• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

সিলেটে প্রকাশ্যে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৯, ২০২২, ৯:০৪ অপরাহ্ন / ২৭৬
সিলেটে প্রকাশ্যে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা

সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটে নগরীতে পূর্ব শক্রতার জেরে প্রকাশ্যে এক সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

জানা গেছে- রোববার (১৭ জুলাই) নগরীর বন্দরবাজার এলাকার মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) পড়শী রেস্টুরেন্টের সামন থেকে প্রকাশ্যে নির্যাতন করে রংমহল টাওয়ারের পূর্ব পাশে পুরাতন জেলের পরিত্যাক্ত কোয়াটারের ঘরে নিয়ে সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেনের উপর এ হামলা করে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) সহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সাংবাদিক রায়হানের মা বাদী হয়ে এসএমপির কোতোয়ালী থানায় সুরমা মেইল ডটকম এর কথিত সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ও শাহপরান (রহ.) থানাধীন চুয়াবহর গ্রামের আব্দুল আলীমের পুত্র মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) ও আবিদুর রহমান আব্দুল সহ অজ্ঞাতনানা ১০/১২ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন। যাহার থানার মামলা নং- ৪৪, তাং- ১৮/০৭/২২ইং।

মামলা সুত্রে জানা গেছে- আহত মোঃ রায়হান হোসেন একজন পেশাদার সাংবাদিক। বিগত কিছুদিন হইতে উল্লেখিত ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) সহ অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামীগণ তাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফেসবুক অনলাইনে মিথ্যা সংবাদ প্রচার প্রচারণা করিয়া থাকার কারণে সাংবাদিক রায়হান বাদী হয়ে ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) সহ তার অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাইবার ট্রাইব্যুনাল সিলেটে বিগত (৩০ জুন) মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং- ৯৮/২২। মামলাটি বর্তমানে তদন্তধীন রয়েছে।

উক্ত মামলা দায়ের করার পর হইতে ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) সহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ও সময়ে তাহার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আটকাইয়া মামলা উঠাইয়া নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের খুন-খারাপি করার হুমকি, ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করিতো।

তার প্রেক্ষিতে সাংবাদিক রায়হান নিজের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে বিগত রবিবার (১৬ জুলাই) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার ও উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বরাবরে পৃথক দুটি দরখাস্ত দাখিল করেন। তাতে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হইয়া গত সোমবার (১৭ জুলাই) বিকাল অনুমাণ ৫ ঘটিকায় সাংবাদিক রায়হান সিলেট জজ কোর্ট হইতে তাহার ব্যক্তিগত কাজ শেষ করিয়া বাসায় যাওয়ার পথে আগেই উৎ পেতে থাকা ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) এর নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আসামীগণ তাকে ঘেরাও করিয়া ফেলে। তখন সাংবাদিক রায়হান কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) হুকুম দিয়া বলে ২নং আসামী আবিদুর রহমান আব্দুলকে বলে যে, শালার বেটারে আজ মামলা করার স্বাদ মিটাইয়া দেও। তখন ২নং আসামী আবিদুর রহমান আব্দুল সাংবাদিক রায়হানের শার্টের কলারে ঝাপটা মারিয়া ধরিয়া মাটিতে ফেলিয়া কিল, ঘুষি ও লাত্তি মারিতে থাকে। একপর্যায়ে সাংবাদিক রায়হানকে বন্দর বাজারের পড়শী ও পাকশী রেস্টুরেন্টের সামন হইতে টানাহেঁচড়া করিয়া রংমহল টাওয়ারের পার্শ্ববর্তী পুরাতন কারারক্ষী কোয়ার্টারের পরিত্যক্ত রুমে নিয়া মারপিট করিতে থাকে।

এ সময় ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) উত্তেজিত হইয়া সাংবাদিক রায়হানকে খুন করার উদ্দেশ্যে গলায় হাত চাপা দিয়া ধরিয়া শ্বাসরোদ্ধ করিয়া খুন করার চেষ্টা করে। তখন ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) তার হাতে থাকা জিআই পাইপ দিয়া খুন করার উদ্দেশ্যে সাংবাদিক রায়হানের মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে সাংবাদিক রায়হান ডান হাত দিয়া প্রতিহিত করিলে ডান পায়ের হাঠুর গিলাতে পড়িয়া মারাত্মক রক্তাক জখম সহ পা ভাঙ্গিয়া যায়। এসময় ২নং আসামী আবিদুর রহমান আব্দুল তার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়া সাংবাদিক রায়হানের শরীরে বিভিন্ন স্থানে মারপিট করিয়া ফুলাছেচা যখম করে ও অজ্ঞাতনামা আসামীগণ কিল, ঘুষি ও লাত্তি মারে।

ঘটনার সময় সাংবাদিক রায়হানের সঙ্গে থাকা একটি ফাইল, যাহাতে তাহার দায়েরকৃত মামলার কাগজ, তাহার বাসার জায়গার মূল দলিল, পুলিশ কমিশনার ও উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বরাবরে দাখিলকৃত দরখাস্তের আসল কপি এবং তাহার ব্যবহৃত হিরো এইচ.এফ মডেলের মোটরসাইকেল যাহার নং- হ- ১১-৮৭৭৯ গাড়ীর চাবি, গাড়ীর কাগজ ও সঙ্গে থাকা নগদ ৫ হাজার টাকা এবং তাহার ব্যবহৃত Samsung A02 মডেলের একটি মোবাইল সেট যাহার মূল্য অনুমান ১২ হাজার টাকা ১নং আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে (হাত কাটা হানিফ) জোরপূর্বক ছিনাইয়া নিয়া যায়। পরবর্তীতে পথচারী লোকজন সাংবাদিক রায়হানকে আসামীগণের কবল হইতে উদ্ধার করিয়া সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আলী মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান- এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।