• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন

ডিজিটাল সংযোগ প্রতিটি মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য অপরিহার্য সেবায় রূপ নিয়েছে:টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৬, ২০২১, ১১:৪৪ অপরাহ্ন / ২৬৭
ডিজিটাল সংযোগ প্রতিটি মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য অপরিহার্য সেবায় রূপ নিয়েছে:টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

মনিরুজ্জামান অপূর্ব,ঢাকা:ইন্টারনেটকে একটি মৌলিক অধিকার বিবেচনা করা সময়ের দাবি। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল সংযোগ প্রতিটি মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য অপরিহার্য সেবায় রূপ নিয়েছে , বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন উচ্চগতির ইন্টারনেট মহাসড়ক শহরের গন্ডি ছাড়িয়ে দুর্গম গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার সর্বশক্তি দিয়ে সেই লক্স্যে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী আজ ঢাকায় বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ণেন্স ফোরাম-বিআইজিএফ আয়োজিত ইন্টারনেটের অন্তর্ভূক্তিমূলক সংযুক্তি বিষয়ক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ি কমিটির সভাপতি, বিআইজিএফ চেয়ারম্যান জনাব হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি‘র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, বিটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন, এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.), সাবেক মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির,আইকান কর্মকর্তা সমিরন গুপ্ত এবং আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বক্তৃতা করেন।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিআইজিএফ কর্মকর্তা বজলুর রহমান।

এখন শহরের চেয়ে বেশি নেটের চাহিদা গ্রামে উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষ এক সময় মোবাইল ফোনকে কেবল মুখে কথা বলার জন্য ব্যবহার করতেন। সে জায়গায় তারা এখন ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করেছেন। স্মার্টফোন ব্যবহারের দক্ষতা গ্রামের অনেক বয়স্কদের নেই কিন্তু নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে তারা শিখে নিচ্ছে। দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের অনুরোধ গ্রাম থেকেই বেশি আসছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২১ সালের মধ্যে এমন কোন ইউনিয়ন থাকবে না যেখানে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সংযোগ ইউনিয়ন অবধি পৌছাবেনা। তিনি বলেন, ডিজিটাল অবকাঠামোর যে দুর্বলতা এতদিন বিরাজ করছিলো তা অতিক্রম করার চেষ্টা হচ্ছে। যেখানে বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নেট সম্প্রসারণ করছে না সেখানে গত তিন বছরে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা আমরা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে শুরু করেছি। তিনি বলেন, ১৯৮৯ সালে দেশে মোবাইল ফোনের যাত্রা শুরু হলেও এটি ছিলো সাধারণের আওতার বাইরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯৭সালে মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা ভেঙ্গে দিয়ে মোবাইল ফোন সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, ভৌগোলিক ভাবে দেশের ৯৮ ভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় কিন্তু দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল, চর, দ্বীপ ও হাওরাঞ্চলে নেট সম্প্রসারণে বেসরকারি টেলকো বাণিজ্যিক বিবেচনায় নেট সম্প্রসারণে তেমন ভূমিকা রাখেনি। সে ক্ষেত্রে টেলিটকসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হয়েছে। তিনি টেলিটক জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির পিছিয়ে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, যেখানে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ প্রায় ৪০হাজার কোটি টাকা সেখানে টেলিটককে মাত্র তিন হাজার ৬০০কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা দুরূহ। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে যুগান্তকারি ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় টেলিটক ঘুরে দাঁড়িয়েছে । যেখানে নেট নেই সেখানে টেলিটক নেট স্থাপন করছে। ইতোমধ্যে হাওরে টেলিটক নেটওয়ার্ক স্থাপন করায় তাদের ব্যান্ডউডথ ব্যবহার বেড়েছে ২৬ গুণ বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ বছরের মধ্যেই টেলিটক ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করবে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, ফাইভ-জি একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পণ্য, এর সাথে শিল্পের সম্পর্ক। মিরেশ্বরাইসহ দেশের ৫টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ফাইভ-জি নেট সম্প্রসারণের উদ্যোগ আমরা ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছি, ক্রমান্বয়ে চাহিদা অনুযায়ি এটি সব গুলো শিল্পাঞ্চলে সম্প্রসারণ করা হবে।

হাসানুল হক ইনু ইন্টারনেটের সাশ্রয়ি মূল্য উচ্চ গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, মোবাইল সার্ভিসের গুণগত মান নিশ্চিত করতে স্পেকট্রামের দাম কমানো এবং শেয়ারিং ব্যবস্থা থাকা উচিৎ। তিনি বলেন, মানস্মত ইন্টারনেট জনগণের দাবি এর মাধ্যমে ডিজিটাইজেশন সহজ হবে, দেশের মানুষ উপকৃত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।তিনি ম্যাক্সিকোসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করার ব্যাপারে তার মতামত ব্যক্ত করেন।