• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

গোপালগঞ্জে ফের ইঁদুর মারা ফাঁদে প্রাণ গেল দুই কৃষকের : অর্থের বিনিময়ে সমঝোতার চেষ্টা


প্রকাশের সময় : মার্চ ২৪, ২০২৪, ১১:২৭ অপরাহ্ন / ৩০
গোপালগঞ্জে ফের ইঁদুর মারা ফাঁদে প্রাণ গেল দুই কৃষকের : অর্থের বিনিময়ে সমঝোতার চেষ্টা

কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ধানক্ষেতে অবৈধভাবে ইঁদুর মারার ফাঁদে ফের প্রাণ গেল দুই কৃষকের। শনিবার রাতে উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই দুই কৃষক হলেন, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মৃত বিশ্বম্বর বিশ্বাসের ছেলে সনাতন বিশ্বাস (৫৫) এবং একই গ্রামের মৃত মান্নান শেখের ছেলে কালু শেখ (৩০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের তাজের বিশ্বাস ও হারুন বিশ্বাস শনিবার রাতে তাদের ধানের জমিতে ইঁদুর মারার জন্য জিআই তারের সাথে বিদ্যুতের ফাঁদ দিয়ে রাখেন। ধান ক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন সনাতন বিশ্বাস ও কালু শেখ। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরিবারের লোকজন খুঁজতে গিয়ে দেখেন কৃষক তানজের বিশ্বাস ও হারুন শেখের জমিতে ইঁদুর মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদের জিআই তারে সনাতন বিশ্বাস ও কালু শেখ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত পড়ে রয়েছেন।পরে স্থানীয়রা তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ওই কৃষকদের বাড়িতে নিয়ে যায়।

ওই গ্রামের রাসেল শেখ বলেন, ইঁদুর মারার জন্য যদি কেউ বৈদ্যুতিক ফাঁদ দিলে আগে থেকে মাইকিং করে। ওই দুই কৃষক তাদের জমিতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ দিয়েছে সে বিষয় জানায়নি। তাদের অসচেতনতার জন্য আজ দুইজন কৃষকের জীবন গেল।

কাশিয়ানী থানার রামদিয়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল-মামুন গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, গত রাতে সনাতন বিশ্বাস ও কালু শেখ বিলের মধ্যে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে নিহত হয়েছে। তাদের মরদেহ স্বজনেরা ঘটনাস্থল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। তবে কার জমিতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ দিয়েছে বা কার বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ লাইন এনেছে তা এখনো জানা যায়নি।

নিজামকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রবিউল শেখের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইঁদুর মারা ফাঁদে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে দুই কৃষক মারা গেছেন তারা নিতান্তই গরীব। তাদের পরিবারের দিকে তাকিয়ে আপোষ-মীমাংসার কথাবার্তা চলছে।

এদিকে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ইঁদুর মারার ফাঁদ তৈরির কারণে গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষকেরা অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিবাদও করতে পারেন না নিহতের পরিবার। শুধু তাই নয়, অর্থ-বিত্ত না থাকায় রাষ্ট্রের কাছে বিচারও চাইতে পারে না ভুক্তভোগীর পরিবার। তাছাড়া কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের হস্তক্ষেপে সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে প্রাণহানির এ ঘটনাগুলো গোপনেই মীমাংসা হয় বলে জানা গেছে।

যারা অবৈধভাবে ইঁদুরের ফাঁদ তৈরি করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তাহলেই এই মৃত্যুর মিছিল রোধ করা সম্ভব বলে দাবী সচেতন মহলের।