• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন

মার্কশীট টেম্পারিং জালিয়াতির দায়ে চাকুরি হারালেন এক শিক্ষক


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৯, ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন / ৫৭৩
মার্কশীট টেম্পারিং জালিয়াতির দায়ে চাকুরি হারালেন এক শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, মুন্সিগঞ্জঃ সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগরে হাঁসাড়া কালী কিশোর স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি শিক্ষক মোঃ আব্দুল হালিম স্নাতকের মার্কশীট ট্যাম্পারিং করে মিথ্যা তথ্য দাখিল করে চাকুরী নেয়ার অপরাধে তাকে চাকরী থেকে অপসারণ করা হয়।সরেজমিনে তদন্ত করার পর তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ইংরেজি শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হালিম গত ১২-১২-২০১১ ইং তারিখে উক্ত স্কুলের একজন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তিনি জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১০ এর আলোকে নিয়োগ লাভ করেন।

নিয়োগকালীন জনবল কাঠামোতে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্নাতক পর্যায়ে ইংরেজিতে ৩০০ নম্বর থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু উক্ত শিক্ষকের স্নাতক পর্যায়ে ইংরেজি ৩০০ নম্বর না থাকা সত্ত্বেও টেম্পারিং করে স্নাতক পাশের মার্কশীটে ইংরেজি ৩০০নম্বরের ঐচ্ছিক বিষয় সংযোজন করে নিয়োগ লাভ ও এমপিও ভুক্ত করা হয়।

মাউশি অধিদপ্তর গত ২৩-০১-২০২৪ ইং তারিখের ৪ নং জিডি ৬১০৩-ম/০৬/১৩৮ সংখ্যক স্মারকে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মোঃ আব্দুল হালিম( ইনডেক্স-এন ১০৭৮৯৪৫) এর এমপিও স্থগিত করা সহ জানুয়ারি ২০২৪ সাল থেকে তার বেতন ও ভাতা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১২-০২-২০২৪ ইং স্মারক নং ৪ জি-৬১০৩ম/০৬-২৯৭ এর মাধ্যমে তার প্রথম এমপিও ভুক্তির তারিখ হইতে হালনাগাদ গৃহীত বেতন-ভাতাদির সমুদয় অর্থ তার নিকট হতে আদায় করে সরকারী কোষাগারে জমাদান পূর্বক প্রমাণ সহ (ট্রেজারি চালানের কপি) আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহতি করার জন্য প্রতারক শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস-এম জিয়াউল হায়দার হেনরী।

সূত্রঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নারক নং জাতীঃবিঃ/পরী/সনদ/৪৪৯/ ২০০৫/৭৪৪৬ তাং ০৩/১২/ ২০২৩ ইং, উক্ত শিক্ষকের প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার।

এখানে উল্লেখ্য যে, প্রতারক শিক্ষক মোঃ আব্দুল হালিম সহকারী ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার স্নাতক (অনিয়মিত) সরকারী কবি নজরুল কলেজ এর – নম্বরপত্র টেম্পারিং করে সমাজ কল্যাণ বিষয়টির স্থলে ঐচ্ছিক ইংরেজি বসিয়ে হাতে বানানো নম্বরপত্র বানিয়ে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) পদে নিয়োগ লাভ করেন।

এছাড়া মোঃ আব্দুল হালিম স্থানীয় হওয়ায় অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরন সহ শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। তার নামে শ্রীনগর থানায় ( জিডি নম্বর -২০১ তারিখঃ ০৫/০৩/২০১৬) একাধিক শিক্ষকের উপর শারীরিক নির্যাতনের সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। যা এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর – ১৮.১ (ঙ) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোঃ জামাল উদ্দিনের সহায়তায় এবং সার্বিক আশ্রয় প্রশ্রয়ে এই চাকরিচ্যুত শিক্ষক নিয়মিত প্রতিষ্ঠানটিতে ‘কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের’ ক্লাস করানো সহ প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রমে সামনের কাতারে থেকে অংশগ্রহণ করছে।

জালিয়াতির বিষয়টি গোপন রেখে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে ঐ শিক্ষককে অত্র বিদ্যালয়ের এডহক কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে অনুমোদন করিয়ে নেন।যার নথি নম্বর কলেজ শাখা/MUNSHIGANJ/111214/2400049 অনুমোদনের তারিখঃ ৩১/০১/২০২৪। যা অনুমোদন করে কলেজ পরির্দশক , মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। যার মাধ্যমে মাউশির কাজের সমন্নয়হীনতা এবং দুর্নীতি প্রকাশ পায়।

সার্টিফিকেট জ্বালিয়াতির কারণে চাকরি হারানোর পরেও প্রতারক মোঃ আব্দুল হালিম কিভাবে এখনো, হাঁসাড়া কালি কিশোর স্কুল এন্ড কলেজের ‘কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের’ ক্লাস নিচ্ছেন এই বিচার সরকারের কাছে দিয়ে রেখেছেন এলাকাবাসী। এমতবস্থায় মোঃ আব্দুল হালিম মাস্টারকে স্কুলের নিজস্ব ফান্ড থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছে যা সম্পূর্ণ অন্যায় অবিচার।

সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানটির অযোগ্য প্রতারক চাকরীচ্যুত শিক্ষককে এডহক কমিটিসহ স্কুলের সকল কার্যক্রম থেকে বিতারিত করে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছে।

এহেন কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও শাস্তি দাবি করছেন অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক বৃন্দ, সুশীল সমাজ ও এলাকাবাসী।