• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশের প্রযোজক ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীরের পিতা


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৬, ২০২১, ৯:৫১ অপরাহ্ন / ২৫০
বাংলাদেশের প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশের প্রযোজক ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীরের পিতা

মনিরুজ্জামান অপূর্ব,ঢাকা: দুদু মিয়া কন্ট্রাক্টর নামেই তিনি পরিচিত। ভালো নাম কলিম উদ্দিন আহমেদ। তিনিই প্রথম “মুখ ও মুখোশ” চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য টাকা দিয়েছিলেন আবদুল জব্বার খানকে।নেপথ্যের এই মানুষটির নাম সামনে আসে স্বয়ং আবদুল জব্বার খান এর মুখ থেকেই।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি’র সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে জবাবে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আবদুল জব্বার খান বলেন তাঁর কথা বলেছিলেন “তিনি টাকা দিয়েছিলেন বলেই মুখ ও মুখোশ ছবিটির নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়েছিল ।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কে এই দুদু মিয়া কন্ট্রাক্টর। আবদুল জব্বার খানও কন্ট্রাক্টর ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নাটকও করতেন। কিন্তু, সে সময়ের খ্যাতিমান কন্ট্রাক্টর কলিম উদ্দিন আহমেদ বা দুদু মিয়া কখনো নাটকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন কথা শোনা যায়নি। এ বিষয়ে তার কোন আগ্রহও দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে উনার ছেলে প্রখ্যাত নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক আলমগীর বলেছিলেন, কথাটা শুনে আমিও বিস্মিত হয়েছিলাম ।তিনি এ বিষয়ে তাঁর বাবাকে জিজ্ঞেস করলে, কলিম উদ্দিন আহমেদ তা স্বীকার করেন।

কেন দিয়েছিলেন, এ বিষয়টি জানতেও চেয়েছিলেন। নায়ক আলমগীর বলেছিলেন, আব্বা শুধু বললেন, একজনের কথায় দিয়েছিলেন, যার কথা তিনি কখনও ফেলতে পারতেন না।” সেই মানুষটি কে, সেটা কলিম উদ্দিন আহমেদ বলেননি।

একটু অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেল, কলকাতায় একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহবান করলে দুদু মিয়া কন্ট্রাক্টর লভ্যাংশের স্থানে ০% দিয়েছিলেন। এটা বিস্মিত করেছিলো শের এ বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং সে সময়ের উদীয়মান এবং অবিসংবাদিত নেতা, সংগঠক, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে।

তাঁরা দুদু মিয়া কন্ট্রাক্টরকে ডেকে পাঠান এবং কথা বলেন। উনার কথায় সকলেই সন্তুষ্ট হন। অত্যন্ত যত্নে, সততার সঙ্গে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন দুদু মিয়া। তখন থেকেই সবার সঙ্গে উনার সুসম্পর্ক বিরাজমান ছিলো। বিশেষ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর সংগে। এ বিষয়ে নায়ক আলমগীর আরও বলেছিলেন,আব্বা এ বিষয়ে তেমন কিছু না বললেও, একদিন আমি উনাকে ড্রপ করতে গিয়ছিলাম তেজগাঁও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ।

আব্বা যখন ভেতর দিকে যাচ্ছিলেন, তখন ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমি গাড়িতেই ছিলাম। সেখান থেকেই দেখলাম দুজন দুজনকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনের মধ্যেই ছিলো উচ্ছাস। আব্বার জন্ম ১৯০০ সালে। বয়সে ২০ বছরের বড়ো। তবুও পরস্পর পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার কোন কমতি আমার মনে হয়নি।এইসব ঘটনার আলোকে সহজেই বুঝে নেয়া যায় যে, যার কথায় কলিম উদ্দিন আহমেদ ছবি বানাতে টাকা দিয়েছিলেন, যার কথা তিনি কখনো ফেলতে পারতেন না, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

কৈফিয়তঃ কলিম উদ্দিন আহমেদ দুদু মিয়ার কোন ছবি কোথাও পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আলমগীর ভাইকে জানালে, তিনি বাসায় দু’তিনটা ছবির কথা জানান এবং দেবার বিষয়েও আগ্রহী ছিলেন।

কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে উনার কাছ থেকে ছবি সংগ্রহ করা আমার সম্ভব হয়নি। তথ্য সহায়তাঃ আবদুল জব্বার খান এর বক্তৃতা, এম এ আলমগীর (নায়ক আলমগীর), সে সময়ের দৈনিক আজাদ ও সাপ্তাহিক চিত্রালী ।