• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন

পটুয়াখালী পৌর মেয়র উন্নয়নমুলক কাজ নিম্নমানের করে কৌশলে শত শত কোটি টাকা লুটপাট


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৯, ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন / ১৫১
পটুয়াখালী পৌর মেয়র উন্নয়নমুলক কাজ নিম্নমানের করে কৌশলে শত শত কোটি টাকা লুটপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালী সদর পৌরসভার উন্নয়ন মুলক কাজের জন্য সরকারি ব্যাপক বরাদ্দ পেয়েছেন মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ। এটা তার ব্যাক্তিগত টাকা নয় দেশের চলমান আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন মুলক কাজ।

সরকার তার উন্নয়নকে অব্যাহত রেখেছে বলেই সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত পৌরসভার দায়িত্বে রয়েছেন বলেই তার হাতে উন্নয়নের অর্থ প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যেই মেয়র থাকতো সে এই উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ পেতো। কিন্তুু এক্ষেত্রে বেশির ভাগ কাজ করছেন মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ এর নিকটতম লোকজন এর মধ্যে বন্ধু, ভাই ও নিজেদের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে বেশির ভাগ কাজ করার কারনেই উন্নয়ন মুলক কাজ মানসম্মত হয়নি কাজের টাকা লুটপাটের প্রশ্ন উঠেছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, পৌর শহরের রাস্তা ঘাট, ড্রেন নির্মান সহ বিভিন্ন কাজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গুলো মেয়রের নিকটম লোকজন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি কাজের মান খারাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে পোস্ট হয়েছে। এমনকি প্রতিবেদক নিজেও পৌরসভা প্রকৌশলী, পৌরসভার ইন্জিনিয়ার, পৌর মেয়রকে জানানো হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় মনের মাধুরি দিয়ে নিন্ম মানের মালামাল দিয়েই শেষ করেছেন উন্নয়ন মুলক কাজ। এর মধ্যে পুরাতন বাজার মিঠাপুকুরের গাইড ওয়াল নির্মান, কলাতলা ১২ ফুট খালে ৫-৬ ফুট ড্রেন নির্মান, সবুজবাগ প্যাদা বাড়ির সামনের ড্রেন নির্মান, পুরাতন ফায়ার সার্ভিস রোডকে আধুনিক করার জন্য রাস্তা নির্মানে নিন্মমানের মালামাল, পটুয়াখালী প্রান কেন্দ্র বড় চৌরাস্তা থেকে তিতাস মোড় পর্যন্ত নানন্দিক করার লক্ষ্যে ফোরলেন রাস্তা নির্মান, লেক আধুনিক করনে ব্রীজ নির্মান সহ বিভিন্ন স্থানের উন্নয়ন মুলক কাজে নিজস্ব ঠিকাদার থাকায় নির্দিধায় সকলের সামনেই অনিয়ম করে শেষ করা হয়েছে এসব নির্মান কাজ।

এদিকে বর্তমানে প্রশ্ন উঠেছে এই উন্নয়ন মুলক কাজ কতদিন টেকসই হবে। এরই মধ্যে ফোরলেনের কয়েকটি স্থানে ছোট ছোট গর্ত দেখাগেছে যাহা রাস্তা তৈরির কয়েকমাসের মধ্যে এসব গর্ত তৈরি হয়েছে। এছাড়াও বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে খাল দখল করা ও ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষন করায় নদী রক্ষা চেয়ারম্যান মোটা অংকের জরিমানা করেছিলেন। শহরের বিভিন্ন খাল দখল করা নিয়ে নদী রক্ষা চেয়ারম্যান তাকে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি প্রেরন করবেন বলেও জানিয়েছেন। এদিকে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে দরিদ্র জনগণের ভোগান্তি তৈরি করে নিজেদের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানের উন্নয়ন মুলক কাজ দেখিয়ে আয় করার অভিযোগ সচেতন নাগরিক মহলের। পৌর নিউমার্কেটে বহুতলা মার্কেট নির্মাণ করায় পুরনো ব্যাবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিপূরণ না পাওয়া এবং অনেক পুরাতন ব্যাবসায়ী দোকান বরাদ্দ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও পৌর শহরের বাসিন্দা মাকসুদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি গরীবকে উচ্ছেদ করলেও মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদের নিজের বাসভবনটি খাস জমিতে থাকারও অভিযোগ দৃশ্যমান। মেয়র মহিউদ্দিন এর বাসভবন সরাতে নদী রক্ষা চেয়ারম্যান নির্দেশ দেয়ার পরও সেটা কেন কার্যকরী হয়নি এনিয়ে ও নানান মহলে বিতর্ক চলছে। শহর উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই এর মধ্যে নানানভাবে ক্ষতি গ্রস্ত অনেকেই তার চেয়ে ও বড় বিষয় হচ্ছে এই উন্নয়ন কতদিনের নাকি উপরে সাদা ভিতরে কালা রঙিন ফটোকপির মতো এ চিত্র। আশ্চর্য বিষয় হলেও পৌর শহরে গরু রাস্তায় থাকার বিধান নেই সে মর্মে মোট ৩৪ টি গরু আটক করে নিয়ে যাওয়া হলেও মালিক পক্ষ তা ফেরত পায়নি।এমনকি কিছু গরু বিক্রি করে দেয়া ও জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে বাসায় নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে এলজিইডি কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হওয়ার রহস্যে ভৌতিক ভাবে ১৩ ব্রীজ টেন্ডার নিয়ে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা যাহা দুদক তদন্ত করছেন বলেও জানাগেছে। পটুয়াখালীতে শহীদ মিনারে ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যায় ধরা হয়েছে যাহা দূর্নীতির মাত্রাকে আরও ছাড়িয়ে গেছে। সচেতন নাগরিক মহলের এখন বড় প্রশ্ন পৌরসভার এই উন্নয়নে পৌরবাসী কতটা লাভবান নাকি পৌর মেয়র মহিউদ্দিন লাভবান? এছাড়াও পৌর কর ট্যাক্স পানির বিল ৪ গুন করে নির্দিষ্ট জায়গায় উপরে সাদা নিচে কালা রঙিন ফটোকপির উন্নয়ন নাগরিক সেবায় কতটুকু সুবিধা এনে দিয়েছে এ নিয়ে মানুষের মনে চলছে হিসেব নিকেশ।

এদিকে আগামী ৯’মার্চ পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের আকর্ষণ করতে নতুন নতুন কৌশল হাতে নিয়েছে মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ। পটুয়াখালীর এমন সাদা কালা উন্নয়নে পৌরবাসী নয় বহিরাগত আগমনকারীরা ও সাধারণ কতিপয় জনগন যারা জানেনা দাপ্তরিক ভাবে বরাদ্দ কতটুকু আর উন্নয়নের মাত্রা কতটুকু কেবল তারাই এ উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন আর যারা স্থানীয় ভোটার ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগন ব্যাবসায়ী তারা পেটে গামছা বেঁধে থাকতে হচ্ছে এমনটাই বর্তমান বেশিরভাগ চিত্র পটুয়াখালীর।