• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

নির্বাচন ঘিরে মধুখালীতে বেপরোয়া মির্জা মিলন বাহিনী!


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২, ২০২৪, ৬:২৬ অপরাহ্ন / ৪৪
নির্বাচন ঘিরে মধুখালীতে বেপরোয়া মির্জা মিলন বাহিনী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুরঃ হত্যা, জোরপূর্বক জমি দখল, সংখ্যালঘু নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ফরিদপুরের মধুখালীর মির্জা মাজহারুল ইসলাম মিলন। যার আতঙ্কে তটস্থ থাকতে হয় এলাকাবাসীকে। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনের আগে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী মিলন ও বাহিনীর সদস্যরা। যা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি যাকে তাকে হুমকি প্রদর্শন, চাঁদাদাবি সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে মিলন বাহিনীর বিরুদ্ধে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নির্বাচনের আগে কেউ যদি সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করতে চাই অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিলন বাহিনীর বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে। তার ভয়ে কেউ সরাসরি কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে চান না। তবে নির্বাচনি এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।

জানা গেছে, শান্তির জনপদ হিসেবে পরিচিত মধুখালীকে নির্বাচনের আগে অশান্ত করতে চাইছে মাজহারুল ইসলাম মিলনের সন্ত্রাসী বাহিনী। নিজেকে কথিত একটি দলের নেতা দাবি করে এলাকায় এমন কোনো অপরাধ নেই যার সাথে জড়িত না এই মিলন। এলাকায় মাদক ব্যবসা এখন বেড়েছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থায় সে দেদারসে করছে মাদক ব্যবসা। তার দলে রয়েছে রেলগেট এলাকার জাহিদ, বাবুল, সুজন উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন অপরাধ করলেও স্থানীয় একজন সরকার দলীয় নেতার কারণে বারবার রেহাই পেয়ে যান।

সূত্র বলছে, মধুখালীর আলোচিত মিলন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এই সন্ত্রাসী মিলন। তাছাড়া ২০১৩ সালে সংখ্যালঘু প্রতিবেশী সুনীল সরকারের ঘর পুড়িয়ে দেয় মিলন বাহিনী। আলোচিত এই ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর পুনরায় এলাকায় নানান অপকর্মে জড়িয়েছে। ২০২০ সালে বিধবা নারীর জমি জোরপূর্বক দখল করে তাতে পুকুর কাটার অভিযোগ আছে মিলন বাহিনীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

বিভিন্ন সময় মধুখালী বাজারে চুরির ঘটনায় এই মিলনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তবে এসব চুরির ঘটনায় থানায় মামলা হয় না। মামলা হলে পুনরায় বাদীর দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে৷ এরকম বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত এই মিলন। তাছাড়া অসহায় দরিদ্র এক বিধবার জমি জোরপূর্বক দখল করে পুকুর খনন করার অভিযোগ মাজহারুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মিলন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মধুখালী থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওই নারী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কোড়কদি ইউনিয়নের খোদাবাসপুর গ্রামের মৃত কাজী আকিদুল ইসলামের মেয়ে বিলকিছ বেগমের পুরান মধুখালী মৌজার জমিতে জোরপূর্বক পুকুর কেটে দখল করে নেয় মাজহারুল ইসলাম মিলন ও তার সহযোগী সামসুর রহমান। জমি দখলে বাধা দিতে গেলে বিলকিছ বেগম ও তার ছেলেকে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

বিলকিছ বেগমের অভিযোগ, জমি ফিরে পেতে গ্রামবাসী ও বিভিন্ন দপ্তরের দ্বারস্ত হয়েও কোনো লাভ হয়নি। মিলনের বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউই মুখ খুলতে সাহস পায় না বলে জানান ওই নারী। তিনি জানান, মিলনের বিরুদ্ধে জমি দখল ছাড়াও হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে।

এদিকে সরকারি বাঁওড় দখলের অভিযোগ উঠেছে মিলন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। উপজেলার ‘বৈকুণ্ঠপুর’ বাঁওড়টি সরকারি উন্মুক্ত জলা। কিন্তু তা দখলে নিয়ে মাঠ চাষ শুরু করে মিলন।

বাওড় পাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, আমরা গোসল পর্যন্ত বাওড়ে করতে পারি না। সেখানে যাওয়ায় মিলন বাহিনী দুইনারীসহ ১২ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। বাওড়ের পাড়ে ও মাঝে ছোট ছোট খুপরী ঘর করা হয়, যেখানে মাদকসহ অসামাজিক কার্যকলাপের আড্ডা বসে প্রতিনিয়ত।

থানা পুলিশ বলছে, এর আগেও মিলনের চাচা পুলিশকে পিটিয়ে আহত করেছিল। তারা নানান অপকর্মে জড়িত। নির্বাচনের আগে নতুন করে অপরাধে সক্রিয় মিলন বাহিনী। আমরা বিষয়টি নজর রাখছি। যদি তেমন কোনো অপরাধ এরমধ্যে নজরে আসে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

অভিযুক্ত মিলনকে ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।