• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন

রিকশাচালকের জমিও রেহাই পায় না বকশীগঞ্জের নজরুল ইসলাম ইদুর হাত থেকে


প্রকাশের সময় : মে ৮, ২০২৪, ৭:৩১ অপরাহ্ন / ৪২৯
রিকশাচালকের জমিও রেহাই পায় না বকশীগঞ্জের নজরুল ইসলাম ইদুর হাত থেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুরঃ পেশায় ছিলেন বর্তমান জামালপুর-১ আসনের সংসদ সদস্যের গাড়ির চালক। নিজেকে এমপির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজের এক বলয়। ২০১৩ সালে গাড়ি চালানো ছেড়ে হয়ে যান এমপির ছোট ভাই বর্তমান বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম সাত্তারের ডান হাত। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এখন নজর নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের দিকে। একজন গাড়ি চালক থেকে রাতারাতি নেতা বনে যাওয়া ও ক্ষমতার এক বিশাল বলয় তৈরী করা নিয়ে বিস্ময়ের শেষ নাই স্থানীয় মানুষজন ও নেতাকর্মীদের মাঝে। বিগত কয়েক বছরে সাত্তার চেয়ারম্যানকে সামনে রেখে গ্রাম্য বিচার-সালিশ করে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পত্তি।

জমি সংক্রান্ত কোনো বিচার আসলেই জমির কাগজ হাতে নিয়ে শুরু করেন নানা টালবাহানা। নজরুল ইসলাম ইদুর ক্ষমতার মুখে জমি বেহাত হয়েছে একজন রিকশাচালকের।

ভুক্তভোগী রিকশা চালকের নাম নূর ইসলাম। তিনি জানান, জমির দখল নিয়ে অনেকদিন মামলা চলার পর মামলা তুলে নেয় প্রতিপক্ষ এরপর জমির কাগজ আসে নজরুল ইসলাম ইদুর হাতে। অভিযোগ আছে এরপরেই নিজের নামে ভুয়া দলিল করে রিক্সা চালক নুরু ইসলামের জমি দখল করে নজরুল ইসলাম ইদু। বিক্রি করে দেন জমির উপরে থাকা বাঁশ ঝাড়।

বিষয়টি নিয়ে নুরু ইসলাম যান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইদুর শেল্টারদাতা তৎকালীন নিলাক্ষিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তারের কাছে।

নূর ইসলাম জানান, জমির কাগজ দেখতে অস্বীকৃতি জানায় সাত্তার এবং বলে দেন, এই জমি তুমি পাবে না।

একই বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের দ্বারস্ত হন ভুক্তভোগী। এ সময় সংসদ সদস্য তাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।

পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা করেন নুরু ইসলাম। কিন্তু এইখানেও বাধে বিপত্তি। ইদুর প্রভাবে বাঁশ ঝাড় সম্পর্কিত মামলায় হেরে যান তিনি।

নুরু ইসলামের আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দুটি মামলা বিচারাধীন একটি ভুয়া দলিল অন্যটি পুনরায় জমির দখল পাওয়া। যদি রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার না করেন তবে নুরু ইসলামের ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব।

স্থানীয় আরো একজন ভুক্তভোগী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বহুদিন আগে জমির দাগ নিয়ে বিবাদে সালিশ করেন সাত্তার। সালিশে সিদ্ধান্ত দেন তিনি নিজে জমি মেপে দেখবেন। এর পর শুরু হয় টাল বাহানা। আজ না কাল করতে করতে কেটে চায় বছর। দখলকারীরা এরইমধ্যে জমিতে ঘত তুলে ফেলেন।

ভুক্তভোগী জানান, এ বিষয়ে বিচার চাইতে গেলে রেগে যায় সাত্তার।

ওই ভুক্তভোগী বলেন, সাত্তার সাবেক আমাকে বলেন, মানুষের জমি পাহারা দেয়া তার কাজ না।

জমির দখল হারানো ভুক্তভোগী এখন বিচারের আশায় ঘুরছেন আদালতে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কাজ ও ব্যবসার প্রয়োজনে যারা বকশীগঞ্জ উপজেলার বাইরে থাকেন, তাদের জমিকে লক্ষ্যবস্তু বানান অভিযুক্তরা।

এ বিষয়ে জানতে নজরুল ইসলাম ইদুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা। এমন কোনো ঘটনা নাই। আমি দুইটা রায় পেয়েছি।

স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিজের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তার ক্ষমতা বলে নিজের বলয় তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমপিই হইছে কয়দিন?’

একই বিষয়ে নজরুল ইসলাম সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।