• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

শেখ হাসিনার স্বপ্নের আশ্রায়ন প্রকল্প দুর্নীতিবাজদের দ্বারা ভূলন্ঠিত


প্রকাশের সময় : জুলাই ৮, ২০২১, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন / ২৮১
শেখ হাসিনার স্বপ্নের আশ্রায়ন প্রকল্প দুর্নীতিবাজদের দ্বারা ভূলন্ঠিত

বাংলাদেশে সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুল আলোচিত আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়ম নিয়ে চলছে তোলপাড়৷ এরইমধ্যে পাঁচজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে৷ কাজ করছে তদন্ত কমিটি৷ আরো অনেক কর্মকর্তা শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন৷ কিন্তু ঘর দেয়ার আগে ও পরে নানা ধরনের অনিয়মের খবর প্রকাশ হয়৷ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই অনিয়মের অভিযোগ করা হলেও তখন এটা নিয়ে তেমন কোন কর্মকর্তা আমলে নেয় নাই। কিন্ত হঠাৎই দেশের কয়েকটি স্থানে ঘর ধ্বসে পড়ে। গোপালগঞ্জে হস্তান্তরের পর অল্প সময়ের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে দুইটি ঘর৷ বেশিরভাগ ঘরগুলো নিচু জায়গা খালের পাড়ে খাস জমিতে নির্মিত হওয়ায় ঘরগুলো এখন ভাঙ্গনের সম্মুখীন৷ বিশেষজ্ঞ দের মতে নির্মিত ঘরের গুণগত মান ঠিক নেই৷ এতো অল্প সময়ে বালু ফেলে ঘরগুলো নির্মান করা ঠিক হয় নাই।

দেশের অনেক জায়গায় ডিজাইন বহির্ভূত ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন,নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এই অবস্থা৷ আর এগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনায়ই নির্মাণ করা হয়েছে৷ আবার এইসব ঘর বরাদ্দের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ গৃহহীনদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে৷
এই ঘর দেয়ার আগে ও পরে নানা ধরনের অনিয়মের খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হয়৷ তখন কেন আমলে নেওয়া হয় নাই? এই ঘরগুলো নির্মাণের জন্য কোনো ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়নি৷ সরাসরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে৷ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরসরি বাস্তবায়ন করা হয়েছে৷ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামন গণমাধ্যমে দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি মনে করেন এই প্রকল্পের “মনিটরিং ব্যবস্থা ঠিক থাকলে শুরুতেই এই অনিয়ম ঠেকানো যেত৷ ঠিকাদারেরা নন সরাসরি সরকারি কর্মকর্তারা করেছেন বলে এখানে অনিয়ম ও দুর্নীতি আরো বেশি দুঃখজনক৷

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই ঘরগুলোর সাথে আবেগ জড়িত৷ মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে গৃহহীনদের ঘরগুলো দেয়া হয়েছে৷ তাই শুধু ওএসডি করে বিষয়টি এড়ানো যাবে না৷ যারা এই অনিয়মের সাথে জড়িতদের আইনে আওতায় আনতে হবে৷ দুদকেরও এটা দেখা উচিত৷”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এপর্যন্ত ২২ জেলার ৩৬ উপজেলায় ঘর তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে৷ আরো অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে ৷ অনিয়মের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে সাবেক ইউএনও (বর্তমানে উপসচিব) শফিকুল ইসলাম, বগুড়ার শেরপুরের সাবেক ইউএনও মো. লিয়াকত আলী শেখ (বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক), মুন্সীগঞ্জ সদরের সাবেক ইউএনও রুবায়েত হায়াত, বরগুনার আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান ও মুন্সীগঞ্জ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিনকে ওএসডি করা হয়েছে৷

আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমে বলেছেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ আর যেসব ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তা মেরামত করে দেয়া হচেছ৷ আর এটা নিয়ে যে অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে তা দুঃখজনক৷ প্রধানমন্ত্রী নিজ উদ্যোগে গরীব মানুষদের এই ঘরগুলো দিয়েছেন৷
এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত জানুয়ারি এবং জুন মাসে এক লাখ ১৮ হাজার ৩৮০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়৷ এরইমধ্যে দেশের কয়েকটি এলাকা থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবে রুপ দিতেই মুজিব বর্ষে সারা দেশে গৃহায়ণ আশ্রয় প্রকল্প গুলো সরকারের নিজের হাতে রেখে নির্মান হয়। ঘরগুলো ধ্বসে পড়ার কারনে বিভিন্ন দপ্তরে চলছে তোল পাড়। দায়িত্ব কে নিবেন এই অনিয়মের।
দেশের বিপুল ভূমিহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল নির্মানের দুর্নীতি, অবেহেলার জন্য প্রায়১৪৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে৷
কিন্তু কেন এমন হলো? শেখ হাসিনার স্বপ্ন এই দেশের আমলারা গুরুত্বহীন ভাবে কেন দেখলো? একটি আবাসস্থল, গরীবের ঘর নিয়ে তামাশা করলো?
এরকম কি তাদের কাছে কাম্য ছিলো? । একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বিসিএস পাশ করেও নিচু মানষিকতার পরিচয় দিলো সামান্য গরীবের জন্য আশ্রয়স্থলে।
তারা এখন নিজেদের দোষ ঢাকতে মরিয়া হয়ে তদবির করছে। কিন্তু সেটা কি আর হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবেগের জায়গা এই ঘর। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের ঘর আশ্রায়ন প্রকল্প।
এই ঘর গুল যখন নির্মাণ করা হবে শুরুতে হয়তো তারা তেমন গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে নাই। ঠিকাদার দুর্নীতি করে তাই তারা নিজেরাই এই কাজগুলো করেছে। একটি নির্মান কাজের ভবিষ্যৎ হতে হবে। কমপক্ষে ২০ বা ৪০ বছর এটা স্থায়িত্ব হতে হবে।
কিন্তু এই আশ্রায়ন প্রকল্প গুলো উপর দিয়ে রং করে চাক চিক্ক করে হস্তান্তর কারর কিছু দিনের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নানা রকম সমস্যা।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো ও গোপালগঞ্জের আশ্রয়ন প্রকল্পগুল সরেজমিনে ঘুরে বুঝতে বাকি থাকে না কি হয়েছে এই ঘরগুলো নিয়ে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের আশ্রায়ন প্রকল্প দুর্নীতিবাজ দের দ্বারা ভূলন্ঠিত হলো। দুর্নিতীবাজ দের কবলে পরে ভবিষ্যতে এই আশ্রায়ন প্রকল্প নিয়ে যেনো কোন বেদনাদায়ক ঘটনা না ঘটে। শেখ হাসিনার স্বপ্ন যেনো আর ভূলন্ঠিত না হয়।

ইলিয়াস হক

দপ্তর সম্পাদক

জেলা আওয়ামী লীগ, গোপালগঞ্জ ও সম্পাদক গোপালগঞ্জ সংবাদ।