• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায় ডিআইজি হাবিবের প্রচেষ্টায় পেল নতুন ৪টি ঘর


প্রকাশের সময় : জুলাই ২৮, ২০২২, ১২:৪১ অপরাহ্ন / ১২২
পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায় ডিআইজি হাবিবের প্রচেষ্টায় পেল নতুন ৪টি ঘর

মোঃ রাসেল সরকারঃ পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়ের গৃহহীন লোকদের জন্য সাভারে অবস্থিত ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের উদ্যোগে নির্মিত উত্তরণপল্লীতে নতুন আরো ৪টি ঘর হস্তান্তর করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি।

বুধবার দুপুরে উত্তরণ ফাউন্ডেশনের সার্বিক সহায়তায় ও পাকিজা গ্রুপের অর্থায়নে সাভার সদর ইউনিয়নের বংশী নদীর পাড়ে উত্তরণপল্লীতে এই চারটি নবনির্মিত দুর্যোগ সহনীয় ঘর লটারির মাধম্যে চারজন গৃহহীন বেদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এ সময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর আগে এই পল্লিতে ৫০টি ঘর দেওয়া হয়েছে। আজ পাকিজা গ্রুপের অর্থায়নে আরও ৪টি ঘর প্রদান করা হলো।

এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নতুন করে আরও ৩৫টি ঘরের বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ সময় তিনি ডিআইজি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বেদে সম্প্রদায়ের ঠিকানার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান উপস্থিত বলেন, এই জায়গাটি অনেক নিচু ছিল আমরা এখানে প্রায় দুই কোটি টাকার মাটি ফেলেছি। এরমধ্যে আপনাদের অনেকের সহযোগিতা রয়েছে, যেমন আমাদের মন্ত্রী মহোদয়ও ৩০ লাখ টাকা দিয়েছেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও আমি এই কাজটি শুরু করেছি কিন্তু এর কৃতিত্ব সকলের। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের এখানকার সংসদ সদস্য ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের।

তিনি বলেন, এর বাইরেও মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এবং সিরাজদীখানে ২৫টি ঘর আমি আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে করে দিয়েছি। মানিকগঞ্জের হরিরামপুরেও ১৬৩টি বেদে পরিবার বসবাস করেন। তাদের কবরস্থান নেই, সেখানেও আমাদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে আমি জায়গা কিনে কবরস্থান করে দিয়েছি। একই সঙ্গে মসজিদের জন্য জায়গা কিনে দিয়েছি।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী যে ২৬ হাজার ঘর প্রদান উদ্ভোধন করেছেন তার মধ্যে আমার সুপারিশে বেদে সম্প্রদায়ের গৃহহীনদের মাঝে বরিশাল বাবুগঞ্জ জেলা ও ঝিনাইদহ কালিগঞ্জ জেলায় ৭১টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ ও শেরপুরসহ আরো কয়েকটি জেলার জন্য আমি সুপারিশ করবো মন্ত্রণালয়ে।

ডিআইজি বলেন, আপনারা প্রশ্ন করবেন দেশের সব জায়গায় তো প্রশাসন রয়েছে। তাহলে তারা কেন পায়না, নাকি তাদের কে দিচ্ছেনা? আসলে তা নয় এই সম্প্রদায়ের লোকেরা তারা নিজেদেরকে ছোটজাত মনে করেন। তারা যে এই সরকার এবং এই দেশেরই মানুষ সেটি তারা নিজেরা বুঝেননা। এজন্য ঘরের জন্য বা নাগরিক সুবিধার জন্য যে ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত যেতে হবে সেটিই তারা সাহস পায়না। সেই সচেতনতা টুকুও তাদের মাঝে নেই আর সেটিই তাদের বড় সমস্যা।

তিনি বলেন, আমরা সাভার থেকেই সেই আন্দোলন শুরু করেছি। এখানে তাদের জন্য কারিগরি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। তারা সেখানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ নানা ট্রেনিং নেয়। আমাদের এখানে একটা ছোটখাটো ইন্ডাস্ট্রিও র‍য়েছে। যেখানে তারা প্রশিক্ষণ এবং কাজ করছেন। এখানে উপস্থিত পাকিজা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের অংশগ্রহণ আমাদের জন্য অলংকৃত করেছে। তিনি আমাদেরকে সামগ্রিক সহযোগীতা করার কথা দিয়েছেন।

বেদেদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমি বলতে চাই আপনারা কেওই ছোটজাতের নন এদেশে। এদেশের যিনি স্বাধীনতা এনেছিলেন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনি সংবিধান দিয়েছেন। সেখানে স্পষ্ট ভাবে লেখা আছে দেশের সকল মানুষ সমান। সুতরাং ডিআইজি হিসেবে আমি যতটুকু আপনিও ততটুকু এক্ষেত্রে কারো সাথে কোন পার্থক্য করবেন না।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম, সাভার পৌর মেয়র আব্দুল গণি, পাকিজা গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।