• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন

আশার আলো দেখাচ্ছে অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা


প্রকাশের সময় : মে ১৭, ২০২৩, ৬:৫২ অপরাহ্ন / ১১০
আশার আলো দেখাচ্ছে অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা

অর্থনৈতিক প্রতবেদকঃ বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা অপ্রচলিত বাজারে ক্রমাগত বাড়ছে। যা রপ্তানি খাতে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এ খাতে ৭০০ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়ে ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ প্রবৃদ্ধি শুধু চলতি অর্থবছরের নয়, গত ছয় অর্থবছরের তথ্য বিশ্লেষণ করেও রপ্তানি বাড়ার চিত্র দেখা গেছে। অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে রয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন, তুরস্ক, ব্রাজিলসহ আরো কিছু দেশ। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি বছর জাপানে ১৩২ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়, যা অপ্রচলিত অন্য সব বাজারের তুলনায় সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়ায় ৯৬ কোটি ডলার, ভারতে ৮৮ কোটি ডলার, চীনে ২১ কোটি ডলার, কোরিয়ায় ৪৭ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে বাংলাদেশ থেকে মোট ৩ হাজার ৮৫৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি হয়েছে ৭০০ কোটি ডলার, যা মোট পোশাক রপ্তানির ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। এর আগের বছর এ খাতে মোট রপ্তানি হয়েছিল ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি ডলার। এর মধ্যে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি ছিল ৫৩৫ কোটি ডলার, যা মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। সূত্র জানায়, অপ্রচলিত বাজারে গত ছয় অর্থবছর ধরে তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অপ্রচলিত বাজারে ৪৬৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা মোট পোশাক রপ্তানির ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। পরের অর্থবছরে তা বেড়ে ৫৬৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছিল।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৭৭ কোটি ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫০৮ কোটি ডলার, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই অপ্রচলিত বাজারের আগের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। যদিও মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে থাকা বাংলাদেশ জিএসপিসহ নানা সুবিধা হাতছাড়া হবে। সেক্ষেত্রে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভরসা হতে পারে। অপ্রচলিত বাজারে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশী দূতাবাসগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জরুরি। সূত্র আরো জানায়, অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপানে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর ব্রাজিলে সবচেয়ে বেশি ৭১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়া তুরস্কে ৫৮ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৫৫ শতাংশ, ভারতে ৫০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ৩৯ শতাংশ। তবে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে রাশিয়ায় ৩৩ শতাংশ ও চিলিতে ১০ শতাংশ। রাশিয়ার বাজারে পোশাক রপ্তানির হার বরাবরের মতো কমছে। গত অর্থবছর ৫৩ কোটি ডলার রপ্তানি হলেও চলতি অর্থবছর তা ৩৫ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলে যেখানে প্রচলিত ও অপ্রচলিত মোট পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, এর মধ্যে অপ্রচলিত পোশাক রপ্তানিতে ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

এ ১০ মাসে নতুন বাজার থেকে পোশাক রপ্তানি আয় হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন ডলার। ওই হিসেবে চলতি অর্থবছর শেষে রপ্তানি ৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। নতুন বাজারের জন্য সরকারের সহযোগিতা একটি মডেল। এদিকে এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান জানান, ‘নতুন বাজারগুলোতে পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বেশকিছু নতুন পণ্য যেমন আউটারওয়্যার ও অ্যাকটিভ ওয়্যারে পজিটিভ ডেভেলপমেন্ট দেখা যাচ্ছে। যদিও এসব নন-কটন পণ্যের কাঁচামাল উৎপাদনের দিক থেকে দেশ একেবারে পিছিয়ে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বর্তমান সরকার বাজার বহুমুখীকরণের জন্য প্রণোদনা দিয়েছিল। এর ফলে অপ্রচলিত বাজারগুলোতে এদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অপ্রচলিত বাজারগুলোতে রপ্তানি বিগত ১৪ বছরে ৮৪৯ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৬ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসেও নতুন বাজারগুলোতে তৈরি পোশাক রপ্তানি আশাব্যঞ্জক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।