• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১২:০২ পূর্বাহ্ন

সব প্রগতিশীল আন্দোলনে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩, ৮:৪১ অপরাহ্ন / ৬৫
সব প্রগতিশীল আন্দোলনে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন

এম রাসেল সরকারঃ ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ সব প্রগতিশীল আন্দোলনে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অনেক বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারালেও তাদের হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনও করা যায়নি। তাদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের জাতির সামনে তুলে আনাও সাংবাদিকদের দায়িত্ব।

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধ: ইতিহাস, চেতনা ও অদম্য বাংলাদেশের গল্প এই আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া।

আলোচনায় সভায় জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আনন্দ। ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনী যে হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধীজীবীদের নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিলো আর ১৬ তারিখ আমরা জয়লাভ করি। আজকে আমি শ্রদ্ধাভরে সবাইকে স্মরণ করছি, বিশেষত যে সাংবাদিকরা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্মরণ করি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল। সে সময় প্রেসক্লাবেও বোমার আঘাত লেগেছিল। একজন আহত হয়েছিলেন। দৈনিক সংবাদ পত্রিকার শহীদ সাংবাদিক সাবের নিজ অফিসেই বোমার আঘাতে প্রাণ হারান। আজ শহীদুল্লাহ্ কায়সারের কথা মনে পড়ে। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারাবাসে ছিলেন। কারাগারেই সংশপ্তক রচনা করেছিলেন।

মফিদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলেছিলেন, সেখানে সাংবাদিকদের অবদান আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। বিশেষত সিরাজউদ্দীন হোসেন এবং তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার কথা আমি বলব। এদেশের মুক্তির পথ রচনায় সাংবাদিকদের যে অবদান, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, গত ৫১ বছর ধরে আমরা বুদ্ধিজীবী দিবস এবং বিজয় দিবস পালন করছি। এই সময়ের মধ্যে সঠিক ইতিহাস রচনার চেষ্টা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টাও হয়েছে। স্বাধীনতার চেতনা বারবার আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে কখনো অগণতান্ত্রিক শাসন, কখনো স্বৈরশাসন দ্বারা। বাধাগ্রস্ত হয়েছে স্বাধীন গণমাধ্যম। বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীরা সব প্রগতিশীল আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে। ভাষা আন্দোলনের আরও আগে ১৯৪৮ থেকে ভাষার মর্যাদাদানে ভূমিকা রাখা শুরু করে সাংবাদিকরা। বায়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টি, ঊনসত্তর এবং একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাংবাদিকরা ভূমিকা রেখে গেছেন। তাই সাংবাদিকদের বিচ্ছিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, প্রকৃত ইতিহাস রচনার জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এটি সম্ভব হয় না। হয়ত এর মধ্য দিয়েই আমরা চলছি। ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকাণ্ডের বিচার কি আমরা করতে পেরেছি? হত্যাকারীদের সঙ্গে যারা ছিল, তাদের কতটা চিহ্নিত করতে পেরেছি? আমরা শুধু স্মরণ করব না, পাশাপাশি তাদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের জাতির সামনে তুলে আনাও আমাদের দায়িত্ব।

বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, মুক্তিযুদ্ধ কালীন স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীর সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি ছিলো না। এখন এদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এ কারণে পূর্ণ গণতান্ত্রিক ভাবে বাংলাদেশ চলুক, এটা তারা চাচ্ছে না। যে পরাশক্তিরা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলো, আজও তারা বিরোধিতা করছে। তারা আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা বিরোধিতা করেছে, বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছে, তারা আমাদের সাথে মিশে গেছে। আজকে অনেকে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছেন। তাদের কিছু বলা মুশকিল!

আলোচনা সভায় সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন ইফ জার্নালিস্ট’স-এর কুদ্দুস আফ্রাদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।