• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রোগ্রেসিভ স্টার সোসাইটির পরিচালক আব্দুস সামাদ’র বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অভিযোগের পাহাড়


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৪, ২০২২, ৯:৫৬ অপরাহ্ন / ১০৭
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রোগ্রেসিভ স্টার সোসাইটির পরিচালক আব্দুস সামাদ’র বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অভিযোগের পাহাড়

এস এম রুবেল, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি বাজারে অবস্থিত বেসরকারি এনজিও সংস্থা প্রোগ্রেসিভ স্টার সোসাইটি। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সামাদ তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানান কৌশলে হয়রানী, ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাকুরী’র নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ব্যক্তিস্বার্থে মামলা ও প্রতারনা করার অভিযোগ করেন সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী মাঠকর্মী। এছাড়াও কয়েকজন ঋণী সদস্যর নিকট হতে মাটিসহ বাড়ি -লিখে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এছাড়াও এনজিওর অর্থ প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে দোতলা আলিশান বাড়ি বানিয়েছে এবং সেই বাড়িতেই প্রধান কার্যলয় তৈরি করেছেন আব্দুস সামাদ।

প্রতারনার শিকার ভুক্তভোগীরা হলো, সদর উপজেলার লালাপাড়া গ্রামের মৃত মনিরুল ইসলামের ছেলে নেফাউল করিম নাদিম, সাবেক-লাভাঙ্গা গ্রামের সাদিকুলের ছেলে আবু সায়েম, নয়ালাভাঙ্গা গ্রামের তাজেমুল হকের ছেলে ইব্রাহিম আলী, শিবগঞ্জ পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের গোপালনগর মহল্লার মোজাহার শেখের ছেলে বিপুল আলী সহ একাধিক কর্মচারী কর্মকর্তা।

প্রোগ্রেসিভ স্টার সোসাইটি নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সামাদ চাকুরীতে নিয়োগের সময় কর্মীদের প্রধান শর্ত দিয়ে থাকেন জমানত ও ফাঁকা স্বাক্ষরিত ব্যাংক চেক প্রদান। আর কর্মীদের বলে চেক না দিলে চাকুরী থাকবে না বলেও বিভিন্ন সময় হুমকি প্রদান করেন। এছাড়াও ৫০০০০/-(পঞ্চাশ) হাজার টাকার বিনিয়োগ প্রদান বিপরীতে জামানত বাবদ ঋণ গ্রহীতারন সদস্যর নিকট হতে ফাঁকা স্বাক্ষরিত ব্যাংক চেক গ্রহণ করে বলে জানা যায়।

ভুক্তভোগীদের তথ্য সুত্রে জানা যায়, চাকুরীতে যোগদানের কিছুদিন পর কোন দোষ-ত্রুটি ছাড়াই বিনা কারনে নোটিশ বা ছাড়পত্র না দিয়ে ও অফিসিয়াল হিসাব পত্র বুঝিয়ে না নিয়েই তাদেরকে চাকুরী হতে অসৎ উদ্দেশ্যে অব্যাহতি দেন। তারা চাকুরি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তার কাছে জমাকৃত চেক এবং জামানতের নগদ টাকা বুঝিয়ে চাইলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আব্দুস সামাদ বলেন, তোমাদের চেক ও জমাকৃত টাকা কয়েকদিন পরে ফেরত দিবো বলে কালক্ষেপণ করে টালবাহানা করতে থাকেন।

তারপর বেশ কিছু দিন পরেই তার কাছে থাকা জমাকৃত ফাঁকা চেকের মাধ্যমে তার ইচ্ছেমত টাকা লিখে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এসব বিষয়ে তার কাছে ভুক্তভোগীরা জানতে চাইলে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক তাদের উপর বিভিন্ন রকম হুমকি, ধামকি, ভয়ভীতি, শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করেন। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন তার নির্যাতনের শিকার হয়ে পরিবার নিয়ে আমরা সবাই অতি দুঃখ কষ্টে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছি। এই মিথ্যা বানোয়াট মামলার নির্যাতন থেকে মুক্তি চায়। এবং আমাদের জমাকৃত ফাঁকা চেক ও নগদ অর্থ ফেরত চায়।

ভুক্তভোগী আবু সায়েম বলেন, ২০১৭ সালে শিবগঞ্জ শাখায় সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে ২০ হাজার টাকা ও ফাঁকা চেক জমা দিয়ে নিয়োগ পত্র গ্রহন করে যোগদান করি। চাকুরি চলাকালীন সময় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পরিকল্পিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির অভিযোগ আনেন নির্বাহী পরিচালক।

আবু সায়েম আরও বলেন, আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে তার বাড়িতে আটকিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং ৩ (তিন) লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে নির্বাহী পরিচালক বলেন ফাঁকা চেকের উপর মোটা অংকের টাকার পরিমাণ বসিয়ে মামলার ভয় ও জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

আরেক ভুক্তভোগী নাদিম বলেন আমাকে বিগত ০৫/০৯/২০১৭ সালে ২০ হাজার টাকা জামানত ও ফাঁকা চেক জমা নিয়ে নিয়োগ দেন পরিচালক আব্দুস সামাদ।

অতঃপর চাকুরী চলাকালীন সময় ২৬/০৯/২০১৯ সালে আমাকে হঠাৎ করে এক সপ্তাহ ছুটি দেন। এক সপ্তাহ পর চাকুরিতে জয়েন্ট করতে গেলে তিনি বলেন তোমাকে চাকুরী থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। কি কারণে অব্যহতি দিলেন এবং চেক, জামানতের টাকা ফেরত ও বেতন চাইলে খারাপ ব্যবহার করে অফিস হতে তাড়িয়ে দেন। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় উল্টো আমার কাছে টাকার জন্য চাপ ও হুমকি ধামকি দেন।

এক পর্যায়ে ০১/০২/২০২১ সালে আমার বিরুদ্ধে আমের ব্যবসায় টাকা নিয়েছি বলে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যে মামলা আদালতে চলমান আছে। এতে করে আমি আর্থিক ও মানুষিক ভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত। বর্তমানে আমি পরিবার নিয়ে অসহায় ভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছি। একই কথা বলেন ভুক্তভোগী ইব্রাহিম আলি, মোঃ বিপুল আলীসহ আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী।

এ বিষয়ে প্রোগ্রেসিভ স্টার সোসাইটি (পিএসএস) এনজিওর নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সামাদের নিকট বক্তব্য নেয়ার জন্য রানিহাটী বাজারের প্রধান কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে সাংবাদিক দেখে তিনি সটকে পড়েন। এমনকি মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।