• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

বরগুনায় মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল : অপমানে মায়ের আত্মহত্যা


প্রকাশের সময় : মার্চ ১২, ২০২৩, ৮:৫২ অপরাহ্ন / ১৩৪
বরগুনায় মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল : অপমানে মায়ের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরগুনাঃ বরগুনার তালতলীতে মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় অপমানে ওই মেয়ের মা (৩৫) আত্মহত্যা করেছেন। উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার ৪ দিন পর মামলায় অভিযুক্ত বখাটে আসাদুলকে রোববার সকালে পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থেকে গ্রেফতার করেছে পটুয়াখালী র‌্যাব-৮ ক্যাম্পের সদস্যরা।

মেয়ের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৩) একই এলাকার সুলতান হাওলাদারের বখাটে ছেলে আসাদুল (২৫) বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করতেন। ওই মেয়ের নিজের ফোন না থাকায় আসাদুল ওই মেয়ের মায়ের মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা বলত। এক পর্যায়ে সে মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নগ্ন অবস্থায় ভিডিও কলে কথা বলে। আসাদুল মেয়ের অজান্তে এ নগ্ন ভিডিও রেকর্ড করে রাখে।

গত ৭ মার্চ মেয়ের মাকে ভিডিও দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে আসাদুল। ওই টাকা এক দিনের মধ্যে না দিলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন। একদিন অতিবাহিত হয়ে গেলে টাকা না পেয়ে নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন আসাদুল।

বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার সকালে জানাজানি হলে মা (৩৫) লজ্জায় আত্মহত্যার জন্য ব্যাটারির অ্যাসিড পানি পান করেন। তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বরিশালে ময়না তদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অষ্টম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী জানায়, আসাদুল আমাকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করে ফোনে কথা বলতে বাধ্য করে। নিরুপায় হয়ে এক সময় আমি তার সঙ্গে কথা বলি। পরে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে নগ্ন ভিডিও কলে কথা বলাতে বাধ্য করে। সেই ভিডিওটি রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে আমার মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় আসাদুল। এ লজ্জায় আমার মা আত্মহত্যা করেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার না পেলে আমিও আত্মহত্যা করব।

মেয়ের বাবা বলেন, আমি ঢাকার ইপিজেডে চাকরি করি। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আসার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুলকে আসামি করে রোববার সকালে তালতলী থানায় মামলা করেছি।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অ্যাসিড পানে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত আসাদুলকে আসামি করে তালতলী থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর রোববার সকালে মেয়ের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পটুয়াখালীর র‌্যাব-৮এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি তুহিন রেজা জানান, অভিযুক্ত আসাদুলকে রোববার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।