• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:১৯ অপরাহ্ন

এবার মামলার জট কমাতে শ্রম আদালত বাড়াচ্ছে সরকার


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ১৩, ২০২১, ৪:৫৪ অপরাহ্ন / ২০৪
এবার মামলার জট কমাতে শ্রম আদালত বাড়াচ্ছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বেতন-ভাতা আদায়, চাকরিতে পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে শ্রম আদালতগুলোতে মামলা করেন শ্রমজীবীরা। এসব মামলায় শুনানির জন্য তারিখ ধার্য হয় বছরে তিন-চারবার। নানা কারণে বিচার ঝুলে থাকে বছরের পর বছর। আর দীর্ঘসূত্রিতার জন্য শ্রম আদালতের সংখ্যা কম হওয়াকেই দায়ী করেন অনেকে।

সাতটি শ্রম আদালতে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে বিচার কাজ। এখন আদালতের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে তিনটি নতুন আদালত গঠন করা হয়েছে। আরও সাতটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। আদালতগুলোতে প্রায় ২৫ হাজার মামলা বিচারাধীন বলেও জানা গেছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ক্ষতিপূরণ, চাকরিতে পুনর্বহাল কিংবা পাওনা আদায় ও ট্রেড ইউনিয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনায় শ্রমিকরা মামলা করেন এসব আদালতে। এসব আদালতের প্রধান বিচারককে বলা হয় চেয়ারম্যান। যিনি জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক। মামলার সিদ্ধান্ত দেওয়ার দিন অতিরিক্ত আরও দুজন সদস্য বা বিচারক থাকেন এজলাসে। সেখানে দুপক্ষই আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা পরিচালনা করেন।

শ্রম আদালতে মামলা করার ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে। তবে উপযুক্ত কারণ ব্যাখ্যা করে আরও ৯০ দিন করে সময় বাড়ানো যায়। এ আদালত গুলোতে নিষ্পত্তি হওয়া মামলা গুলোর ক্ষেত্রে ঢাকায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যায়।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ দিন অল্প আদালত দিয়ে বিচার পরিচালনার কারণে জট লেগে যায়। এজন্য সরকার আরও ১০টি শ্রম আদালত গঠন করতে চলেছে। সিলেট, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে একটি করে আদালত গঠন করা হয়। নতুন তিন আদালতে জনবল নিয়োগের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে। সিলেট শ্রম আদালতের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ হয়েছে।

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় শ্রম আদালত গুলোর পদ তৈরি, যানবাহন ও অফিস সরঞ্জামাদি টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্তকরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সম্মতি পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সচিব কমিটিতে সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় শ্রম আদালতের জন্য পদসৃজন, যানবাহন ও অফিস সরঞ্জাম টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্তকরণে অর্থবিভাগ থেকে চাওয়া তথ্য গত এপ্রিলে পাঠানো হয়। তখন অর্থ বিভাগ থেকে ফরিদপুর এলাকার মামলা গুলো বিদ্যমান শ্রম আদালতে সার্কিট বেঞ্চের মাধ্যমে নিষ্পত্তির অনুরোধ করা হয়। এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগসহ, দিনাজপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, পাবনা ও নোয়াখালী জেলায় নতুন সাতটি প্রস্তাবিত শ্রম আদালত গঠনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৩০ জুনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মামলার তথ্যসহ মতামত দেওয়ার জন্য শ্রম আপিল ট্রাইবুন্যালে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

৩০ জুন মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- সিলেট, বরিশাল ও রংপুরে নবগঠিত তিনটি শ্রম আদালতের কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিতে হবে। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও ফরিদপুর জেলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের সম্মতির পর নতুন চারটি শ্রম আদালত স্থাপনের বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম নিতে হবে। ময়মনসিংহ বিভাগসহ পুরাতন জেলা শহরে নতুন আদালত গঠনের কার্যক্রম গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৈঠকে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আদালত অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ আহম্মেদ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ২৪-২৫ হাজার মামলা শ্রম আদালতগুলোতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। নতুন আদালতগুলোর কার্যক্রম চালু ও করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে মামলা নিস্পত্তিতে গতি বাড়বে।