• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৬:২৯ অপরাহ্ন

নীলফামারীতে স্বর্ণের চালান এখন গলার কাঁটা


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২৩, ৫:৪৭ অপরাহ্ন / ১৪০
নীলফামারীতে স্বর্ণের চালান এখন গলার কাঁটা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নীলফামারীঃ নীলফামারীতে স্বর্ণের চালান আটক করে গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আধিদপ্তরের। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্বর্ণ চালান আটককারী অভিযানিক দলের একজন সদস্য সিপাই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। এরপর থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আধিদপ্তরে গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছে মাদক বিরোধী অভিযানিক দলটি। এরফলে ঘটনাটি ধ্রমজালের সৃষ্টি হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায় নীফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গোপন সংবাদ পেয়ে অভিযানিক দলটি রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের সৈয়দপুর উপজেলার কামার পুকুর নামক স্থানে ইনতেফা বালাইনাশক প্রতিষ্ঠানটির সামনে ১১ ফেব্রয়ারী সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৪-৪১৯১) নাবিল পরিবহনে অভিযানিক দলটি তল্লাশী চালিয়ে ২০টি স্বণের বারসহ দু’জনকে আটক করে। ২৩ দশমিক ৯৬ ক্যারেটের স্বর্ণের বারের প্রতিটির ওজন ১১৬ দশমিক ৬৬ গ্রাম। এই ২০টি স্বার্ণের ওজন ২ হাজার ৩ শত ৩৩ দশমিক ২০ গ্রাম। যার বাজার মুল্য ২ কোটি টাকা।

আটককৃত স্বর্ণ চোরাচালানের সদস্য ঢাকা মানিকগঞ্জ জেলার সিঈাইর উপজেলার গোবিন্দল ইউনিয়নের মোঃ সমন আলীর ছেলে আব্দুর রহিম (২৫) ও নুরু উল্লাহ’র ছেলে মোহাম্মদ উর্লাহ (২৬)।

নীলফামারী মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানে পরিদর্শক শফিকুল ইসলামের নের্তত্বে সৈয়দপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার ভুমি মোঃ আমিনুল ইসলাম, নীফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন, উপ-পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক, সহকারী উপ-পরিদর্শক আব্দুল মোতালেব মৃধা, সিপাই মেহিদী হাসান, শামিম, শাওন, নুর ইয়াছিন মুজাহিদ, জিয়াউর রহমান, রবিন্দ্র নাগ ও গাড়ী চালক আবুল কালাম আজাদ অংশ নেয়।

অভিযান শেষে নীলফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানিক দলের পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম সৈয়দপুর থানায় দায়ের কৃত মামলার এজাহারে উল্ল্খে করেছেন এ অভিযান পরিচালনাকালে সৈয়দপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার ভুমি মোঃ আমিনুল ইসলাম, নীফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এই দুই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলের উপস্থিতি এজাহার নজরে পড়লে ভুল সংশোধনে মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম ৯ দিনের মাথায় সৈয়দপুর থানায় এজাহার ভুল বর্ণনা শুদ্ধকরনে সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়রীর জিডি ট্রাকিং নং ৪২১১ এফ ইউ,জিডি নং ১২৩৬, তারিখ-১৯-০২-২০২৩।

এ ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে ধুম্রজালে সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নীলফামারী মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাই মেহেদী হাসানকে সৈয়দপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করলে। অভিযানিক দলের সদস্যদের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন বলে জানা গেছে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে নীলফামারী মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনের বলেন, ঘটনাটি ঘটে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে আমি খবর পাই সকাল ১০টায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। এরপর ১২ টা ৪০মিনিটে সৈয়দপুর থানায় আমি ও সৈয়দপুর উপজেলা কমিশনার ভুমি মোঃ আমিনুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে মামলা সংক্রান্ত কার্য্য সম্পাদন করে উদ্ধারকৃত ২০টি স্বর্ণেরবার সহ আসামীদ্বয়কে সৈয়দপুর থানায় সোপর্দ্দ করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকতা সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, আটক স্বর্ণের চোরাচালন সদস্য আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ উর্লাহ ও রেয়াজুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দি কালে তারা স্বীকার করেন ঢাকা থেকে ৩০টি স্বর্ণের বার নিয়ে নাবিল পরিবহনে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সৈয়দপুর কামার পুকুরে নীলফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানে স্বর্ণের চালনসহ দু’জনকে আটক করে।

তাদের কাছে তল্লাশী চালিয়ে ২০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে।এ সময় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাই মেহেদী হাসান তাদের কাছে থাকা ১০ স্বর্ণের বার কেড়ে নিয়ে আত্বসাৎ করেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে সিপাই মেহেদী হাসানকে সৈয়দপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।

মামলার গতির প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে র স্বার্থে আরো কেউ জড়িত হবে কি না তা এই মহুুর্তে বলা যাচ্ছে না।

জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।