• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে যাচ্ছে : অ্যান্থনি ফসি


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৩, ২০২১, ৫:৫৬ অপরাহ্ন / ২৬০
যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে যাচ্ছে : অ্যান্থনি ফসি

নভেল করোনাভাইরাসের ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফসি। সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এ খবর জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শীর্ষ চিকিৎসা উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফসি এবিসি টেলিভিশনের ‘দিস উইক’ (ঞযরং ডববশ) শো-তে বলেন, ‘পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে’ এবং এর জন্য করোনার প্রতিষেধক টিকা এখনও না নেওয়া লাখ লাখ মানুষকে দোষারোপ করেন তিনি। ভয়েস অব আমেরিকা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় যারা এখনও টিকা নেয়নি, তাদের মধ্যে কিছু মানুষ টিকা নেওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু, লাখ লাখ মানুষ বলছে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তাদের টিকা নিতে যতই পীড়াপীড়ি করুক, তাদের টিকা নেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। অ্যান্থনি ফসি প্রায় প্রতিদিনই মার্কিনিদের করোনার টিকা নেওয়ার জন্য বলে যাচ্ছেন। ফসি বলেন, ‘টিকা নিলে আপনি নিজেকে গুরুতর অসুস্থ হওয়া এবং মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন। আর যারা টিকা নিচ্ছে না, তারা কার্যত ভাইরাসের বংশবিস্তারে সাহায্য করছে।’ যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে দিনে ৭০ হাজার পর্যন্ত নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত দেখেছে। এই সংখ্যা গত ছয় সপ্তাহে প্রায় ৬০ হাজার করে ছিল। এ বছরের ফেব্রুয়ারির পর এটাই সর্বাধিক হার। ভারতে করোনার ডেলটা ভ্যারিয়্যান্ট প্রথম শনাক্ত হয়। তারপর থেকে দেশে দেশে এই ভ্যারিয়্যান্টের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। কিছু গবেষক যুক্তরাষ্ট্রে আরও বড় ধরনের সংক্রমণের পূর্বাভাস দিচ্ছেন। আগস্টের শেষের দিকে এক লাখ ৪০ হাজার থেকে তিন লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে এই ডেলটা ভ্যারিয়্যান্ট যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা। বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, যারা এরই মধ্যেই টিকা নিয়েছে, তাদের মাধ্যমেও ডেলটা ভ্যারিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়তে পারে। মার্কিন সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র-সিডিসি গত সপ্তাহে একটি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। সিডিসি বলেছে, দেশের কোনো কোনো অংশে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ফলে সেসব এলাকায় যারা এরইমধ্যে টিকা নিয়েছে, তাদের আবারও সর্বসাধারণের ব্যবহৃত বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রিপাবলিকান গভর্নর সিডিসির নির্দেশনার সমালোচনা করেছেন। এই গভর্নরেরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাঁদের অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করেছেন এবং পুনরায় মাস্ক পরার আদেশ বা বাধ্যতামূলক টিকা নেওয়ার নির্দেশের বিরোধিতা করে আসছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে ২০ লাখেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আগামী মাসগুলোতে অফিসে ফেরার আগে টিকা নেওয়ার নির্দেশ দেন অথবা তাঁদের যে করোনাভাইরাস নেই, তা প্রমাণ করার জন্য ঘন ঘন পরীক্ষা করার কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনার রিপাবলিকান গভর্নর ডাগ ডুসি সিডিসি’র নির্দেশনা খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘অ্যারিজোনা বাধ্যতামূলক মাস্ক, বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন, ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বা স্কুলে টিকাভিত্তিক বৈষম্যের অনুমতি দেয় না। এসব বিষয়ে আইন করা হয়েছে, এবং তা পরিবর্তন করা হবে না।’ ডুসি আরও বলেন, ‘সিডিসি’র নির্দেশনাটি বাইডেন প্রশাসনের কোভিড মহামারি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে অক্ষমতার আরেকটি উদাহরণ।’ তবে, পুনরায় মাস্ক পরার সুপারিশগুলো বাড়াবাড়ি ছিলÑরিপাবলিকান কর্মকর্তাদের এমন অভিযোগের সঙ্গে মোটেও একমত নন অ্যান্থনি ফসি। যাঁরা টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানান, এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন, তাঁদের অভিযোগকেও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফসি বলেন, ‘আমরা একটি গুরুতর স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। আসল বিষয়টি হলোÑআপনি যদি সংক্রামিত হন (এবং অন্যান্যের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেন) তাহলে আপনি তাদের ব্যক্তিগত অধিকার লঙ্ঘন করছেন।