• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ দিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নিতো তারা


প্রকাশের সময় : জুন ২১, ২০২২, ৯:১১ পূর্বাহ্ন / ১১৯
বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ দিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নিতো তারা

মোঃ রাসেল সরকারঃ বিষাক্ত পানীয় সেবন করিয়ে বা বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ দিয়ে সাধারণ মানুষ, পথচারী ও যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতো সর্বস্ব। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমনই সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতাসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব বলছে, ছিনতাইকারী এসব চক্র ঢাকার অন্তত ১৬টি স্থানে মানুষকে অজ্ঞান করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাতো। সুযোগ বুঝে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা পালিয়ে যেতো। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে অজ্ঞান ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (২০ জুন) গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা) পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বাড়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, পল্টন এবং মতিঝিল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে গ্রেফতার অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা হলেন- মো. রাজু (৩৫), মো. ফিরোজ হোসেন বাবু (২৮), মো. ওহিদ (৫৩), মো. আল আমিন হোসেন (৩০), মো. রাজু (৩৮), মো. শুকুর আলী (৩৫), মো. সিয়াম (১৯), মো. হাসনাত (১৯), মো. নুর আলম (২৫), মো. মনির হোসেন (৪২), মো. রকি (১৯), মো. তোফাজ্জল হোসেন (২৪), মো. রাসেল (২০), মো. রফিক (২০), পারভেজ (২২), মো. রিপন (২৪), মো. ফয়সাল (১৯) ও মো. খোকন (৩৮) গ্রেফতার করে।

এসময় গ্রেফতারদের কাছ থেকে দুটি সুইচ গিয়ার, তিনটি চাকু, একটি ক্ষুর, চারটি অ্যান্টিকাটার, একটি সিজার, একটি ব্লেড, ছয়টি বিষাক্ত মলম, চারটি মোবাইল এবং নগদ ৮ হজার ৭৬৯ টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতো। সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে ডাব, কোমলপানীয় বা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করতো। কখনোবা যাত্রীবেশে বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ওষুধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করতো। এছাড়া ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মুখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুঁড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নিতো তারা।

পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস জানান, সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠতো। রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, পল্টন মোড়, গোলাপ শাহ মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা যায়।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।