• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন

চলন্ত ট্রেনে অপরাধীদের দাপট বাড়ছে ছিনতাই ও মৃত্যুর ঘটনা


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ১:৫০ অপরাহ্ন / ৫৭০
চলন্ত ট্রেনে অপরাধীদের দাপট বাড়ছে ছিনতাই ও মৃত্যুর ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চলন্ত ট্রেনে অপরাধীদের দাপট বাড়ছে। আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। প্রচণ্ড ভিড়ে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকারীদের ছিনতাইকারীরা ধাক্কা ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার ঘটনাও অহরহ ঘটছে। ইদানিং ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনে ছিনতাইকারীর তৎপরতা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে রাতের যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা। প্রায় প্রতিদিনই একাধিক ট্রেনযাত্রী ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। অতিসম্প্রতি টঙ্গী ও বিমানবন্দর স্টেশনে চলন্ত ট্রেনে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া একাধিক যাত্রী জানান, কয়েকজন যুবক চলন্ত ট্রেনে উঠে যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে তাদের মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। প্রতিরোধের চেষ্টা করলে এক যাত্রীকে মারধরও করা হয়। ভুক্তভোগী যাত্রী এবং রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সারা দেশে চলাচলকারী আন্তনগর ও মেইল ট্রেনগুলোতে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। কখনো ছদ্মবেশে যাত্রী সেজে, আবার কখনো দলবেঁধে হঠাৎ চড়াও হয়ে যাত্রীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। চেতনানাশক স্প্রে বা ইনজেকশন ব্যবহার করে অজ্ঞান করে মালামাল লুট করে নেয়ার ঘটনাও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ছিনতাইকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কামরাগুলো টার্গেট করে অভিযান চালায়। দিন দিন ওই ছিনতাইকারী চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

সূত্র জানায়, চলন্ত ট্রেনের ছাদে ছিনতাইকারীর সাথে ধস্তাধস্তির সময় গত ১১ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে রেজাউল করিম নামে এক যাত্রীকে ফেলে দেয়া হয়। পরদিন মুকুন্দপুর রেললাইনের পাশ থেকে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ। তাছাড়া গত ১৬ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে মো. আমিনুর ইসলাম নামে এক যুবককে ফেলে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সমপ্রতি রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে আফতাব আহমেদ (২০) নামের এক তরুণকে ছিনতাইকারীরা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। যদিও রেলওয়ে পুলিশের দাবি, ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে চক্রটি অত্যন্ত সুসংগঠিত এবং বেপরোয়া। তারা চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ উঠে অপরাধ সংঘটন করে দ্রুতই পালিয়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি যাত্রীরা সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না দেয়ায় ব্যবস্থা নেয়া যায় না।

এদিকে এ প্রসঙ্গে ঢাকা জেলার রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেন কেন্দ্রিক ছিনতাই প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। স্টেশনের পাশাপাশি ট্রেনেও পোশাকধারী পুলিশ পাহারা দেয়। সাদা পোশাকেও রেলওয়ে পুলিশ থাকে। অতিসম্প্রতি দুজন ছিনতাইকারী ধরা পড়েছে।

অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, সামপ্রতিক সময়ে অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।