নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণই হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক, সব পদদলিত করে দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাব, এটিই আমার প্রতিজ্ঞা।
রোববার (২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি উদযাপন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিসহ রাজনীতিকরা অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ। এটা হঠাৎ করে আসে না। সুষ্ঠু পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। আশু করণীয়, মধ্য মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছি। সুর্নিদিষ্ট লক্ষ্য স্থির করেছি। যার ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ২০০৮-এর নির্বাচনে আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছিলাম। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করেছি। জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি বাস্তবায়ন করেছি, এসডিজি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ২০২১ সাল পেরিয়ে এসেছি, আজকে ২০২২। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি।
জলবায়ু সংকটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু অভিঘাতে যাতে দেশের মানুষের সমস্যা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে উন্নয়নের গতিধারাটা অব্যাহত রাখার জন্য ডেল্টা প্ল্যান-১০০ প্রণয়ন করে, সেটাও বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবই। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের স্বীকৃতি এই স্বপ্ন বাস্তবায়নকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, চলার পথ যত অন্ধকারাচ্ছন্নই হোক না কেন, যত বন্ধুর হোক না কেন, যত কণ্টকাকীর্ণই হোক, সেখানে আমরা থেমে থাকব না। অন্তত আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি, থেমে থাকব না।
মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ কবিতার কয়েকটি লাইন উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি, অনেক বুলেট বোমা গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমি কখনো সেগুলোর পরোয়া করি না। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। যারা আমার সহযোগী, আমার সঙ্গে কাজ করেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রসঙ্গত গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করে। পরে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইসিওএসওসি) এ সুপারিশ সমর্থন করে। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়।
আপনার মতামত লিখুন :