• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন

বাগেরহাটের মিনি সুন্দরবন এখন অতিথি পাখির রাজ্য


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৮, ২০২৩, ৮:১৪ অপরাহ্ন / ১৯২
বাগেরহাটের মিনি সুন্দরবন এখন অতিথি পাখির রাজ্য

আরিফুল ইসলাম,বাগেরহাটঃ বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট ও চিতলমারী উপজেলার মিলনস্থল উজলপুর চিত্রা নদীর ব্রিজের ওপর দাঁড়ালে চোখে পড়ে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। হাজারো পাখির কলতানে মুখরিত চিত্রা নদীর পাড়। লোকালয়েই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা মিনি সুন্দরবন এখন অতিথি পাখির রাজ্য। নিরাপদ আশ্রয় হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পাখির সংখ্যা। নানা প্রজাতির পাখি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। এমন আকর্ষণীয় জায়গাটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিদের।

এক সময়ের খরস্রোতা চিত্রার চরজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তরে চিত্রাপারে দিন দিন বাড়ছে গাছের সংখ্যা। নদীসংলগ্ন গ্রামগুলোর অনাবাদি জমি এবং বসতবাড়ির আশপাশেও জন্ম নিয়েছে গোলপাতা, কেওড়াসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও লতাগুল্ম। জোয়ারের সময় নদীতীরের গাছগুলোর কিছু অংশ পানিতে ডুবলেও ভাটার সময় আবার তা জেগে ওঠে। চিতলমারী উপজেলার রায়গ্রাম, শুড়িগাতী, খিলিগাতী, করাতদিয়া, ডুমুরিয়া, আড়ুলিয়া, খাড়িয়াসহ নদীতীরের অধিকাংশ গ্রামই এখন মিনি সুন্দরবনের অংশ। এখানেই বছরের ছয় মাস থাকে অতিথি পাখির বসবাস।

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিটলার গোলদার বলেন, প্রাকৃতিক ভাবে এখানে সুন্দরবন গড়ে উঠেছে। চিত্রা নদীর তীরে জন্ম নিয়েছে সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়া, গোলপাতাসহ নানা প্রজাতির গাছ। কয়েক বছর ধরে এসব গাছে শীত মৌসুমে হাজার হাজার পাখি আশ্রয় নেয়। এ কারণে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী পাখি দেখতে ভিড় করেন। জায়গাটিকে স্থায়ীভাবে পাখির অভয়াশ্রম ও মিনি সুন্দরবন হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, আমি নিজেই কয়েকবার মিনি সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শন করেছি। জায়গাটি অতিথি পাখির অভয়াশ্রম ও মিনি সুন্দরবন হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। শিগগিরই স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও তিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সভা করে পরিকল্পনা নেয়া হবে।

কেবল মনোরম দৃশ্য আর প্রাকৃতিক পরিবেশই নয়, বেশ কয়েক ধরনের মাছরাঙা, ঘুঘু, শালিক, দোয়েল, টুনটুনি, লেউ লেউ, বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আবাসস্থলও এখানকার গাছপালা।

স্থানীয়রা জানায়, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চিত্রা নদীর চরে বেলে-দোআঁশ মাটিতে গোলপাতা, কেওড়াসহ সুন্দরবনের গাছপালা জন্মাতে শুরু করে। গত কয়েক বছরে এখানে গাছের ঘনত্ব বেড়েছে। বর্তমানে এখান থেকে গোলপাতা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে স্থানীয়রা। তবে অবাধে গাছপালা কেটে নিলেও উদ্যোগ নেই রক্ষণাবেক্ষণের। এখানকার গাছপালা সঠিকভাবে বাড়তে দিলে মনোরম এ পরিবেশ মিনি সুন্দরবন হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব।