• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন

র‍্যাবকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলব : র‍্যাব ডিজি


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৯, ২০২৩, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন / ২০২
র‍্যাবকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলব : র‍্যাব ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) কে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন। র‍্যাবের ১৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী নিয়ে র‍্যাব ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ডিজি বলেন, র‍্যাব জঙ্গিদের থেকে অনেক স্মার্ট। দেশবাসীর সহযোগিতা আমরা চাই, র‍্যাব ঠিক স্মার্ট ফোর্স হিসেবে যে কোনো নিরাপত্তা, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, জঙ্গি বিরোধী অভিযান এবং যে কোনো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দুর্যোগে র‍্যাব সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে।

প্রতিষ্ঠার পর র‍্যাব ১৮ বছর পার করল। এখন সবদিক থেকে র‍্যাব কী সফল এমন প্রশ্নের উত্তরে এলিট ফোর্সটির প্রধান বলেন, আমি তো মনে করি র‍্যাব সফল। মানুষ যে কোনো সমস্যায় র‍্যাবের কাছে আসে। প্রতিদিন ২০/২৫ জনের সমস্যা নিয়ে সরাসরি কথা বলি। র‍্যাবের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আমরা আইনের মধ্যে থেকে মানুষের পাশে থাকি, এ জন্যই মনে করি র‍্যাব ভালো কাজ করছে।

মানুষের কী থানা বা আদালতের প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমে যাচ্ছে ঠিক বলব না। আস্থা ভিন্ন জিনিস। মানুষ আসলে যে আশা করে যাচ্ছে ওখানে সেই ধরনের সাহায্য পাচ্ছে না। তবে থানা ছাড়া তো চলা সম্ভব না। কারণ মামলা করতেও থানায় যেতে হবে, জিডি করতেও থানায় যেতে হয়। একটা মানুষ অনেক দূর থেকে আশা করে আসে। তাই অন্তত তার সমস্যাটা শুনি। যা সমাধান করতে পারি আর না পারি। কারণ, আমার অফিস, ডিসির অফিস, এসপির অফিস এগুলো পাবলিক অফিস। আমি শুধু পুলিশ অফিসারদের বলি, দয়া করে আগে পাবলিকের সমস্যা শোনেন, সমাধান করেন। আমরা তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলি। প্রধানমন্ত্রী যে কথা প্রায় বলেন, ‘আমরা শাসক হতে চাই না, সেবক হতে চাই’। এই যে অসহায় মানুষগুলো আসেন, তারা যদি আমাদের কাছে ঢুকে কথা বলতে পারেন, তাহলে তারা স্বস্তি পান।’

র‍্যাবের অনেক সদস্য অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের ব্যাপারে ডিজি হিসেবে আপনার অবস্থান এবং র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা কাটাতে পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমেরিকা র‍্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর দেশটির দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ ঘুরে গিয়েছেন। তিনি র‍্যাবকে নিয়ে প্রশংসা করেছেন। একসময় র‍্যাবকে নিয়ে কথা উঠত কিন্তু এখন সেগুলো নেই। আর প্রতিটি সেক্টরেই ভালো মন্দ মানুষ থাকবে। এটা আগেও ছিল এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা প্রতিটি সদস্যকে প্রায় বলি কোনো ব্যক্তির দায় বিভাগ বা বাহিনী বহন করবে না। তবে মাঝে মাঝে আমাদের লোক বিপথগামী হয়। হয়তো নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এগুলো করে। তবে আমি কাজে দুটো জিনিস ফলো করি। ডিসিপ্লিনের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স এবং ওয়েল ফেয়ার শতভাগ।’ তবে কোন সদস্য অন্যায় করবে সে পার পাবে না। তার দায় তাকেই বহন করতে হবে।

শান্ত পাহাড়কে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন অশান্ত করছে। এ ব্যাপারে র‍্যাব অভিযানও চালাচ্ছে। বর্তমানে আপনাদের ভূমিকা কী? এমন প্রশ্নে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, পাহাড়ে ট্রেনিং নেওয়া প্রায় অর্ধশতাধিক জঙ্গি সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এই জঙ্গিরা পাহাড়ে গিয়ে কেএনএফ এর সহায়তায় সেখানে প্রশিক্ষণ নিত। আমরা সবাইকে ধরতে কাজ করছি। তারা যে এড়িয়ে নির্বাচন করেছে, সেটা মিয়ানমার ও মিজোরাম সীমান্ত ঘেঁষা। যেকোনো অপরাধ করে তারা সহজেই যেকোনো সীমান্তে প্রবেশ করছে। সেখানকার ভৌগোলিক কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ক্যাম্প সেখানে নেই। আমরা তাদের অনেককে গ্রেফতার করেছি, তারাও তো চেষ্টা করবে আমাদের আক্রমণ করার। আমরা সেখানে নিরাপত্তা এবং অভিযান জোরদার করব। এটা নিয়ে দেশবাসীর হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমরা নতুন করে অন্য প্ল্যানে অভিযান শুরু করব।

হঠাৎ করেই ঘরছাড়াদের আমরা যখন খুঁজতে বের হলাম তখন নতুন জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে জানতে পারলাম উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, পাহাড়ে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কেএনএফ। এর আগে তো আমরা জানতাম না কেএনএফ তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। গভর্নমেন্ট মেশিনারিজের সামনে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ টিকে থাকতে পারে এটা আমি বিশ্বাস করি না। ওদের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে যা যা করার আমরা করব।

তাদের অর্থায়নে কারা আছে জানতে চাইলে র‍্যাব প্রধান বলেন, হরকাতুলে জিহাদের নেতাদের ধরেছি তখন জানতে পেরেছি তাদের টাকা আসে বিদেশ থেকে। পাহাড় থেকে যেসব জঙ্গিদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কাছে নগদ টাকাও পাওয়া গেছে। আমরা জানি বিদেশ থেকে কিছু লোক জঙ্গিদের সাপোর্ট দিচ্ছে। আমরা সব বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

কোন দেশে থেকে টাকা আসছে জানতে চাইলে র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ইংল্যান্ড থেকে টাকা আসছে। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক কোনো দেশ থেকে টাকা আসার তথ্য মেলেনি। ইউকে থেকে পেয়েছি। এসব বিষয় আমাদের নলেজে আছে, গোয়েন্দারা কাজ করছে। এসব বিষয় নিয়ে আমি বা র‍্যাব চিন্তিত না। আমরা যখন ভালো সাপোর্ট পাব তখন কেউ টিকতে পারবে না।