• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নারী ব্যবসা টেকাতে র‍্যাব ১০ এর গ্রেফতার মিশন


প্রকাশের সময় : জুন ১১, ২০২১, ৮:৩২ অপরাহ্ন / ৪০০
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নারী ব্যবসা টেকাতে র‍্যাব ১০ এর গ্রেফতার মিশন

মেহেদী হাসান,ঢাকাঃ মানবাধিকারকর্মী আলমগির সেলিমকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারে এক গোপন মিশনে নেমেছে র‍্যাব-১০ এর কিছু অসাধু অফিসার। গত বুধবার র‍্যাব-১০ এর ওই টিম রাজধানির যাত্রাবাড়ীর ‘এইচ এর এইচ এফ’ মানবাধিকার সংস্থার যাত্রাবাড়ী কার্যালয় থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।

ব্যাপক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংস্থাটির মহাসচিব হিসেবে দীর্ঘ দিন যাবত দায়িত্ব পালন করে আসছে আলমগির সেলিম। দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে অনেক ভুমিকা পালন করে আসছে সংস্থাটি। বিভিন্ন স্থানে নারী পাচারকারীদের খপ্পরে পড়া অনেক ভিকটিমকেও জনস্বার্থে সংস্থার পক্ষে মামলা দিয়ে উদ্ধারে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। দেশের পতিতাপল্লি, আবাসিক হোটেল ও বহিরাগত রাষ্ট্রে জিম্মি থাকা বহু নারীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতেও অনেক ভুমিকা পালন করে আলমগির। এসকল বিষয়ে সংস্থাটি বেশ কয়েকটি মানব পাচার আইনে মামলার পরিচালনা করছে আলমগির সেলিম। গত কয়েক মাস ধরে যাত্রাবাড়ী এলাকায় নারী ব্যবসায়িরা বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল চালু করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নারীদের জিম্মি করে অনৈতিক কার্যকলাপ করে আসছে রিপন, হানিফ, রুবেল, কবির, সামসুদ্দিন, সামসু, হান্নানসহ বেশ কিছু নারী ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে আলমগির বিরোধিতা করে একাধিকবার যাত্রাবাড়ী থানাকে তথ্য দিয়ে পুলিশকে অভিযান করার সহায়তা করে। এরই মধ্যে নারী ব্যবসায়ীদের মধ্যে দুইটি আলাদা আলাদা সিন্ডিকেট হয়। সায়দাবাদ এলাকায় ইউসুফ রিপন ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় হানিফ নিয়ন্ত্রন করে নারী ব্যবসা। রিপনের নিয়ন্ত্রণাধীন সায়দাবাদ এলাকায় সাবেক শুকতারা বর্তমান হোটেল হলিডে আবাসিক হোটেলে দেধারছে চলছে নারী ব্যবসা। তার ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ঢাল হিসেবে র‍্যাব ১০ এর অসাধু কিছু অফিসারদের ম্যানেজ করে শুধুমাত্র যাত্রাবাড়ী এলাকার দুইটি আবাসিক হোটেলগুলোতে র‍্যাবের অভিযান চালিয়ে কয়েকটি মানবপাচার আইনে মামলা দেয়া হয়। তবে প্রকৃত মালিকদের রাখা হয় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জানা গেছে, সায়দাবাদ এলাকায় বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলের গোপন মালিকানায় রয়েছে র‍্যাব ১০ এ থাকা কয়েজন পুলিশ সদস্য। এদিকে মানবাধিকারকর্মী আলমগির যাত্রাবাড়ী এলাকার সকল নারী ব্যবসা চলা আবাসিক হোটেল বন্ধের বিষয়ে থানা পুলিশকে চাপ দিলে পুলিশ বিভিন্ন সময় পুলিশি অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়াও অনৈতিক কার্যকলাপ চলা হোটেলের সাথে র‍্যাবের কয়েকজনের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি জেনে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে র‍্যাব ১০ এর ওই সকল অফিসার আলমগিরকে হটাতে নেমে পড়েন নারী ব্যবসার কোটি টাকার মিশনে।
বেশ কয়েকদিন আগে ইউসুফ রিপন নামের এক হোটেল ব্যবসায়িকে দিয়ে র‍্যাব ১০ একটি মিথ্যা মামলা দেয়ায় যাত্রাবাড়ী থানায়। ঐ মামলায় প্রথমে নাজমুল নামের এক সাংবাদিককে কয়েকদিন আগে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে থানায় সোপর্দ করে র্যা ব। গত বুধবার ১০জুন রাতে আলমগিরকে যাত্রাবাড়ী মানবাধিকারের একটি অফিস থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় র্যা ব। মানবাধিকার কর্মী আলমগির পেশায় একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে র‍্যাব ১০ একটি মিথ্যা চাদাবাজি মামলা দেয়ায়। মামলা নং মামলা নং ১০৫ তারিখ ৩০/০৫/২১।
এদিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে মিথ্যা মামলার বাদি বানানোর রহস্যের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড এসেছে প্রতিবেদকের হাতে।
সেখানে মিথ্যা মামলার বাদি রিপন ও ভুক্তভোগী মানবাধিকারকর্মী আলমগিরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হচ্ছিল।
রিপন জানায়, তাকে মামলার ৩দিন আগেই র‍্যাব ১০ যাত্রাবাড়ী একটি খাবার হোটেল থেকে তুলে নিয়ে যায় রিপনকে। আলমগিরের জন্য প্রায় ১০টা ফাইল রেডি করেছে র্যা ব। রিপন মিথ্যা মামলার বাদি হতে না চাইলে তাকে মারধর করাসহ আতকে ওঠার মত বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক মামলার বাদি বানিয়েছে র্যা ব ১০। রিপন জানায়, তাকে র‍্যাবের একটি কক্ষে বসিয়ে সামনে একটি ইদুর রেখে র‍্যাব একটি সুইচ চাপ দেয়ার সাথে সাথেই ইদুরটি মারা গেছে। এমন করেই একটি সুইচে চাপ দিলেই রিপন মারা যাবে। এমন আরও অনেক ধরনের ভয়ভীতি দেখায় র্যা ব। পরে ভয় পেয়ে র‍্যাবের শিখানো কথামতই রিপন মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলার বাদি হয়।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, রিপনও দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় নারী ব্যবসার সাথে জড়িত। রিপনের নিয়ন্ত্রনাধিন হোটেল হলি ডে থেকে প্রতি মাসে র‍্যাব গোপনে মাসোয়ারা নিয়ে আসছে। এবং এই হোটেলের সাথে জড়িত রয়েছে র‍্যাবের একাধিক পুলিশ সদস্য।