• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:১৪ অপরাহ্ন

ঢাকায় ঢুকতে তল্লাশিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ-যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৯, ২০২২, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন / ১১২
ঢাকায় ঢুকতে তল্লাশিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ-যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ

মোঃ রাসেল সরকার,ঢাকাঃ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার টঙ্গী, গাবতলী, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে ঢাকামুখী দূরপাল্লার যানবাহন গুলোতে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশির সময় যানবাহন থেকে নামিয়ে অনেককে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য চেকপোস্টে তল্লাশি কার্যক্রম চালায়।

বিএনপির পক্ষে থেকে অভিযোগ করে বলা হচ্ছে চেক পোস্ট বসিয়ে তাদের দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। একই সাথে সাধারন মানুষকে নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডিসি মো. ফারুক হোসেন বলেন, রাজধানীর সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ যানবাহনে তল্লাশি করছে। কাউকে হয়রানি বা রাজধানীতে ঢুকতে না দেয়া পুলিশের উদ্দেশ্য নয়। নগরবাসির নিরাপত্তার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আমিনবাজার ব্রিজ পার হয়ে ঢাকার প্রবেশ মুখে গাবতলী এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল থামিয়ে চালক ও যাত্রীদের নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ সদস্যরা। যাত্রীদের কাছে ঢাকায় আসার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির দারুস সালাম থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, গাবতলী এলাকার চেকপোস্ট অনেক আগে থেকেই। রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টে ঢাকায় আসা গাড়িকে অনেক সময় তল্লাশি করা হয়ে থাকে। তবে বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে চেকপোস্টে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিন্ধিরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ৭-৮ জন পুলিশ সদস্য। কোনো যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা কোনো পথচারী বড় কোনো ব্যাগ-বস্তা নিয়ে আসতে দেখলেই তাদের গতিরোধ করছেন। এ সময় দেহ তল্লাশি থেকে শুরু করে তাদের সঙ্গে থাকা মুঠোফোন ও ব্যাগ তল্লাশি করা হচ্ছে। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদে কারও কথায় কোনো প্রকার সন্দেহ হলেই তাদের পথ আটকে দিচ্ছেন।

একটি মোটরসাইকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর হয়ে রাজধানীর বনানিতে যাচ্ছিলেন মো. আলমগীর ও তার বন্ধু সাখাওয়াত নামের দুইজন। কাঁচপুর সেতুর সামনে আসতেই যথারীতি তাদের গতিরোধ করে পুলিশ। প্রথমে তাদের দুজনেরই দেহ তল্লাশি করা হয়। পরে ব্যাগ ও মুঠোফোনে থাকা বিভিন্ন ছবি, বার্তা যাচাই করে দেখেছেন। এ সময় তাঁদের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে করে তাঁদের আটকে রাখা হয়। পরে প্রায় এক ঘণ্টা পর অনেক কাকুতিমিনতি করে ছাড়া পান তারা।

জানতে চাইলে সাখাওয়াত অভিযোগ করে বলেন, তার বনানীর একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরির ইন্টারভিউতি দিতে যাচ্ছেন। এ জন্য বন্ধুকে নিয়ে বনানীতে যাচ্ছে ছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের বিএনপির লোক বা নাশকতা করতে পারেন, এমন সন্দেহ করে আটকে রাখে। পরে অনেক অনুরোধ করে ছাড়া পান। সাখাওয়াত বলেন, আমি সাধারণ মানুষ। কোনো দলের রাজনীতি করি না। তারপরও পুলিশ আমাদের এভাবে হয়রানী করল কেন??

রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব বিশ্বরোড এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কথা হয় লেগুনা চালক মো. তোফায়েল এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ডেমরা ব্রিজের ওদিকে একটি চেকপোস্ট আছে। সেখানে দুপুরের দিকে পুলিশ আমাদের থামিয়ে যাত্রীদের নানা প্রশ্ন করেছে। কে, কোথায় যাচ্ছে জানতে চাওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, ঢাকার প্রবেশমুখী মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ৫টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এসব চেকপোস্টে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের খোঁজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা রোধে তল্লাশি করা হচ্ছে।