• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে দলিল জালিয়াতিতে দাতা গ্রহিতা শ্রীঘরে


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৩১, ২০২৩, ১২:০২ পূর্বাহ্ন / ৬৯
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে দলিল জালিয়াতিতে দাতা গ্রহিতা শ্রীঘরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, লৌহজং, মুন্সিগঞ্জঃ মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার অফিসে জাল দলিল সম্পাদনের চেষ্টায় দাতা গ্রহিতা ও দলিল লেখকর গাড়ি চালকসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাব রেজিস্ট্রার ও লৌহজং থানার সূত্রে জানা যায়। লৌহজং থানার, এস আই মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদের মোসাঃ সুলতানা আক্তার (২৬), নান্দু তালুকদার (৭৬), দাদন তালুকদার, মোঃ ইসমাইল ভূঁইয়া (৬৬), জহুরা বেগম (৬২), জহিরুল তালুকদার (৪৩), মিঠু হোসেন (৩১), জসিম মাদবর (৪৭), কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে ।

ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, অভিযোগকারী শামীম হোসেন (৩১), লৌহজং সাব রেজিস্টার অফিসের অফিস সহায়ক ঘটনার বিবরণ দিয়ে উল্লেখ করেন ২৯/০৮/২০২৩ তারিখ সকাল ০৯.০০ টার সময় প্রতি খোলা দিনের ন্যায় লৌহজং সাব-রেজিটি অফিসে দলিল সম্পাদন কার্যক্রম শুরু হয়। জমি দাতা ও গ্রহিতাদের মধ্যে – বিক্রয়ের জন্য দলিল সম্পাদনের জন্য উভয়ের মধ্যে চুক্তি হয় এবং চুক্তি অনুযায়ী বিবাদী আমিনুল ইসলাম কাজল দলিল প্রস্তুত করে। ২৯/০৮/২০২৩ তারিখ আনুমানিক বেলা ৩ টার দিকে লৌহজং সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের এজলাসে বিবাদী আমিনুল ইসলাম কাজল প্রকৃত দাতার অনুপস্থিতিতে, মোসাঃ সুলতানা আক্তার (২৬) কে দাতা সাজাইয়া দাতার নামের সামনে ছবি পেষ্ট করিয়া পরস্পর যোগসাজশে ও অন্যান্য বিবাদীদের ইচ্ছা/সম্মতিতে দাতা ও গ্রহীতা বলিয়া উপস্থাপন করিয়া লৌহজং উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সাব-রেজিষ্টার রাশিদা ইয়াসমিন মিলি কে বোকা বানাইয়া প্রতারণামূলক ভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল সম্পাদনের চেষ্টা করে। দলিল উপস্থাপনের সময় ১০ জন প্রকৃত দাতা ও ০৪ জন প্রকৃত গ্রহীতাদের দাতা গ্রহীতা হিসাবে স্ব-শরীরে উপস্থিত করিয়া দাতা ও গ্রহীতা মিলাইয়া মোট ১৪ জনের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দলিল লেখক কর্তৃক উপস্থাপন করা হয়।

সাব-রেজিষ্টারের সামনে দলিলে দাতা-গ্রহীতাদের স্বাক্ষর গ্রহণের পূর্বে প্রস্তুতকৃত দলিলে উল্লেখিত দাতা-গ্রহীতাদের তথ্য ও জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করার সময় সাব-রেজিষ্টার রাশিদা ইয়াসমিন মিলি দেখতে পান যে, ১০ জন দাতার মধ্যে ৯ জন দাতা ও ৪ জন গ্রহীতাদের দলিলে উল্লেখিত তথ্য ও ছবির সাথে তাহাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের মিল আছে। কিন্তু সেলিনা আক্তার (২৬) এর দলিলের তথ্য ও জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে মিল থাকলেও দলিলে পেষ্ট করা ছবির সাথে জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবির মিল নাই। প্রকৃত দাতার ছবির স্থলে অন্য একজনের ছবি পেষ্ট করা হইয়াছে। তখন সাব- রেজিষ্টারের সন্দেহ পোষণ করিয়া ভাল ভাবে যাচাই ও জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সকল বিবাদীগণ বিষয়টি স্বীকার করে। দলিল সম্পাদনের জন্য জালিয়াতির আশ্রয় নিয়া জাল দলিল সৃষ্টির চেষ্টা করিয়াছে। আসামিরা আরো জানায় যে, দলিল সম্পাদনের পর গোপনে দলিলে উল্লেখিত দাতার ছবি সরাইয়া প্রকৃত ব্যক্তির ছবি পেষ্ট করিয়া উক্ত সৃজিত জাল দলিল (ষ্ট্যাম্প)টি কে প্রকৃত (খাঁটি) দলিল হিসাবে ব্যবহার করিবে। তখন উপজেলা সাব-রেজিষ্টার থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে, আসামিরা কৌশলে দ্রুত পলায়নের চেষ্টা করলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের স্টাফবৃন্দ পুলিশের সহযোগীতায় আটক করতে সক্ষম হয়।

এ ব্যাপারে দলিল লেখক আমিনুল ইসলাম কাজলের মোঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা সাব-রেজিষ্টার রাশিদা ইয়াসমিন মিলি বলেন গত মঙ্গলবার বেলা ৩ টার দিকে এজলাসে দলিল লেখক আমিনুল ইসলাম কাজল দলিল সম্পাদনের জন্য দিলে একজনের ছবি সাথে মিল না পেয়ে তাকে বার বার জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করেন যে ঐ ব্যক্তি তিনি নন। পরবর্তীতে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় লৌহজং থানা পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে আটক করা হয়।

লৌহজং থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) মো‌. সাইফুল ইসলাম বলেন আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদেরকে মুন্সিগঞ্জ বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে ।