মুহাম্মদ রফিকুল্লাহ: গিবত শব্দের অর্থ পরনিন্দা করা, কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা করা ইত্যাদি। কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরার নাম গিবত। এটি মানুষের আমলখেকো বদভ্যাস। গিবত করা ইসলামে কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কুরআনে গিবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন কারও গিবত না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চায়? তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাক।’ (সূরা হুজুরাত : ১২)।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, একদিন আমরা মহানবি (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত ছিলাম। এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি উঠে চলে গেল। তার প্রস্থানের পর এক ব্যক্তি তার সমালোচনা করল। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘তোমার দাঁত খিলাল কর।’ লোকটি বলল, ‘কেন দাঁত খিলাল করব আমি তো কোনো গোশত খাইনি?’ তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি তোমার ভাইয়ের গোশত খেয়েছ।’ অর্থাৎ গিবত করেছ। (তাবরানি)।
মিরাজের রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন কিছু লোকের পাশ দিয়ে পথ চলেছেন, যাদের নখগুলো পিতলের তৈরি, তারা তা দিয়ে নিজেদের মুখ ও বুক ছিঁড়ছিল। রাসূল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা হে জিবরাইল?’ তিনি বললেন, ‘এরা তারাই, যারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের ইজ্জত-আবরু নষ্ট করত। (আবু দাউদ)।
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন, গিবত জেনা থেকেও মারাত্মক গুনাহ।’ সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, গিবত জেনা থেকেও মারাত্মক কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘জেনাকারী তওবা করলে আল্লাহ তওবা কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন। আর গিবতকারীর তওবা কবুল হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত যার গিবত করা হয়েছে, সে ক্ষমা না করে।’ (বায়হাকি)।
(লেখক : শিক্ষার্থী, চরমোনাই জামি’আ রশীদিয়া আহসানাবাদ)
আপনার মতামত লিখুন :