• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন

বিশিষ্টজনদের অভিমত : খুলনায় পরিবহণ বন্ধ অশোভন অনাকাঙ্ক্ষিত


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২১, ২০২২, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন / ৭১
বিশিষ্টজনদের অভিমত : খুলনায় পরিবহণ বন্ধ অশোভন অনাকাঙ্ক্ষিত

বিশেষ প্রতিনিধি,ঢাকা: বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে সরকার নানা কৌশলে বাধার সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে গণপরিবহণ বন্ধ না করলেও সমাবেশে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহের সমাবেশে বাধার পাশাপাশি আগের দিন পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয় সব সড়কপথের যানবাহন। শনিবার খুলনার সমাবেশকে সামনে রেখে ডাক দেওয়া হয়েছে পরিবহণ ধর্মঘটের। আজ ও আগামীকাল খুলনা বিভাগের আন্তঃজেলা বাস-মিনিবাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সমাবেশে যাতে লোকসমাগম হতে না পারে, সেজন্যই সরকারের নির্দেশে পরিবহণ মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, পরিবহণ মালিকদের ডাকা ধর্মঘট যৌক্তিক নয়। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্যই তারা এমন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এর পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে। এভাবে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া ঠিক নয়। এতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে, বাড়বে দূরত্ব; যা একসময় সহিংসতায়ও রূপ নিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দাঁড়িয়েছে-এক দল করেছে তাই আমিও করব। আলাপকালে বিশিষ্টজনরা এমন মত তুলে ধরেন।

বুধবার খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে অবৈধভাবে নসিমন, করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসির গাড়ি চলাচল করছে। ২০ অক্টোবরের মধ্যে এগুলো বন্ধ না হলে ২১ ও ২২ অক্টোবর সব রুটের গাড়ি বন্ধ থাকবে। খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন এ সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাস মালিক সমিতি যে ধর্মঘট ডেকেছে তার কারণ পরিষ্কার নয়। তাদের কোনো দাবি আছে কি না, তাও জানি না। কাজেই আপাতত দৃষ্টিতে মনে প্রতীয়মান হয় তারা সরকার পক্ষের সমর্থনে এ ধর্মঘট ডেকেছে। যাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা না আসতে পারে। এটা রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির একটি অশোভন উদ্যোগ। এ সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন দাঁড়িয়েছে, আজ আওয়ামী লীগ বাধা দিচ্ছে কাল বিএনপি বাধা দেবে। যে যা করে তার প্রত্যুত্তর তো পায়। অতীতে বিএনপি এসব করেনি? তারা গাড়ি-ট্রেন সব বন্ধ করে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ করলে দোষের কী? আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে-সে করেছে, তাই আমিও করব। কেউ জঘন্যভাবে করে, কেউ একটু কম করে।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত পালটাপালটি চলছে। একজন বক্তব্য দেয় হেরে গেলে পিঠের চামড়া থাকবে না। আরেকজন বলছে লিস্ট তৈরি করো সবাইকে ধরব। এ ধারা থেকে সেদিনই বের হতে পারব, যেদিন জনগণ বলবে-এসব তামাশা বাদ দেন। তাছাড়া হবে না। পালটাপালটি চলতেই থাকবে। আজ আওয়ামী লীগ পরিবহণ বন্ধ করছে। বলছে, এটা আমরা করিনি, মালিক সমিতি ভয়ে বন্ধ করেছে। কিন্তু যারা ক্ষমতায় থাকে, তারাই মালিক সমিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সমিতি যদি বলে ভাঙচুর হতে পারে তাই আমরা ভয়ে বাস চালাব না। তাহলে কী করতে পারবেন।