• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৩ অপরাহ্ন

দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদুল আজহা উদযাপন


প্রকাশের সময় : জুলাই ২০, ২০২১, ৭:৪৮ অপরাহ্ন / ৬০৮
দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদুল আজহা উদযাপন

আয়েশা সিদ্দিকী, ঢাকাঃ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) দেশের বিভিন্ন জেলায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। আগাম ঈদ উদযাপনের বিষয়ে আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর তুলে ধরা হলো,

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারীর দুটি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা এ ঈদ উদযাপন করেন। তিনটি জামাতে অন্তত ১৫০০ থেকে ১৬০০ মানুষ এ জামাতে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১ জুলাই সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। কিন্তু বোয়ালমারী শেখর ও রূপাপাত এই দুই ইউনিয়নের ১৩ গ্রামে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ঈদ উদযাপিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব গ্রামের বাসিন্দারা চট্টগ্রামের মীর্জাখীল শরিফের অনুসারী।

মাদারীপুর: সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে মাদারীপুর জেলার ৩০ গ্রামের মানুষ ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন। করোনার কারণে এলাকার দুটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টায় জেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের তাল্লুকচরের দুটি জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজ শেষে দেশের মহামারি ও দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এরপর কোলাকুলি শেষে পশু কোরবানি দেওয়া হয়। মাদারীপুরে হজরত সুরেশ্বরীর (রহ.) ভক্ত ও অনুসারী ৩০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আগে ঈদুল আজহা উদযাপন করতো। কিন্তু দিনে দিনে সেটা কমে এসেছে। এবার দূরের তেমন কেউ ঈদের জামাতে না আসলেও কয়েক হাজার মানুষ এ ঈদ উদযাপন করছে বলে জানান ভক্ত ও অনুসারীরা। তবে আগের চেয়ে অনেকটাই কমে এসেছে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে মাদারীপুর ঈদ উদযাপন। সুরেশ্বর দরবার শরিফের পীর খাজা শাহ সূফী সৈয়দ নূরে আক্তার হোসাইন জানান, সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত জান শরিফ শাহ্ সুরেশ্বরীর (রহ.) অনুসারীরা প্রায় দেড়শ’ বছর আগ থেকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করেন। মাদারীপুর জেলার চারটি উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রামের কয়েক হাজার মুসলিম আজ ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন।

চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের ৪০টি গ্রামে সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন। দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক প্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে ধর্মীয় উৎসব পালনের রেওয়াজ চালু করেন। সৌদি আরবে সোমবার (২০ আগস্ট) পবিত্র হজ পালিত হয়। মঙ্গলবার ঈদ উদযাপিত হয়। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখেই এই ঈদ উদযাপন করা হয়। দরবার শরিফ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির কয়েক গ্রামের মুসল্লিরা ঈদ উদযাপন করেন।স্থানীয় মুসল্লি সাকের হোসাইন বলেন, সৌদিতে সোমবার হজ হয়ে গেছে। তাই মঙ্গলবার আমরা ঈদ করছি। সকাল সাড়ে ৮টায় সাদ্রা ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় সাদ্রা দরবার শরিফ জামে মসজিদে ঈদের শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পীর শায়েখ মাওলানা আরিফ চৌধুরী বলেন, দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক প্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের রেওয়াজ চালু করেন। এ জন্য প্রতিবছর সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আমরা ঈদ ও রোজা পালন করি। করোনা সংক্রমণরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

দিনাজপুর: দিনাজপুরে এবারও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুর সদর উপজেলাসহ ৫টি উপজেলায় মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে, বিরল উপজেলার কামদেবপুর গ্রামে, চিরিরবন্দর উপজেলার পূর্ব সাইতাড়া রাবার ড্যাম এলাকায়, কাহারোল উপজেলা সদরের জয়নন্দ গ্রামে, ১৩ মাইল এলাকায় ও বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়রা বাজার জামে মসজিদে এবং জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি মির্জাপুর জামে মসজিদে কয়েকশ মানুষ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। পরে নামাজ শেষে তারা পশু কোরবানি করেন।

মৌলভীবাজার: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে মৌলভীবাজারে প্রায় শতাধিক পরিবারের মুসল্লি ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকালে মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামক বাসায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।নামাজ শেষে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত ও কোরবানি করা হয়। তবে সামাজিক দূরত্ব মেনে নামাজ আদায় করলেও ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মুসল্লিরা কোলাকুলি করেন। নামাজে ইমামতি করেন আলহাজ আব্দুল মাওফিক চৌধুরীর (পীর সাহেব উজান্ডি)। তিনি জানান, গত ১৪ বছর ধরে তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখেই এই নামাজ আদায় করেন। প্রথমে তার বাসার ছাদে আর এখন তার বাড়ির উঠানে নামাজ আদায় করা হয়।

পিরোজপুর: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেছে পিরোজপুরের ৮ গ্রামের ৭ শতাধিক পরিবার। যারা সুরেশ্বর পীরের অনুসারী বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ৬টি গ্রাম, কাউখালী উপজেলার ১টি গ্রাম ও নাজিরপুরের ১টি গ্রামে ঈদ উদযাপন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবুনিয়া, সাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, খেতাছিড়া ও চকরগাছিয়া গ্রামের প্রায় ৬ শতাধিক পরিবার, কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের শিয়ালকাঠী গ্রামের ৪০ পরিবার ও নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৮০ পরিবার ঈদ উদযাপন করছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করেছেন। সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করতে পারে।