• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন

প্রফেসর সাইদুর ছাত্রীকে মা ডেকেই যৌনাচার করেন তিনি !


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন / ১৭৭
প্রফেসর সাইদুর ছাত্রীকে মা ডেকেই যৌনাচার করেন তিনি !

আজকের বাংলাদেশ টুয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্কঃ টার্গেট তার সুন্দরী নারী। যদি হয় তার স্বামী প্রবাসী তাহলে তো কথাই নাই। ছাত্রীদের প্রতি তার নজর আলাদা। তাও বাবার নজর! ছাত্রীদেরকে মা ডেকেই নিজেকে বাবার আসনে বসান তিনি। এরপরই সেই ছাত্রীর সাথে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হন। কাউকে কলেজে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে ম্যানেজ করে আবার কাউকে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে শারিরীক সম্পর্ক করতেন তিনি। তার যৌন লালসা থেকে বাদ পড়েনি নিজ স্ত্রীর বড় ভাইয়ের মেয়েও। নাম তার সাইদুর রহমান ওরফে লম্পট সাইদুর।

তিনি মিরপুরের অবস্থিত ঢাকা কমার্স কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান। অত্র কলেজ এলাকার অনেকেই তাকে লম্পট ও আরেক পরিমল হিসেবে নাম দিয়েছেন। কলেজ পাড়ায় তার নাম শুনলেই ছি ছি করে থু থু ফেলেন সাধারণ দোকানদাররা। রাজধানীর মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজের প্রতিদিনের ঘটনা এটি। ছাত্রী হোস্টেলে সর্বশেষ উপরের তলায় করেছেন তার রোমাঞ্চ করার রুম। একাধিক শিক্ষিকা ও ছাত্রীর সাথে শারিরিক সম্পর্ক করেছেন এই রুমে।

একাধীক সূত্রে জানা গেছে, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী দুই নারী শিক্ষিকা কলেজের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি ও মহিলা পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে এ অভিযোগ তদন্ত না করে গভর্নিং বডি উল্টো তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উত্থাপন করে আসল ঘটনার তদন্ত আড়ালে রেখে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে আসছে।

কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এর সত্যতা জানা যাবে। আর সাইদুর নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো অভিযোগ করেন দুই নারীই তার কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। একজনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। অন্যজন তাকে ‘বাবা’ বলে ডাকতেন। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী দুই নারী ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, গত জুনে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রথম এক নারী শিক্ষক অভিযোগ করেন। এরপর জুলাইয়ে অভিযোগ করেন দ্বিতীয়জন। তবে কোনও প্রতিকার না পেয়ে দুজনই গত ২২ আগস্ট মহিলা পরিষদে অভিযোগ (নং ৯২২৯/১৯) করেন। মহিলা পরিষদ এটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

যৌন হয়রারির শিকার এক নারী প্রভাষক বলেন, বাংলা বিভাগের প্রধান সাইদুর রহমান আমাকে বিভিন্ন সময় হয়রানি করেছে। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি আমাকে ফোন দিয়ে মিরপুর যেতে বলেন। তিনি বিভাগের প্রধান হওয়ায় যেতে বাধ্য হই। তিনি আমাকে হাঁটার জন্য কেডস কিনে দেওয়ার কথা বলেন। আমি নিতে না চাইলেও তিনি জোর করে কিনে দেন। এরপর তার সঙ্গে গাড়িতে উঠলে তিনি জোর করে গায়ে হাত দেন। এছাড়া ২০১৬ সালের শেষ দিকে তিনি আমাকে ওষুধ কেনার কথা বলে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসে অশ্লীল আচরণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি তার কথাবার্তার মাধ্যমেও হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ ওই প্রভাষকের।

তিনি আরো বলেন, আমি ছাড়া আরও কয়েকজন নারী শিক্ষক তার বিরুদ্ধে এমন যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন। তখন কোনও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি কলেজে ছিল না, তাই আমরা অভিযোগ দিতে পারিনি। মৌখিক ভাবে জানালেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

ওই নারী প্রভাষক আরও বলেন, আমি ছাড়া আরও এক নারী শিক্ষক এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমাদের যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্ত না করে কলেজ কর্তৃপক্ষ উল্টো আমাদের সঙ্গে অন্য দুজন পুরুষ সহকর্মীর নাম জড়িয়ে কুৎসা রটিয়েছে। আমাদের ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জার এডিট করে পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন কথোপকথন ফেসবুকে ভাইরাল করেছে।

ভুক্তভোগী ওই প্রভাষক বলেন, আমরা উপায় না পেয়ে মহিলা পরিষদে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু যৌন হয়রানির বিচার পাবো কিনা, তা নিয়ে শঙ্কিত। কারণ, কলেজে দুটি গ্রুপ। তারা খুব শক্তিশালী। তারা আমাদের অভিযোগের তদন্ত এখনও শুরু করেনি।

ভুক্তভোগী অপর শিক্ষিকা বলেন, আমি গত জুনে অভিযোগ করেছি। কিন্তু এখনও কোনও তদন্ত হয়নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের তদন্ত করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গভর্নিং বডির প্রভাবশালী সদস্য মিয়া লুৎফর রহমান গভর্নিং বডিতে দুই নারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্ক তদন্তের এজেন্ডা উত্থাপন করেন। তদন্তে গঠন করা হয় ৩ সদস্যের কমিটি। এর প্রধান হলেন কলেজের সিনিয়র শিক্ষক ও টিচার রিপ্রেজেন্টেটিভ (টিআর) মাওসুফা ফেরদৌসী, শামশাদ শাহজাহান এবং অভিভাবক প্রতিনিধি শামীমা সুলতানা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে হাইকোর্ট দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। কিন্তু কমার্স কলেজে এই কমিটি ছিল না।দুই নারী শিক্ষিকা অভিযোগ দেওয়ার পর যৌন হয়রানির প্রতিরোধ কমিটি করা হয়। এই কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগের বিষয় প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও কলেজের কমিটি কোনও তদন্তই করেনি বলে দুই নারী শিক্ষিকা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে সাইদুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।