• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পক্ষে আদালতে লড়লেন ব্যারিস্টার আমীর


প্রকাশের সময় : মে ২১, ২০২৩, ৭:২৮ অপরাহ্ন / ৫৩
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পক্ষে আদালতে লড়লেন ব্যারিস্টার আমীর

এম রাসেল সরকারঃ বিএনপিপন্থি শীর্ষ আইনজীবীদের জামিনের পক্ষে আদালতে দাঁড়ালেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আওয়ামীপন্থি সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা এই মামলায় আসামি হলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ ২৫ জন। ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন।

রোববার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত সবাইকে জামিন দেন।

জামিন শুনানিতে আরও অংশ নেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। পরে ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কর্মচারীকে দিয়ে মামলা করানো হয়েছে। এটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর ও যৌন হয়রানির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২৫ জনকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জামিন পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, সুপ্রিম কোর্ট বারের সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল।

এর আগে গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপিপন্থি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন,ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল,অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ১০০/১৫০ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

রাজধানীর শাহবাগ থানায় আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপারিন্টেনডেন্ট মো. রফিকউল্লাহ এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে এক নারী আইনজীবীকে হেনস্তা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ১৬ মে মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন করে ভোটগ্রহণের দাবিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিক্ষোভের সময় সমিতির সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সমিতির সম্পাদক ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল নূর এ হামলার জন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামকে দায়ী করেছেন। এর জন্য তারা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা বলছেন, উদোরপিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাচ্ছে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোল, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে এ নির্বাচনে।

নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছিলেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। তারপর থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আন্দোলন করে আসছেন।

তার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও মিছিল–সমাবেশ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে আইনজীবীরা সম্পাদকের কক্ষের সামনের অংশ ও জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। এ সময় কক্ষে আবদুন নূর দুলাল অবস্থান করছিলেন।

পরে অ্যাডভোকেট আবদুন নূর দুলাল বলেন, আজ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের একটি প্রোগ্রাম ছিল নিচে (বার অফিসের সামনে)। আমরা এখানে (দোতলায় সম্পাদকের কক্ষে), আমরা তো নিচে যাইনি। ওরা চড়াও হয়ে এখানে এসে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া বাঁধানোর চেষ্টা করেছে। এটা হচ্ছে একটা কাপুরুষতা। আমরা সরকারি দলে থাকার পরও সর্বোচ্চ সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছি। প্রতিদিন তারা প্রতিবাদ করে এখানে এসে ঝগড়া লাগানোর চেষ্টা করে। তারা এখানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে আসে না। তারা আসে সহিংসতার জন্য। তারা অফিস ভাঙচুর করেছে। কয়েকজনকে আহত করেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেব।

অন্যদিকে বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তারা (আওয়ামীপন্থি) ভাঙচুর করে আজ আমাদের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ তথা সাধারণ আইনজীবীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিএনপিপন্থি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিকেলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে আবারও বিক্ষোভ করেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা।