• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

টুঙ্গিপাড়ায় বিল্লাল গাজীর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৫, ২০২৪, ৩:১১ অপরাহ্ন / ২৯
টুঙ্গিপাড়ায় বিল্লাল গাজীর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের চর-কুশলী গ্রামে ৮ বছর পর শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে এসে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজনদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হন বিল্লাল গাজী। খুনিরা বিল্লাল গাজীকে কলাবাগানের ভিতরে নির্মমভাবে খুন করে লাশটি টেনে হেঁচড়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে বেঁধে রাখে।

সোমবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন গোপালগঞ্জ জেলা শাখা ও দৈনিক ভোরের বাণী পত্রিকার শাখা কার্য়ালয়ে বিল্লাল গাজী হত্যা মামলার বাদী তার স্ত্রী এছমোতারা বেগম এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি আজ আপনাদের সামনে দুঃখ ভরাক্লান্ত মন নিয়ে হাজির হয়েছি, আজ আমি একজন বিধবা নারী তবে কিছু দিন আগেও এমনটা ছিলো না। আমি আমার স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে পরম সুখে-শান্তিতেই বসবাস করতে ছিলাম তবে গত ০৭/০৪/২০২৪ ইং তারিখে শত্রুদের নির্মম পাষন্ডতায় হারাতে হয় আমার স্বামীর জীবন আর বিধবা হতে হয় আমাকে এবং পিতৃ হারা হয় আমার একমাত্র ৭/৮ বছরে সন্তানকে।

তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী বিল্লাল গাজীকে নিয়ে আমি দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশি দেশ ভারতে বসবাস করে আসছিলাম। তবে আমি আমার স্বামীকে নিয়া মাঝে মধ্যে আমার বাবার বাড়ী চরকুশলী গ্রামে বেড়াতে আসি এরই ধারাবাহিকতায় রোজার শুরুর দিকে ঈদ উদযাপনের জন্য আমার স্বামী বিল্লাল গাজীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসি। বাবার বাড়ি আসার পরে গত ০৭/০৪/২০২৪ ইং তারিখ রোজ রোববার দুর্বৃত্তরা পূর্ব শত্রুতার জেরে হঠাৎ আমার বাবার বাড়ি এসে আমার স্বামীকে ডাকা-ডাকি করে। এমন সময় আমি তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরের দরজা খুলে ইলেকট্রিক লাইট জ্বালিয়ে দেখি একসাথে ৪/৫ জন লাঠি-সোটা হাতে নিয়ে আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে আমার স্বামী বিল্লাল গাজীকে খোঁজা-খুজি করতেছে। এমন সময় তাদের অবস্থার বেগতিক দেখে আমি আমার স্বামীর জীবন বাঁচানোর জন্য পিছনের দরজা দিয়ে তাকে বের হয়ে যেতে বলি। আমার স্বামী বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শত্রুরা তাহাকে হত্যার উদ্যেশে তার পিছনে ধাওয়া করে এবং একপর্যায়ে আমার স্বামী যখন দৌড়ে কলা বাগানের দিকে যায় সেখানে আরো ৫/৬ জন লোক আগের থেকে উপস্থিত ছিলো। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে নান্নু মোল্লা, পিতা- ফজর মোল্লা, গ্রাম- চর কুশলি, মোহম্মদ সিকদার, পিতা- নুর হোসেন শিকদার, গ্রামঃ কুশলী দক্ষিণপাড়া, আলমগীর মোল্লা, আনু মোল্লা, উভয় পিং- আকরাম মোল্লা, গ্রামঃ চর কুশলি, বুলবুল ওরফে বুলু পিং- খোকা মোল্লা, গ্রামঃ চর কুশলী, ইমন মোল্লা, তরিকুল মোল্লা ওরফে তরিক, উভয় পিং- নান্নু মোল্লা, গ্রামঃ চর কুশলি, সাহেদা, স্বামীঃ আকরাম মোল্লা, বিথী, স্বামীঃ আলমগীর মোল্লা, রেহানা, স্বামী সরোয়ার, রুপা আক্তার, পিং- সরোয়ার মোল্লা, সর্ব সাং- চর কুশলি, উপজেলাঃ টুঙ্গিপাড়া, জেলাঃ গোপালগঞ্জ। ওরা সবাই আমার স্বামীকে নির্মম ভাবে হত্যা করে তার লাশ টেনে হেঁচড়ে তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে, পুলিশ এসে হত্যাকারীদের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে। আমি আমার স্বামীর সকল হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানায় নিহত বিল্লাল গাজীর স্ত্রী এছমোতারা বেগম নিজে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে ছিলেন। টুঙ্গিপাড়া থানা মামলা নং- ০২, তারিখ ০৭/০৪/২০২৪ ইং। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের শাশুড়ি -সন্তান ও স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

টুঙ্গিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার আমিনুর রহমান ও ওসি তদন্ত আহম্মেদ আলী বিশ্বাস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইতোমধ্যেই এজাহারে উল্লেখিত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।