• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন

চাকরির নামে ডিএসসিসি’র গাড়ি চালকের প্রতারণা


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৯, ২০২২, ১১:১৭ অপরাহ্ন / ২২৩
চাকরির নামে ডিএসসিসি’র গাড়ি চালকের প্রতারণা

নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) পরিচ্ছন্নকর্মী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মো.আমির হোসেন দুইজন ব্যক্তির কাছে থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা হলেন- রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. আলম মুন্সি ও যাত্রাবাড়ির স্বপন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মো আমির হোসেন ডিএসসিসি’র পরিচ্ছন্নকর্মী চাকরি দেওয়ার কথা বলে মো.আলম মুন্সির কাছে থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছড়াও একই পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে স্বপন নামের অপর ব্যক্তির কাছ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এসব অভিযোগে ডিএসসিসি’র মেয়র বারবার প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন প্রতারিত ঐ দুজন।

গত ১৫ ডিসেম্বর ডিএসসিসি’র মেয়র বরাবর লিখিত অভিযোগে মো.আলম মুন্সি বলেন, আমি রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা। এক বছরে দুই কিস্তিতে ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক আমির হোসেনকে মোট এক লাখ ৭০ হাজার টাকা আমি দিয়েছি। আমির হোসেন আমার ছেলে মো. আশিককে পরিচ্ছন্নকর্মী পদে চাকরি দেবে। এ আশ্বাসেই অনেক কষ্ট করে ঋণ নিয়ে তাকে টাকাগুলো দিয়েছিলাম।

তবে এখন চাকরি তো দূরের কথা আমির হোসেন আমার সঙ্গে দেখা করা, এমনকি কথাবার্তাও করছেন না। উপরন্তু আমির হোসেন আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকারও করছেন। আমি খুব গরিব-অসহায় মানুষ। এ পরিস্থিতিতে আমি কোনো উপায় না পেয়ে সুবিচারের আশায় বাধ্য হয়ে আপনার কাছে ঘটনাটি জানালাম।

এছাড়া ডিএসসিসি’র মেয়র বরাবর স্বপন নামের অপর এক ব্যক্তি আমির হোসেনের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন বলেও ডিএসসিসিতে অভিযোগ করছেন।

প্রতারণার শিকার মো. আলম মুন্সি বলেন, আমার মেয়ের জামাইয়ের সঙ্গে মো. আমির হোসেনের ভালো সম্পর্ক ছিলো। সেখান থেকে মো. আমির হোসেন মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসতো। সে সুবাধে তার সঙ্গে পরিচয় ও সখ্যতা গড়ে উঠে।

প্রতারণার শিকার স্বপন নামের অপর ব্যক্তি বলেন, আমি গাড়ি চালাতাম। চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে আমির হোসেনকে আমার পরিবার এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়। এর কয়েকমাস পরে আমাকে তার গাড়ি চালাতে না দিয়ে অন্যকে গাড়ি বুঝিয়ে দেন। পরবর্তীতে চাকরি জন্য অপেক্ষা করি। বর্তমানে ফোন দিলে তিনি আমার ফোন ধরেন না। টাকা চাইলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান এবং অস্বীকারও করেছেন। এজন্য মেয়র বরাবর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।

এদিকে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. আমির হোসেন বলেন, আমি ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালাই। যোগ্য সৎ ও দক্ষ বলেই এখানে আসতে পেরেছি। চাকরি দেওয়ার নামে কারো কাছে থেকে কোনো টাকা নেইনি।

তিনি আরো বলেন, মো.আলম মুন্সি ও স্বপন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারলে যে বিচার হবে, তা-ই মাথা পেতে নেব। তাদের আমি চিনতাম না। আমার বাসায় গিয়ে আমাকে মারার চেষ্টা করছে তারা। এটা নিয়ে আমি ৯৯৯ তে ফোনও দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমি গাড়ি চালক শ্রমিক সংগঠনের প্রচার সম্পাদক। গাড়ি চালকদের অনিয়মের বিষয়ে টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলাম। এরপর থেকে কিছু লোক আমার পেছনে লেগেছে।

পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বিপুল চন্দ্র সেন বলেন, আমার কাছে এখনও এ ধরনের কোনো চিঠি আসেনি। যেহেতু মেয়র বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে, অবশ্যই আমার কাছে চিঠি আসবে। চিঠি হাতে পেলে আমির হোসেনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ বলেন,ডিএসসিসি’র কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাকরির নামে প্রতারণার প্রমাণ পেলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগের চিঠি পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অবস্থা নেয়া হবে। আর যদি মিথ্যা অভিযোগ করা হয়, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।