• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১২:১৩ অপরাহ্ন

ঢাকা-১৯ স্বতন্ত্রপ্রার্থীর কার্যালয়ে হামলা, নৌকার সমর্থক গ্রেফতার


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩, ৫:০৪ অপরাহ্ন / ৬৮
ঢাকা-১৯ স্বতন্ত্রপ্রার্থীর কার্যালয়ে হামলা, নৌকার সমর্থক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভারঃ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনে (সাভার-আশুলিয়া) স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ তৌহিদ জং মুরাদের অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় (ক্যাম্প) এ হামলা, ভাংচুর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের দুই সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে পৌর এলাকার দিলখুশাবাগ এবং মজিদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাংলাদেশ হকার্স লীগ সাভার উপজেলা শাখার কোষাধক্ষ্য মো: রিপন মিয়া ও সাভার পৌর হকার্স লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম। তারা উভয়ে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের সমর্থক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন।
মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের মজিদপুর ও সাভার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় (ক্যাম্প) এ হামলা ও ভাংচুর করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের (নৌকা) সমর্থক রিপন মিয়া ও নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রসহ ওই কার্যালয়ে হামলা চালায়। এই ঘটনায় তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের পক্ষের পৃথক দুই স্থানের অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয়ের কর্মী-সমর্থকরা আহত হয়। এ সময় ভাংচুরের পাশাপাশি এলাকায় সাধারণ ভোটারদেরও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে হামলাকারীরা। এই ঘটনায় মুরাদ জংয়ের সমর্থক আব্দুল কাদির মোল্লা বাদী হয়ে কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন।

সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, রিপন মিয়া ও নজরুল ইসলাম এজাহারভূক্ত আসামী। তাদের গ্রেফতারের পর শুক্রবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এদিকে পৃথক আরেকটি ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ তৌহিদ জং মুরাদ এবং মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় (ক্যাম্প) এ হামলা, ভাংচুর ও হত্যার হুমকির অভিযোগের প্রেক্ষিত্রে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রদল নেতাসহ ৩ জনকে তলব করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত পৃথক ৩টি নোটিশের মাধ্যমে অভিযুক্তদের তলব করা হয়েছে।

নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন, সাভার সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম রুবেল, সাভার পৌরসভার কাতলাপুরের সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. বাবু ও পলাশ। অভিযোগ রয়েছে এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও মাজহারুল ইসলাম রুবেল তার বোন জামাই সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম রাজীবের মাধ্যমে সম্প্রতি আওয়ামীলীগের একটি ইউনিয়ন কমিটিতে সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।

অভিযুক্তদের আগামী ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১০ টার সময় ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ জাকির হোসেনের কার্যালয়ে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এসব ঘটনার মধ্যেই পৃথক আরেকটি ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩ টায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ তৌহিদ জং মুরাদের ঈগল প্রতীকের সমর্থক সাভার সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল রানার বাড়ির প্রধান ফটকে হামলা ও গেট ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম রাজীবের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এতে অংশ নেয়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানার কলমা এলাকার নিজ বাসভবনের সামনে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে হট্টগোল ও বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় এক ঘন্টা ব্যাপী থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়, এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকার সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম রাজীবের সঙ্গে থাকা অনেককেই না চিনলেও তারা হেমায়েতপুর ও সাভার পৌরসভার গেন্ডা এলাকার বাসিন্দা এবং সাভার সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম রুবেলের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এই প্রসঙ্গে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।