• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

শর্ত ভেঙ্গে আগেই বসেছে পশুর হাট, নগরে ভোগান্তি


প্রকাশের সময় : জুলাই ১, ২০২২, ৪:২৪ পূর্বাহ্ন / ২৫৫
শর্ত ভেঙ্গে আগেই বসেছে পশুর হাট, নগরে ভোগান্তি

মোঃ রাসেল সরকারঃ আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামী ১০ জুলাই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এ হিসাবে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আগামী ৬ থেকে ১০ জুলাই পাঁচ দিন রাজধানীতে বসবে কোরবানির পশুহাট। তবে সময়ের বেশ বাকি থাকতেই সিটি করপোরেশনের বিধিনিষেধ ভেঙে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে বসে গেছে হাট। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত এলাকার বাইরেও পশুর খোঁয়াড় তৈরি করা হয়েছে। স্বাভাবিক যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে আশপাশের এলাকায় তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ইজারার শর্ত অনুযায়ী, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গায় পশুর হাট বসানোর কথা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৬ থেকে ১০ জুলাই বা ৭ থেকে ১১ জুলাই সেখানে পশুহাট বসবে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত জায়গার সীমা ছাড়িয়েও আশপাশে তৈরি করা হয়েছে পশু রাখার খোঁয়াড়।অনেক গরু-মহিষও ইতোমধ্যে হাটে তোলা হয়েছে। ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে এটা করেছেন ইজারাদার এএমএম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ।

স্থানীয়রা জানান, আব্দুল লতিফ শাহজাহানপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। সরকারি দলের প্রভাব দিয়ে তিনি ধরাকে সরাজ্ঞান করে এ কাজ করছেন। এর জন্য ভোগান্তিতে পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

তবে আব্দুল লতিফ দাবি করেন, এখনও তেমন পশু হাটে ওঠেনি। তিনি কেবল হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে থেকে প্রস্তুতি না নিলে ইজারাদারদের সমস্যা হয়। এ ছাড়া নির্ধারিত জায়গার বাইরে তিনি এখনও যাননি বলে দাবি করেন।

প্রায় একই কথা বলেন লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার পশুহাটের ইজারাদার মোহাম্মদ সোলাইমান সেলিম। তিনি ঢাকা-৭ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে। তিনি বলেন,পাঁচ দিনের জন্য হাট বসানোর নিয়ম থাকলেও আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। তিনি সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছেন।

ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত স্থানে পশুর হাট বসানোর কথা থাকলেও এর বাইরে ধূপখোলা মাঠ এলাকায়ও হাটের প্রস্তুতি নিয়েছেন ইজারাদার মো. আনোয়ার। বিশাল বিশাল তোরণ ও খোঁয়াড় তৈরি করে হাটের প্রস্তুতি জানান দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত এলাকার বাইরেও রাস্তার ওপর তৈরি করা হয়েছে বিশাল ফটক। এমনিতেই সর্বক্ষণ প্রায় যানজট লেগে থাকে ওই এলাকায়। এসব গেট-খোঁয়াড়ের কারণে তা নতুন মাত্রা পেয়েছে।

হাটের ইজারাদার মো. আনোয়ারের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব না হলেও তার সহযোগী ইকবাল হোসেন বলেন, হাটটা রাজধানীর সবচেয়ে বড় বলা যায়। এখানে প্রচুর পশু আসে। ক্রেতাও থাকে অনেক। এ জন্য একটু বড় ধরনের প্রস্তুতি তাদের নিতে হয়। সেই প্রস্তুতিই নেওয়া হচ্ছে।

প্রায় একই অবস্থা মোহাম্মদপুরের বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা-সংলগ্ন খালি জায়গার অবস্থা। ভাটারা সাইদনগর হাটে তো রীতিমতো পশু ওঠা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আফতাবনগরের ব্লক-ই থেকে এইচ পর্যন্ত হাটের চিত্রও অভিন্ন।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে এসব পশুর হাট বসার কারণে প্রতিবছরই তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এ নিয়ে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয় না।

এ প্রসঙ্গে হাট তদারকির মূল দায়িত্ব পালনকারী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, ঈদের দিন ছাড়া পূর্ববর্তী চার দিন মিলে পাঁচ দিন হাট বসানোর জন্য ইজারা দেওয়া হয়। এই ক’দিনের বাইরে হাট বসানোর সুযোগ নেই। দু-একদিন আগে কেউ যদি পশু আমদানিও করে তাহলে সে বিক্রি করতে পারবে না। এখন পশু বিক্রি করছে কিনা সেটা দেখতে হবে।

এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের বাইরে যদি হাট বসায় বা নির্ধারিত সীমানার বাইরে যদি হাটের বিস্তৃতি ঘটে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়ম ভঙ্গ করে হাট বসানো বা প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে যে অভিযোগগুলো এসেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।