
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুরঃ গাজীপুরে সড়ক ও জনপথের জমি অবৈধভাবে দখল করে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ কাজ শুরু করেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। যার কারণে ফুটপাতে পথচারীদের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমন সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে গুমের চেষ্টা করেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান আবু সামা জেলার শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মৃত কিতাব আলীর ছেলে। দুপুরে জেলার শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা থেকে বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল এশিয়ান টেলিভিশনের গাজীপুর প্রতিনিধি আরিফ খান আবিরকে তুলে নিয়ে গুমের চেষ্টা করা হয়। পরে খবর পেয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা যায়, গত কয়েক দিন আগে সড়কের জমিতে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করতে ইটের গাঁথুনি দেওয়া শুরু করেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরটি উঠে আসে। সেটি সংবাদকর্মী আরিফ খান আবির পথচারীদের অভিযোগে সড়কের জমি দখলের সংবাদ তৈরি করেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এমন অপরাধের কথা তুলে ধরেন। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে, এক দিন পরেই গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। দখল মুক্ত করা হয় সড়ক। পথচারীদের চলাচল নিবিঘ্ন করা হয়। পরে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও শ্রীপুর পৌরসভার যৌথ অভিযানে উচ্ছেদ হয়। এ ঘটনার পর থেকে সাংবাদিক আরিফ খান আবিরকে নানাভাবে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
গুমের শিকার সংবাদকর্মী আরিফ খান আবির বলেন, সড়কে অবৈধ উচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আবু সামা নানাভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে। আজ মাওনা চৌরাস্তায় ইফতারের খবরের লাইভে থাকার আগ মুহূর্তে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার বাড়ির আন্ডারগ্রাউন্ডে আটকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে কয়েকবার মারধর করতে আসেন। পরে কেয়ারটেকারদের বস্তা ও ছুরি আনতে বলেন আমাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য। আমাকে প্রায় ২ ঘণ্টা অপহরণ করে রাখে। কৌশলে প্রেসক্লাবের গ্রুপে অপহরণ করার খবর দিলে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উদ্ধার করেন।
উদ্ধার করতে যাওয়া সংবাদকর্মীদের মধ্যে একজন রাতুল মন্ডল জানান, প্রেসক্লাবের গ্রুপে জানতে পারি সহকর্মী আরিফ খান আবিরকে জিম্মি করে রেখেছে ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু সামা। পরে সেখানে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত হয়ে সহকর্মীকে উদ্ধার করি। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
শ্রীপুর প্রেসক্লাবের আহবায়ক আব্দুল সালাম রানা জানান, সহকর্মীকে আটকে রেখে তাকে গুম করতে চেয়েছে, এটি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এবং পাশাপাশি অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।
গাজীপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও একাত্তর টেলিভিশনের গাজীপুরের প্রতিনিধি ইকবাল আহমেদ সরকার জানান, গণমাধ্যম কর্মীকে এভাবে অপহরণ করে হত্যা করতে চাওয়া স্বাধীন সাংবাদিকতাকে হত্যা করা। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার দাবি করেন।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক মো. শামীম আক্তার জানান, ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :