• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১২:১৪ অপরাহ্ন

যুবলীগ নেতা নাহানের আবেগঘন প্রতিবাদ


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৮, ২০২৩, ৯:২৪ অপরাহ্ন / ৮৯
যুবলীগ নেতা নাহানের আবেগঘন প্রতিবাদ

প্রিয় গণমাধ্যমের বন্ধুগণ, সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা। শোকের মাস চলছে। তাই সর্বপূর্বে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট একাত্তরের পরাজিত শক্তির বুলেটের আঘাতে শাহাদত বরণকারী, স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ভয়াল সেই রাতে শহিদ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।

সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, সম্প্রতি আমাকে কেন্দ্র করে পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক, ভুয়া, বানোয়াট এবং বাস্তবে প্রমাণযোগ্য নয়; এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করে দু-একটি অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ আকারে একটি লেখা উপস্থাপন করা হয়েছে। যদিও আমি বিশ্বাস করি, এ ধরনের বস্তুনিষ্ঠহীন লেখা সাধারণ জনগণের নিকট আস্থাশীল নয়। যদিও আমি নিজেও এটিকে “কার্যকর” ইসু হিসেবে মনে করি না- তবুও মিথ্যা হলেও প্রকাশিত ওই সংবাদ নামক লেখায় সরাসরি আমাকে যুক্ত করে যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়েছে; তার প্রতিবাদ করা রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে মনে করি। লেখাটি পড়ে আমি অনুধাবন করেছি, রাজশাহীর স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আমাকে সুপরিকল্পিতভাবে হেওপ্রতিপন্ন করার লক্ষ্যেই একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাংবাদিকতার নামে নিজস্ব ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে এহেন ঘৃণ ও নোংরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

প্রিয় গণমাধ্যমের বন্ধুগণ, লেখাটির প্রথমাংশে শোকাবহ আগস্ট মাস ও আমার কক্সবাজারের একটি ছবি নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে, তা পুরোপুরি অযৌক্তিক! কারণ, আমি ভ্রমণ, আনন্দ বা বিনোদনের লক্ষ্যে কক্সবাজার বা সমুদ্র সৈকতে যাইনি। যদি তাই হতো, তবে অবশ্যই সেখানে আমার সপ্তাহব্যাপী হোটেল বুকিং, আমার বন্ধু, পরিবার-পরিজন আমার সঙ্গে উপস্থিত থাকতেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, কক্সবাজারে যাওয়ার পেছনের কারণ কোনভাবেই বিনোদন নয়; বরং ব্যবসার সাথে যুক্ত কিছু কাজ; যা আমার কাছের রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিগণ পরিষ্কারভাবে অবগত। ব্যবসার কাজ শেষ করে সৈকত হয়ে ফেরার পথে আমার পূর্ব পরিচিত কিছু মানুষদের সঙ্গে দেখা হলে একপ্রকার তাদের অনুরোধেই আমি সাময়িক সময়ের জন্য সমুদ্রে যেতে বাধ্য হই। এটি অত্যন্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ ঘটনা প্রবাহগুলো রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সবার কাছেই অত্যন্ত স্বাভাবিক হলেও ওই কুচক্রী মহল এটিকে শোকের মাসের সঙ্গে যুক্ত করে যে গুরুতর বিতর্কের সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলেন, তার নিপথ্যের কারণ ওই দিনই সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। যার কারণে এই ইস্যু নিয়ে আমাকে কোথাও জবাবদিহি করার প্রয়োজন পড়েনি। সুতরাং বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার; সংবাদে উপস্থাপিত লেখা এবং তার পেছনের কাহিনী দুটো দু’রকম। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, রাজশাহীর সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মীরা সেটি নিজস্ব বিবেকে অনুধাবন করেছেন এবং করবেন।

বন্ধুগণ, আমার এ স্টেটমেন্ট সমুদ্র সৈকত নিয়ে জন্ম দেয়া বিতর্কের প্রতিবাদের জন্য নয়। কারণ সকলেরই জানা, শিক্ষিত কোন মানুষ এই ইস্যুটি গ্রহণ করবেন না। লেখাটি এই ছোট মানসিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কখনোই আমি গণমাধ্যমের কাছে এ ধরনের স্টেটমেন্ট প্রদান করতাম না। করতে বাধ্য হচ্ছি কারণ, ভুয়া ওই লেখা শুধুমাত্র চলমান ঘটনায় সীমাবদ্ধ থাকেনি।

সেই লেখার নিম্নাংশে এমন কয়েকটি বিষয়ে মন্তব্য করা হয়েছে, যা আমার মতো মানুষের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক! সেখানে দাবি করা হয়েছে, আমি সালিশের নামে নাকি সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ আদায় করি। এছাড়াও ভূমি দখল, মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতার মতো জঘন্য কর্মকা-মূলক বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শুধু অভিযুক্তই করা হয়নি, সরাসরি আমাকে দোষী অ্যাখ্যায়িত করা হয়েছে। সংবাদ নামক ওই লেখায় আমার নৈতিক স্খলন ঘটিয়ে যা বলা হয়েছে, তার প্রমাণ স্বরুপ কোন সুস্পস্ট ব্যাখ্যা, কার্যকর কারো বক্তব্য, বা স্বাক্ষী উপস্থাপনের মতো কোন কিছুই লেখায় উল্লেখ করা হয়নি। যা এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বাদ্ধতামূলক। আমি মনে করি, সামাজিকভাবে বিষয়গুলো বেশ স্পর্শকাতর! সঠিক ও যথাযথ প্রমাণ বা তথ্য-উপাত্ত ব্যতিত কারো নামে সরাসরি এমন সংবাদ বা লেখা যেকোন প্লাটফর্মে প্রকাশ আইন, সামাজিকতা, নৈতিকতা ও বস্তুনিষ্ঠতা পরিপন্থি।

আমি রাজশাহীর সকল সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মীদের সবিনয়ে আহ্বান জানাচ্ছি – আপনারা যেকোন সময় আমার এলাকায় আসুন, খোঁজ নিন। যদি কোনভাবে প্রমাণ হয়, আমি শালিসের নামে অর্থ আদায় করি, কারও জমি জোরপূর্বক দখলের সঙ্গে যুক্ত আছি, বা কোনপ্রকার মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা করার পেছনে আমার সম্পর্ক আছে, তবে আপনারা যা সংবাদ পরিবেশন করবেন তা আমি সবিনয়ের সঙ্গে গ্রহণ করবো। আমি রাজশাহীর সিনিয়র সাংবাদিক ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনারা সমাজের দর্পণ। রাজশাহীর সাংবাদিকতা চর্চায় আপনাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য অধিক বলে মনে করি। সুতরাং এ ধরনের মন গড়া সংবাদের নামে লেখা প্রকাশ এবং কারও আত্মসম্মানকে হেয় করা পবিত্র সাংবাদিকতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

আমি এই এলাকারই সন্তান। এই এলাকার একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আপনাদের কাছে দাবি জানাই, যদি তথ্য প্রমাণসহ আমার চলার পথে কোনপ্রকার বিচ্যুতি পান, তবে অবশ্যই সংবাদ প্রকাশ করুন। কিন্তু তথ্য প্রমাণ ছাড়াই যারা শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সংবাদ প্রকাশের নামে নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়, সম্মানিত ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল ও সম্মানহানি করার ষড়যন্ত্র করে; রাজশাহীতে সুষ্ঠু ধারায় সাংবাদিকতা চর্চা ও গণমাধ্যমের প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা অক্ষুন্ন রাখতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সিনিয়র ব্যক্তিত্ব হিসেবে আপনাদের নৈতিক পেশাগত দায়িত্ব বলে বিশ্বাস করি। পরিশেষে আমি আমার নামে প্রকাশিত ওই সংবাদ নামক মনগড়া লেখার প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আমার পুরো বক্তব্য বিবেচনায় নিতে রাজশাহীর মূল ধারার সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

নাহিদ আক্তার নাহান
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক
রাজশাহী মহানগর যুবলীগ