• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রামে সুপেয় পানি পাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩, ১২:৫৪ অপরাহ্ন / ৪৭
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রামে সুপেয় পানি পাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া ইউনিয়নের লেবুতলা একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। ওই গ্রামের মানুষের সুপেয় পানির কষ্ট লাঘবের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি বেজ টিউবওয়েল স্থাপন করে দিয়েছে।

শুধু লেবুতলা গ্রামই নয় এ সুবিধা ভোগ করছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া, বর্ণি, কুশলী ও গোপালপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের ১৮০ পরিবার। এতে সহজেই সুপেয় পানি পাচ্ছে ওই গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠিীর মানুষ।

আগে সেখানে রান্নার জন্য ব্যবহার করা হতো পুকুর অথবা খালের পানি। আর খাবারের পানি ফুটিয়ে পান করতো। কেউ কেউ দূরের গভীর নলকূপ থেকে পানি এনে পান করতেন। ফলে গ্রামটির মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে ভুগতেন।

এখন এই কমিউনিটির বেজ টিউবওয়েলে ট্যাপ ঘোরালেই পানি পড়ে। এছাড়া টিউবওয়েল বসাতে উপকারভোগীদের কোন টাকা খরচ বহন করতে হয়নি। শুধুমাত্র যে বিদ্যুৎ বিলটি আসে, সেটি শুধু পরিশোধ করতে হয়। যদি ২ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে সেটা ১০ পরিবার ২০০ টাকা করে ২ হাজার টাকা পরিশোধ করে।

গ্রামের শহরের সুবিধা দিতে ৪ ইউনিয়নে মোট ১৮টি কমিউনিটি বেজ টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এক একটি টিউবওয়েল থেকে ১০ থেকে ১৫টি পরিবার পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানির সুবিধা পাচ্ছে। প্রতিটি টিউবওয়েল প্ল্যান্ট বসাতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সে হিসাবে ১৮টি প্লান্ট স্থাপনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ৭০ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় করেছে।

লেবুতলা গ্রামের উপকারভোগী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিজয় বাড়ৈ বলেন, আমাদের গ্রাম প্রধানমন্ত্রীর নিজ উপজেলা টুঙ্গিপাড়ার আন্তর্গত। এখানে সুপেয় পানির তীব্র সংকট ছিল। ফলে আমরা পানিবাহিত রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হতাম। কিন্তু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ঘরের দুয়ারে সুপেয় পানি পৌঁছে দিয়েছে। এ লাইনে ২৪ ঘন্টাই পানি পাওয়া যায়। এ পানি পান করে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি। শহরের সুবিধা আমরা গ্রামেই পাচ্ছি তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

কুশলী ইউনিয়নের কুশলী গ্রামের বৃদ্ধা ঝরনা বেগম বলেন, পানির জন্য আমাদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। যাদের টাকা পয়সা আছে তারা তো পানি কিনে খেতে পারে। কিন্তু আমাদের মত গরিব মানুষের পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ নেই। সরকার থেকে আমাদের এখানে একটি টিউবয়েল স্থাপন করে দিয়েছে। সেই টিউবওয়েল থেকে লাইন লাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে সহজেই সুপেয় পানি পাচ্ছি।

বর্ণি ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের মালেকা বেগম বলেন, আমাদের গ্রামে সুপেয় পানির বড়ই অভাব ছিল। সরকার থেকে টিউবওয়েল দেওয়ার পর সেখান থেকে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি পাচ্ছি। এ পানির স্বাদ ও গন্ধ চমৎকার। এ পানি দিয়েই বাড়ির সব কাজ করছি। সুপেয় পানি আমাদের জীবনকে সহজ ও নিরাপদ করেছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার বলেন, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ১৮টি কমিউনিটি বেজ টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব টিউবওয়েল থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রায় ২ হাজার মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা ভোগ করছে। একটি টিউবয়েল থেকে সংযোগ নিয়ে একই সাথে ১০/১৫ টি পরিবার ২৪ ঘন্টা পানির সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার গ্রাম আমার শহর ঘোষণা দিয়েছেন। সেটি বাস্তবায়ন করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শহরের মতো অত্যন্ত গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই কমিউনিটি বেজ টিউবওয়েল প্রকল্প গ্রহণ করে।