• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

করোনায় বাড়ছে হতাশা ও আত্মহত্যা : নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা


প্রকাশের সময় : জুলাই ১১, ২০২১, ১:০৪ পূর্বাহ্ন / ২১৪
করোনায় বাড়ছে হতাশা ও আত্মহত্যা : নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা

আয়েশা সিদ্দিকী, ঢাকাঃ করোনায় বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা। দিন দিন তারা আর্থিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় জেঁকে বসেছে হতাশা। শিক্ষা, চাকরি ও আর্থিকসহ সব ক্ষেত্রে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। অভাব ঘরে হানা দেয়ায় কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ যখন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন তুচ্ছ কারণেও আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়েন। দীর্ঘদিন এক রকম জীবনযাপন করতে করতে মানুষ একটা সময় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ফলে সব বয়সী মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। করোনার এই কঠিন সময়ে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পারিবারিক সাপোর্ট। কেউ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে পরিবারের উচিৎ তাকে সার্বক্ষণিক চোখে চোখে রাখা এবং হতাশা কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করা। গত সপ্তাহে সাতক্ষীরায় একজন করোনা রোগী চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন। এর আগে একজন করোনা রোগী একটি হাসপাতালের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান। গত ৫ই জুলাই আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় লজ্জায় ফ্যানের সঙ্গে কাপড় জড়িয়ে আত্মহত্যা করে রাজধানীর বাসাবোর এক স্কুলছাত্রী।

তরুণদের সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত এক বছরে সারা দেশে আত্মহত্যা করেছে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী-পুরুষ। পারিবারিক জটিলতা, সম্পর্কের অবনতি, শিক্ষা জীবন নিয়ে হতাশা, আর্থিক সংকট এসব আত্মহত্যার মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মাহাফুজা খানম বলেন, করোনার কারণে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না। অনেকেই চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই আজ নিঃস্ব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় মন বসছে না যুব সমাজের। এতে করে ছাত্রদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে ভবিষ্যত নিয়ে। একদিকে চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষা নিয়ে অনিশ্চিয়তা সৃষ্টি হয়েছে। কবে করোনামুক্ত হবে দেশ। কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কেউ বলতে পারছে না।

আগে ছাত্রদের লেখাপড়ার জন্য যে এনার্জি লস হতো এখন তো আর তা হচ্ছে না। এতে করে তারা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। তাদের মধ্যে মেন্টাল স্ট্রেস তৈরি হচ্ছে। এ কারণে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হলে মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করে বাঁচবো কি বাঁচবো না এই ভাবনায়। অনেকে এই ভয়টা মানসিকভাবে নিতে পারছে না। এ কারণে তারা আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। আমি মনে করি বর্তমান অবস্থায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পরিবারের মেন্টাল সাপোর্ট। পিতা-মাতাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে তাদের সন্তান এই অলস সময়ে এখন আসলে তারা কি কাজকর্ম করছে। তাদের ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে পরিবারের মধ্যে। সরকারকে আরো সাপোর্ট বাড়াতে হবে মানুষকে আর্থিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে।