• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন

রাজাকারপুত্রের হাতেই নৌকার বৈঠা : ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন / ১৪৮
রাজাকারপুত্রের হাতেই নৌকার বৈঠা : ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ

ঢাকা : চাঁদপুরের হাইমচরে শেষ পর্যন্ত রাজাকার পুত্রের হাতে নৌকার বৈঠা। এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারাও। আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে হাইমচর উপজেলার চার ইউনিয়নের সঙ্গে হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের সঙ্গে এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জুলফিকার আলী জুলহাস সরকারকে নৌকা প্রতীক মনোনয়ন দেওয়া হয়। আর তখন থেকেই ক্ষোভ আর অসন্তোষের আগুন জ্বলতে শুরু করে। কারণ, যাকে নৌকার বৈঠা হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে- তার বাবা জলিল সরকার এলাকার একজন চিহ্নিত রাজাকার। শুধু তাই নয়, চাচা হামিদ সরকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

এদিকে, জুলফিকার আলী জুলহাস সরকারের নৌকা প্রতীক ফিরিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা ও হাইমচর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী এবং বিতর্কিত পরিবারের সন্তানকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক তুলে দেওয়ায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, হাইমচর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সন্তোষ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, এই বিষয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তারা প্রমাণপত্রসহ লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

এরই মধ্যে গত রবিবার রাতে পঞ্চম ধাপে চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলার তিন উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের তালিক প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। এতে হাইমচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রত্যাশা ছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত পরিবারে সন্তান জুলফিকার আলী জুলহাস সরকারের দলীয় প্রার্থীতা বাতিল করে নতুন করে কারো নাম ঘোষণা করা হবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা না হওয়ায় তাদের মাঝে ক্ষোভ আর অসন্তোষের আগুন জ্বলতে শুরু করে।

হাইমচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছানাউল্লাহ সরকার বলেন, এমন ব্যক্তিকে নৌকার প্রার্থী করায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এখন বেশ বিব্রত। সাধারণ সম্পাদক ওসমান প্রধানিয়া বলেন, এটা কি করে সম্ভব হলো। আমার এখন সাধারণ মানুষের কাছে কোন মুখে ভোট চাইব।

ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, এই ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও রহস্যজনক কারণে এমন একজন ব্যক্তিকে নৌকা তুলে দেওয়া হয়েছে, এটি আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়।

সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন গাজী বলেন, বিগত ২০১৩ সালে হাইমচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদও বাগিয়ে নেন জুলফিকার আলী জুলহাস সরকার। তবে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংগঠনের বাইরে গিয়ে বিতর্কিত ভূমিকা পালন করায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি।

এর আগে গত শনিবার হাইমচর ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, চতুর্থ ধাপে হাইমচরের চারটি ইউনিয়ন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হবে। এতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হচ্ছে আগামী ৯ ডিসেম্বর। তবে এর আগেই গত ২৩ নভেম্বর হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক পান জুলফিকার আলী জুলহাস সরকার।