• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন

দেশকে মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বরিশালের বীর মুক্তিকামী জনতা


প্রকাশের সময় : মার্চ ৪, ২০২৩, ৩:০৯ অপরাহ্ন / ৭৪
দেশকে মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বরিশালের বীর মুক্তিকামী জনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, অবিসংবাদিত নেতৃত্বে সাড়া দিয়ে পরাধীন দেশকে মুক্ত করতে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বরিশালের বীর মুক্তিকামী জনতা।

বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’র একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে আলাপকালে তারা জানায়, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতিকে পাকিস্তানী পরাধীনতা থেকে মুক্ত করতে জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন তারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মুক্তিকামী জনতা শপথ নিয়ে ছিলেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে আনবে একটি স্বাধীন দেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে সাধারণ মানুষকে আন্দোলনের মধ্যে রাখার জন্য সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে প্রতিটি পাড়ায়, মহল্লায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্বাধীনতায় উজ্জীবিত করা সে সব গন-সংগীতে উদ্বেলিত হতো মানুষ। সে সব গানের মধ্যে গণ-সংগীত শিল্পী আবু আল সাঈদ নান্টুর ‘জয় স্বাধীন বাংলা’ গানটি সব সভার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠে।
২৫শে মার্চ রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষ গানটি ছিল ‘জয় স্বাধীন বাংলা’। গানটি শুরু হওয়ার সাথে সাথে সভায় মাইকে ঘোষণা করা হলো ঢাকা ক্রাক ডাউনের কথা। চারিদিকে শোরগোল পরে গেল। দিক-নির্দেশনা পেতে ব্যস্ত হয়ে উঠলো অনেকে। ততক্ষণে নগরীর বগুরা রোড কৃষি অফিস চত্বরের (বর্তমান) সমাবেশে উপস্থিত হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মঞ্জুর। তাকে দেখে আস্বস্ত হলেন বীর মুক্তিকামী জনতা। সেখানে আসেন এমপিএ আমির হোসেন আমু এমপি (বর্তমান), এডভোকেট হাসান ইমাম চৌধুরী, এডভোকেট হেমায়েত উদ্দিন আহমেদসহ তৎকালীন আওয়ামীলীগের প্রায় সব নেতা।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরো জানান, বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন থেকে অস্ত্র সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। গভীর রাতে বৈঠক শেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা কেন্দ্র সদর গার্লস স্কুল মাঠে আসার নির্দেশ দিলেন নুরুল ইসলাম মঞ্জু। সেখানেই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এরপর ২৫শে মার্চ রাত ৩টার দিকে বরিশাল পুলিশ লাইন অস্ত্রাগারে যান নুরুল ইসলাম মঞ্জু, আমির হোসেন আমু, আব্দুল বারেক, মহিউদ্দিন আহমেদ, জালাল সরদারসহ আরও অনেকে।

পুলিশের সহায়তায় একটি রুমে রক্ষিত ২৫টি রাইফেল এবং ২৫ প্যাকেট গুলি ছিনিয়ে আনেন তারা। ২৬শে মার্চ সরকারী বালিকা উচ্চ-বিদ্যালয় মাঠে প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের সূচনা কেন্দ্র।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি এনায়েত হোসেন চৌধুরী ও বিভাগীয় সেক্টর কমান্ডার ফোরামের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ কুমার ঘোষ পুতুল জানান, ২৬ মার্চ সকালে তৎকালীন পেশকার বাড়ির পুকুরে ওযু করে পবিত্র কুরআন ও গীতা শপথ করে পুলিশ লাইন থেকে অস্ত্র গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

তারা আরো জানান, সেদিন শপথ বাক্য পাঠ করানোর আগে কোন প্রস্তুতি ছিল না। শপথ বাক্যের মূল বিষয় ছিল, দেশকে শত্রু মুক্ত, একটি স্বাধীন দেশ গড়বো, এঅস্ত্র হাতে নিয়ে কোন অসৎ কাজ করবো না, বাংলাদশকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করবো। শুরু হলো সমর যুদ্ধের প্রস্তুতি।