• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৬:৩৮ অপরাহ্ন

সেতুতে তক্তা বসিয়ে চলাচল : নেই সংস্কারের কোন উদ্যোগ


প্রকাশের সময় : মে ১৫, ২০২৩, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন / ৩৯
সেতুতে তক্তা বসিয়ে চলাচল : নেই সংস্কারের কোন উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুয়াকাটা, পটুয়াখালীঃ সেতুর একাংশ ভেঙে পড়েছে খালে। কাঠের তক্তা বসিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পাঁচ গ্রামের মানুষ। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত আট মাস ধরে এই চিত্র পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের এই সেতুটির। সেতু পারাপারে ভোগান্তি হয় কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদেরও। কিন্তু সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। পাঠানো হয়নি চাহিদাপত্রও।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া ও পৌরগোজা গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত বড়হর খালের উপর ২০০৫ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে এটি ‘সাধুর ব্রিজ’ নামে পরিচিতি পায়। সেতু নির্মাণের সময় ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়মের কারণে স্থানীয়রা একাধিকবার কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ শেষ করেন ঠিকাদার। বড়হর খালে জোয়ার-ভাটায় লবণাক্ত পানি প্রবাহিত হওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে সেতুর নিচের লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যায়। কংক্রিটের স্লাবগুলোরও জীর্ণ দশা। পথচারীর ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতেন। তবে গত বছরের ১১ আগস্ট সেতুর দক্ষিণাংশ ভেঙে পড়ে। পরে চলাচলের জন্য কাঠের তক্তা দিয়ে প্রাথমিক মেরামত করা হয়। এ অবস্থায় আছে দীর্ঘ আট মাস। ঝুঁকি নিয়ে কাঠোর তক্তার উপর দিয়েই মোটরসাইকেল, অটোভ্যান, ইজিবাইক পারাপার হচ্ছে। তবে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন সরদার বলেন, সারবোঝাই টমটম পার হতে গিয়ে সেতুটি ভেঙে গেছে। পরে কাঠের তক্তা দিয়ে পথচারীদের চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। পুরো সেতুটিই এখন ঝুঁকিপূর্ণ।

জানা গেছে, এই সেতু দিয়ে মম্বিপাড়া, বড়হরপাড়া, নতুনপাড়া, গঙ্গামতি ও পৌরগোজা গ্রামের মানুষ চলাচল করে। মুসুল্লীয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৌরগোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মুসুল্লীয়াবাদ ইসলামীয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই সেতু দিয়েই যাতায়াত করে। এছাড়া কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা এ সেতু পার হয়ে রাখাইন সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধমন্দির ‘মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধসীমা ঘর’র দেখতে যান।

লালমনিরহাট থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধমন্দির ঘুরতে এসেছেন রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বলেন, হোটেল থেকে অটোভ্যানে করে এখানে ঘুরতে এসেছি। ভ্যানচালক সেতুটির উপর দিয়ে নিয়ে এসেছেন। অনেক ভয় পেয়েছি। কুয়াকাটার মতো পর্যটন এলাকায় এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ সেতু থাকা ঠিক না।

লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তাকে জানাই। প্রাথমিক ভাবে ভাঙা অংশ টুকু সংস্কার করার আশ্বাস দিয়ে ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে এখনও সংস্কার হয়নি। কাঠের তক্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। সেখানে একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।

কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ণ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছেন। আপাতত নতুন সেতু নির্মাণের প্রকল্প নেই। উপজেলার পুরনো সেতুগুলো সংস্কারের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সংস্কার করা হবে।