• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

লোকাল বাসের মতো যাত্রী নিচ্ছে নগর পরিবহন


প্রকাশের সময় : মে ১৫, ২০২৩, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন / ৩৫
লোকাল বাসের মতো যাত্রী নিচ্ছে নগর পরিবহন

বিশেষ প্রতিবেদকঃ রাজধানী ঢাকায় পরিবহনব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চালু হয় ঢাকা নগর পরিবহন। নিয়ম অনুযায়ী এটি থামবে নির্দিষ্ট স্থানে, যাত্রীও তুলবে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে। কিন্তু যাত্রীসেবায় সুফল বয়ে আনতে পারছে না নগর পরিবহন। লোকাল বাসের মতো যত্রতত্র থেমে যাত্রী ওঠানামা করছে তারা। আবার নির্দিষ্ট স্টপেজেও থামছে না। কাউন্টারও নেই কিছু কিছু জায়গায়।

জানা যায়, ঢাকার গণপরিবহনের মালিকের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি। আর ঢাকা ও এর আশপাশে দুই শতাধিক পথে (রুট) বাস চলাচল করে। যাত্রী তোলার জন্য এক বাসের চালক অন্য বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ে। এ ব্যবস্থা পরিবর্তনে ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ বা বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস তুলে নেওয়া এবং সহজ শর্তের ঋণে নতুন বাস নামানো। বাস চলবে পাঁচ-ছয়টি কোম্পানির অধীন। মালিকেরা বিনিয়োগের হার অনুসারে লভ্যাংশ পাবেন। বাসরুট রেশনালাইজেশন কমিটি এই পদ্ধতিতে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাস নামাচ্ছে, যেটি ঢাকা নগর পরিবহন নামে পরিচিত। কিন্তু এই সেবা যে উদ্দেশ্য নিয়ে চালু করা হয়েছে, সেটির সুফল পাচ্ছে না মানুষ।

২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর চালু হয় ‘ঢাকা নগর পরিবহন’-এর ২১ নম্বর রুট। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২ ও ২৬ নম্বর রুট চালু করে বাসরুট রেশনালাইজেশন কমিটি। বর্তমানে তিনটি রুটে এই বাস চলছে। নিয়ম অনুযায়ী এসব রুটে নগর পরিবহন ছাড়া রুট পারমিটহীন অন্য পরিবহন চলবে না। নির্দিষ্ট থাকবে বাসস্টপেজ ও টিকিট কাউন্টার। এসব কোনো নিয়মই মানছে না তারা। ২১ নম্বর রুটে ৫০টি বাস দিয়ে যাত্রা হয়েছিল। এর মধ্যে বিআরটিসির ৩০ ও ট্রান্সসিলভা পরিবহনের ২০টি। ঐ সময় বলা হয়েছিল, এই রুটে ক্রমান্বয়ে ১০০ বাস নামবে। কিন্তু বাস না বেড়ে উলটো কমেছে। এসব পরিবহনেও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করছে। নির্দিষ্ট স্টপেজে বাস থামছে না।

২২ নম্বর রুটেও (ঘাটারচর-কারওয়ান বাজার-কোনাপাড়া-স্টাফ কোয়ার্টার) একই অবস্থা। ৫০টি বাস দিয়ে যাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৩০টি দিয়ে শুরু হয়। শুরুতে টিকিট কাউন্টার থাকলেও পরে তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যত্রতত্র বাস থামছে এবং যাত্রী ওঠানামা করছে। চালকের সহকারীদের ডেকে ডেকে যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে বাস সহকারীরা বলেন, ‘অন্য বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসলে পারা যায় না। তাই আমরা কিছু যাত্রী উঠিয়ে বাসের ভেতরে টিকেট দেই। এ ছাড়া অনেক সময় বাস খালি থাকে। যাত্রী থাকে না।

তারা আরো বলেন, এই রুটে থাকা অবৈধ বাসগুলো অভিযানের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া না হলে এ অবস্থার উন্নতি হওয়া কঠিন। অবৈধ বাসগুলোর কারণে আমরা বেশি যাত্রী পাই না। প্রতিদিনই আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। আর যে স্থানে কাউন্টার, তার বেশির ভাগ জায়গায় যাত্রী থাকে না। দিনের বেশির ভাগ সময় যাত্রী কম নিয়ে চলাচল করতে হয় আমাদের।’

এই পথে চলাচলকারী শামীম হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, নগর পরিবহনের এই বাসগুলোয় চড়া অনেকটা স্বস্তির। তবে বাসের সংখ্যা কম। আরো বাস নামাতে হবে। বেশি বাস নামলে বেসরকারি পুরোনো ভাঙাচোরা বাসগুলো এমনিতেই উঠে যাবে।

এ সব বিষয়ে ডিটিসিএর ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলমের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে গত মঙ্গলবার বাসরুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভা শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, যদিও ছোটখাটো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তার পরও ঢাকা নগর পরিবহন বীরদর্পে এগিয়ে চলেছে। সুনির্দিষ্টভাবে ছোটখাটো প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে সেগুলো সংশোধন করা হচ্ছে।