে দেখা গেছে, উক্ত প্রতিবেদনে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা লিখেছেন,
মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সরজমিনে তদন্ত করি। বাদী এবং বিবাদীর উপস্থিতিতে সরজমিনে তদকালে জানা গেল নালিশী ৯১৩ দাগের ০৭ শতকসহ হিস্যানুযায়ী জমি বাদী ওয়ারেশসূত্রে আর এস রেকর্ড পূর্ববর্তী সময় থেকে আনুমানিক ২০ বছরের অধিককাল ভোগদখল করেন। বিবাদীপক্ষ পরস্পর যোগসাজসে বাদীপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করিয়া নিজেরা অবৈধ পন্থায় লাভবান হইবার জন্য বাদীপক্ষকে অবগত না করাইয়া বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি দিয়া তফশীল বর্ণিত জমির উত্তর পাশে বাদীর জমির ভিতর দিয়া জোর পূর্বক ২টি বিদ্যুতের পিলার বসাইয়া ২ টা তার ফুলাইয়া ১ নং বাদীর স্যালো মোটরে বিদ্যুৎ সংযোগ লইবার অপচেস্টা করা সত্য নহে। কিন্তু আসলেই বিষয়টি সত্য বলে দাবী করেন বাদি টুকু।

যেখানে উক্ত বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের মারামারির ঘটনাসহ মামলা চলাকালীন সময়ে আপনি কিভাবে এমন প্রতিবেদন জমা দিলেন, এমন প্রশ্ন?

এ ব্যপারে বেনাপোল ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা কামাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জবাবে বলেন, বাদী নারাজি পিটিশন দিক, আমি পরে সঠিক তথ্য দিবো। এরপর অভিযোগকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে নিউজ প্রকাশের পর, নিজেদের দোষ ও অপরাধ ধামাচাপা দিতে কিছু বিতর্কিত সংবাদকর্মীদের সরণাপন্ন হওয়া এবং ম্যানেজ করাসহ দোড়ঝাপ শুরু করেছেন উক্ত অপরাধীরা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত বিবাদীদের পক্ষে, ৯ জানুয়ারী JASHORE POST ও ১০ জানুয়ারী বেনাপোল পোস্ট ২৪ ডটকম নামের অনলাইন পোর্টালে, “বেনাপোল ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অপসাংবাদিকতার শিকার” এমন ধরনের শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা নিয়ে সাংবাদিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশসহ আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে এখনো।

এদিকে উক্ত বিতর্কিত সংবাদকর্মী’র সংবাদে উল্লেখই করা হয়েছে নালিশী বিষয় সংক্রান্তে গয়ড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ইমামুল ইসলাম জানান,পল্লী বিদ্যুৎ এ খুটি বাদী ও বিবাদীর উপস্থিতে ও তাদের সন্মত্তি নিয়ে পোতা হয়েছে। এখন দু’পক্ষের মধ্যে মনমালিন্য হওয়ায় খুটি ও লাইন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গোলযোগ চলছে ও যা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এছাড়াও উক্ত সংবাদকর্মী Stay with Jahid
নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে, ‘বেনাপোল ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার নামে যে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা উদঘাটন। শিরোনামে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। যা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে Stay with jahid এর ফেসবুক আই ডি তে পোষ্ট ভিডিওয় বক্তব্য প্রদানকারী নুরনবী (৪০) পিতা তফেল উদ্দিন অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী গত ১৪ই জানুয়ারী বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ কতৃর্ক ইয়াবাসহ আটক হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক জানিয়েছেন এসব বিতর্কিত সংবাদকর্মী দ্বারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন। যা সাংবাদিকদের জন্য সম্মান ও অস্তিত্বের হুমকি স্বরূপ।