• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

বিআরটিসি : উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আছে ঢাকা ট্রাক ডিপো


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৩১, ২০২৪, ১:৩৫ অপরাহ্ন / ৮২
বিআরটিসি : উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আছে ঢাকা ট্রাক ডিপো

এম শিমুল খান, ঢাকাঃ বিআরটিসি’র মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে পরিবহন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সরকারি ভাবে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সুগম করার জন্য ১৯৭২ সালে বিআরটিসি ঢাকা ট্রাক ডিপোটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ডিপো প্রতিষ্ঠার পূর্ব হতেই প্রশাসনিক ভবন, ইয়ার্ড, শেড, স্টোর রুম ছিল। কালের পরিক্রমায় ডিপোর শেড, প্রশাসনিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে, ইয়ার্ড নিচু হয়ে যাওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে যেতো, নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সর্বদা পানি জমে থেকে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যেতো। ট্রাকের মেরামত কাজ করার মতো কোনো জায়গা না থাকায় ট্রাক বাইরে মেরামত করা হতো। অফিস কক্ষ গুলো ছিল জরাজীর্ণ, নোংরা ও দুর্গন্ধময়। এক কথায় ঝুঁকিপূর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল।

বিআরটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত এ ডিপো লসে পরিচালিত হচ্ছিল এবং স্থাপনা, কর্মপরিবেশের কোন ধরনের
উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়নি। বিআরটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম গত ০৭-০২- ২০২১ইং তারিখ বিআরটিসিতে যোগদানের পর তিনি আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন ও সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে বিআরটিসিকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। সে নির্দেশনা অনুযায়ী উদ্বুদ্ধ ও অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করা হয়।

বিআরটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামের সততা, প্রজ্ঞা মেধা, দক্ষতা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং ঢাকা ট্রাক ডিপোর ইউনিট প্রধানের নিরলস পরিশ্রম ও সহযোদ্ধাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মাত্র ৩ বছরে ঢাকা ট্রাক ডিপোর আমূল পরিবর্তন হয়ে সামগ্রিক ভাবে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।

বিআরটিসি’র বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম যোগদানের পর ২০২১-২০২২ ও ২০২২- ২০২৩ ইং অর্থ বছরে ডিপোর নিচু জলাবদ্ধ ইয়ার্ডটি বালু ভরাট করে উচু করা হয় ও আরসিসি ঢালাই করা হয়। উপ ব্যবস্থাপকের (কারিগরি) দপ্তর সংস্কার করা হয়, আধুনিক শেড তৈরি করা হয়, ডিপোর বাউন্ডারি দেয়াল দেয়া হয়, ট্রাফিক শাখা, বিল শাখা, প্রশাসন শাখার দপ্তর, ওয়াশরুম, স্টোররুম, হিসাব শাখার দপ্তর সংস্কার করে আধুনিকায়ন করে কর্ম পরিবেশে উন্নত করা হয়। ডিপোর গেট ও প্রশাসনিক ভবন দৃষ্টিনন্দন করা হয়। এর ফলে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মনোবল দৃঢ় ও কর্মস্পৃহা বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরটিসির কর্মকর্তা কর্মচারীদের যথাসময়ে অফিসে আগমন ও প্রস্থান নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বিআরটিসির ট্রাক সমূহের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেকটি ট্রাকে ভিটিএস সংযোজন করা হয়েছে। ট্রাক পরিচালনায় যথাযথ ভাবে রাজস্ব আদায় করার জন্য চালু করা হয়েছে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট। নুতন/পুরাতন যন্ত্রাংশ ও মালামালের সঠিক হিসাব রাখার জন্য চালু করা হয়েছে স্টোর ম্যানেজমেন্ট। সমস্ত দুর্নীতিমুক্ত বিআরটিসি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা ট্রাক ডিপোসহ সমস্ত বিআরটিসিকে সিসি ক্যামেরার আওয়তায় আনা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ল্যাপটপ/মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রত্যেক কর্মকর্তা/কর্মচারীর কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে থাকেন।

২০২১ সালের পূর্বে বিআরটিসির ঢাকা ট্রাক ডিপো লসে পরিচালিত হওয়ায় যথা সময়ে বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হতো না। পূর্বে সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি ও ছুটি নগদায়নের টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া সাপেক্ষে পরিশোধ করা হত। যার ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আর্থিক দুর্ভোগ এ পড়তেন। বর্তমানে প্রধান কার্যালয়সহ ঢাকা ট্রাক ডিপোর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা নিজস্ব আয় হতে প্রতিমাসের ১ তারিখে পরিশোধ করা হচ্ছে। ৩ মাস অন্তর অন্তর গ্র্যাচুইটি সিপিএফ ও ছুটি নগদায়নের টাকা অনলাইনে পরিশোধ করা হয়। শ্রান্তি বিনোদনের ১৫ দিনের ছুটিসহ ১ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম প্রথম বারের মতো চালু করেন। ফলে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আর্থিক দুর্ভোগ না থাকায় তাদের কাজের উৎসাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম যোগদানের পর পূর্বের ট্রাক বহর দ্বারা, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে আয় হয়েছে ৪৮.১৭ কোটি টাকা আর ব্যয় হয়েছে ৩৯.৯৯ কোটি টাকা, লাভ হয়েছে ৮.১৮ কোটি, বেতন-ভাতা ৭.৬২ কোটি টাকা। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে আয় হয়েছ ৫৯.৮৭ কোটি আর ব্যয় হয়েছে ৪৯.১২ কোটি টাকা (জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেশি হয়), লাভ হয়েছে ১০,৭৫ কোটি টাকা, বেতন-ভাতা ৮.৬৪ কোটি টাকা, অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয় ৪৯.০৩ লাখ টাকার। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে আয় হয়েছে ৭৬.২৫ কোটি টাকা আর ব্যয় হয়েছে ৬৪.১১ কোটি টাকা (জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেশি হয়), লাভ হয়েছে ১২.১৪ কোটি টাকা, বেতন-ভাতা ৮.৯৮ কোটি টাকা, অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয় ১.১৯ কোটি টাকার। বর্তমানে ঢাকা ট্রাক ডিপোর সকল ব্যয় পরিশোধ করার পরেও ৯.৮৪ কোটি টাকা রিজার্ভ রয়েছে।

বিআরটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামের সততা, দক্ষতা, সাহসী ভূমিকা ও সঠিক দিকনির্দেশনা এবং আশরাফুল আলম, (ডিজিএম) এর নিরলস পরিশ্রম ও সহযোদ্ধাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন ও সেবার মান উন্নয়ন-এ স্লোগানকে সামনে রেখে কাজ করার ফলে, জরাজীর্ণ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সার্বিক ভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়েছে।