• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেতগুলোর কোনটার কী অর্থ


প্রকাশের সময় : মে ৫, ২০২৩, ৪:০০ অপরাহ্ন / ৪৫
ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেতগুলোর কোনটার কী অর্থ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বঙ্গোপসাগরে আগামী ৯ থেকে ১১ মে’র মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোচা’। ঘূর্ণিঝড়টি ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে ১১ থেকে ১৫ মের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার রাতে মার্কিন গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, ১১ মে মধ্যরাতের পর থেকে ১৩ মে’র মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানলে বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ থাকতে পারে ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। তবে এটি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানার শঙ্কাও রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে নাম হবে ‘মোচা’। নামটি দিয়েছে ইয়েমেন। চারদিন আগে আবহাওয়া সংস্থা ওয়েদার অব কলকাতার কর্মকর্তা রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়া পরিস্থিতি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল থাকবে। তবে ঝড়টি কবে কোথায় তৈরি হবে তা এত আগে বলা সম্ভব নয়। ঝড়টি তৈরি হলে তখন তার গতিপথ নির্দিষ্ট করে বলা যাবে। আমরা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছি। এর আগে, ২০২০ সালের মে মাসেও বাংলাদেশের উপকূলীয় কয়েকটি জেলা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে একাধিক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। আয়লা, আমফানের মতো ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের এমন সময় আবহাওয়া অফিস থেকে সতর্কতা হিসেবে যেসব সংকেত জারি করা হয় তা-ই ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১ থেকে ১১টি সংকেত দিয়ে সুমদ্রগামী জাহাজ ও বন্দরকে সতর্ক করে থাকে তারা।

তো এবার সেই সংকেতগুলোর কোনটার কী অর্থ জেনে নিনঃ  ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: এর অর্থ হলো জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার (কি.মি.)। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে। ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত: দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে। ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত: বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কি.মি. হতে পারে। ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত: বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কি.মি.। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি। ৫ নম্বর বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৬ নম্বর বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৭ নম্বর বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরের উপর বা এর নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি.বা তার বেশি হতে পারে। ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত: আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।