• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন

সুদানে লুটপাট-নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরেছেন তারা


প্রকাশের সময় : মে ১০, ২০২৩, ১:২৫ অপরাহ্ন / ৩৮
সুদানে লুটপাট-নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরেছেন তারা

এম রাসেল সরকারঃ সংঘাতপূর্ণ সুদানে আটকে পড়া ১৩৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন সোমবার (৮ মে)। উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে সংঘাত শুরু হওয়ার পর ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশিদের। অনেকটা মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন অনেকেই। আর বেশিরভাগই সেখানে লুটপাট-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দেশে ফিরে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন সুদানফেরত বাংলাদেশিরা।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাসসহ দারিদ্র্যপীড়িত দেশটিতে ১৫ এপ্রিল সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এরপর থেকে একাধিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হলেও তা মানেনি কোনও পক্ষই। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত শত শত মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এসব ঘটনায় দেশটির মানবিক সংকট নতুন করে সামনে এসেছে। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে সুদান ছেড়ে পালিয়েছে ১০ লাখের বেশি মানুষ।

সুদানে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৭০০ জন দেশটি থেকে চলে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে। পরে দূতাবাস ও সৌদি আরবের সহযোগিতায় সুদান থেকে জেদ্দায় নিয়ে আসা হয় ১৩৬ বাংলাদেশিকে। পরে তাদের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

২০১৬ সালে ‍সুদান গিয়েছিলেন এরশাদুল। তিনি বলেন, ‘সারাক্ষণ বোমা আর গুলির আওয়াজ শুনতাম। ভয় হতো, কখন বোমা আমাদের বাসায় এসে পড়ে। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। দূতাবাসের উদ্যোগে সৌদি আরবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বলা যায় না খেয়েই ছিলাম। ঘরে পানি নাই, গ্যাস নাই; কী রান্না করবো। আর বাইরে তো যাওয়ার কোনও পরিস্থিতি ছিল না।’

ঘরের মধ্যে আটকে থেকেও নিরাপদ ছিলেন না এই প্রবাসী। তিনি বলেন, ‘ডাকাতরা গুলি করে আমাদের সব নিয়ে গেছে। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। যারা ডাকাতি করেছে, তারা সুদানের নাগরিক। কিন্তু মুখোশ পরা ছিল, তাই বোঝা যাচ্ছিল না তারা কারা।’

মো. রাকিবও সুদান থেকে ফিরেছেন। তিনিও বর্ণনা করেছেন ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা। মো. রাকিব বলেন, ‘আমরা খারাপ অবস্থায় ছিলাম। খাবার ও পানি না থাকায় অনেক কষ্ট হয়েছে। সারাক্ষণ শুধু আতঙ্ক, এই বুঝি বোমা হামলায় মারা গেলাম। আমাদের আশপাশের অনেক ভবনে বোমা হামলা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। মানুষের ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন দেহ পড়ে থাকতে দেখেছি।’

সুদানে ইলেকট্রিক কাজ করতেন আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাসার কাছেই বেসামরিক ফোর্সের ক্যাম্প ছিল। আমাদের আশপাশে প্রচুর গোলাগুলির আওয়াজ শুনতাম। আমরা দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরেই ছিলাম।’

আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘চারপাশে প্রচুর লুটপাট হয়েছে। ঘরে ঘরে ঢুকে মালামাল লুট করে নিয়ে যেতো। এক কাপড়ে কোনোরকম চলে এসেছি।’