• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:২১ পূর্বাহ্ন

ঝালকাঠিতে শিক্ষকের মারধরের শিকার শিশু শিক্ষার্থী এখন হাসপাতালে


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩, ১২:৩৯ অপরাহ্ন / ১১২
ঝালকাঠিতে শিক্ষকের মারধরের শিকার শিশু শিক্ষার্থী এখন হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝালকাঠিঃ ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলাধীন পরমহল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী নূরানী মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্র তানভীন ভূইয়াকে (১০) একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আবু ইউসুফ ( আমতলি হুজুর) গাছের ডাল দিয়ে পায়ের তালুতে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আহত ছাত্র তানভীন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ বিষয় সরজমিনে গিয়ে জানাযায়, গত ৩০ আগস্ট বুধবার সকালে শিক্ষক আবু ইউসুফ সকালের খাবার খেতে যাওয়ার জন্য ছাত্রদেরকে ৪০ মিনিট সময় দেন। এ সময় নুরানী শাখার তিন শিক্ষার্থী আশরাফুল, জুবায়ের, ও আবদুল্লাহর সাথে তানভীন দুষ্টমি করে। পড়ে শিক্ষক ইউসুফ মাদ্রাসায় আসলে ছাত্ররা শিক্ষকের কাছে বিচার দেয়। বিচার শুনে শিক্ষক ইউসুফ ঐ ৪ জন শিক্ষার্থীকে শ্রেনী কক্ষে ডেকে নেয়। এবং অপর এক ছাত্রকে লাঠি হিসেবে গাছের ডাল ভেঙ্গে নিয়ে আসতে বললে ঐ ছাত্র গাছের ডাল ভেঙ্গে নিয়ে আসলে তার কাছ থেকে ডাল নিয়ে ৪ জন ছাত্রকেই মারধর করেন।

শিক্ষকের মারধরের শিকার নুরানী পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী আশরাফুল ও জুবায়ের জানায়, ইউসুফ হুজুর তাদেরকে শ্রেনী কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদের হাতে, পিঠ সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ডাল দিয়ে মারধর করে। তানভীনকে মারধর করতে গেলে তানভীন আর দুষ্টমি করবো না ( হুজুর আমি আর দুাষ্টমি করমুনা আমারে মাফ কইরা দেন ) বলে শিক্ষকের কাছে মাফ চায়। কিন্তু শিক্ষক তাকে মারধর শুরু করলে একপর্যায় তানভীনের পা শিক্ষকের গায়ে লেগে যায় এতে ঐ শিক্ষক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তানভীনের দুই পায়ের তলায় লাঠি দিয়ে বেধরক মারধর করে। মারধরের পরে তানভীন মাদ্রাসা থেকে দৌড়ে বাহিরে চলে যায়।

এ বিষয় মাদ্রাসা প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার জানান, শিশু শিক্ষার্থীরা দুষ্টমি করায় শিক্ষক আবু ইউসুফ তাদেরকে মারধর করে এবং তানভীন মার খেয়ে তার আমার কাছে না এসে তার বাসায় চলে যায়। কিছুক্ষন পরে তানভীনের বাবা আব্বাস ভুইয়া হাতে একটি মেহেগনি গাছের ডাল নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালগাল করতে করতে মাদ্রাসার ভিতরে প্রবেশ করে। বিষয়টি আমি টের পেয়ে আব্বাস ভাই বলি আপনি শান্ত হোন বিষয়টি আমি দেখছি এবং ইউসুফ হুজুরে বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে কিন্তু আব্বাস ভাই আমার কথা না শুনে ইউসুফকে বারান্দায় দেখতে পেয়ে লাঠি নিয়ে তার শরীরে আঘাত শুরু করে। ইউসুফ নিজেকে লাঠির আঘাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে শ্রেনী কক্ষে ঢুকে দড়জা বন্ধ করলে আব্বাস ভাইয়ের লাঠির আঘাত ইউসুফের গায়ে না পড়ে দরজায় গিয়ে আগাত লাগে। বিষয়টি আমি মাদ্রাসা পরিচালক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তাদের পরামর্শে শিক্ষক ইউসুফ সহ আমরা তিনজন তানভীনকে হাসপাতালে দেখতে যাই এবং প্রাথমিক চিকিৎসা আংশিক ব্যয় ভার বহন করি। পড়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পর আমি শিক্ষক ইউসুফ ও তার সাথে থাকা আরেকজনকে মাদ্রাসার পথে নামিয়ে দিয়ে আমার বাড়ীতে ফিরছিলাম। পথি মধ্যে শিক্ষক ইউসুফ আমার ফোনে কল দিয়ে জানায় তানভীনে বাবা তাকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করেছে। শিক্ষককে মারধরের বিষটি আমি তাৎক্ষনিক ভাবে আমার মাদ্রাসা পরিচালক ও ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই।

আহত শিশু শিক্ষার্থী তানভীন ভূইয়ার বাবা আব্বাস উদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তনভীন মাদ্রাসা থেকে দৌড়ে বাড়ী চলে যায়। এরপর তানভীনের মা তানভীনকে নিয়ে বাউকাঠি বাজারের স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে পল্লী চিকিৎসক তাকে সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে তানভীনকে নিয়ে তার মা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আমার ছেলেকে অমানবিক ভাবে মারধর করেছে আমি এর বিচার চাই। এছারাও তানভীনকে মারধরের ঘটনায় (আব্বাস) আপনি শিক্ষককে মারধর করেছেন বলে জানাযায়, এ বিষয় আহত শিক্ষার্থীর বাবা আব্বাসের কাছে জানতে চাওয়া হলে, আব্বাস ভুইয়া বলেন, এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি হুজুরে নিজে বাঁচার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলতেছে।

এ বিষয় মাদ্রাসা শিক্ষক ইউসুফের সাথে যোগাযোগ করতে মাদ্রাসায় গেলে আবু ইউসুফকে মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি। শিক্ষক ইউসুফকে না পেয়ে তার মুঠো ফোনে কল দেয়া হয়। সে কলটি রিসিভ করে মাদ্রাসায় আসতেছি বলে সংবাদকর্মীকে অপেক্ষায় থাকতে বলেন। অনেকক্ষন অপেক্ষার শিক্ষক ইউসুফ মাদ্রাসায় না আসলে পুনরায় তার ব্যবহারিত ফোন নম্বরে কল দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।