• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১২ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয় যেন আজাবের দপ্তর


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৮, ২০২৫, ৯:৩৮ অপরাহ্ন / ৫৬
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয় যেন আজাবের দপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কার্যালয় যেন আজাবের দপ্তর হয়ে উঠেছে। জনস্বার্থে এমনিই অভিযোগ তুলে ধরেছেন আঃ আহাদ নামের এক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

অভিযোগে আঃ আহাদ জেলা প্রশাসককে উল্লেখ করে লিখেছেন, আপনার অধীনে থাকা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম পূর্ব থেকেই অত্যন্ত সুনামের সহিত চলে আসিতেছিলো। এমনকি জেলা প্রশাসক গোপালগঞ্জ জেলায় যোগদানের পরেও সকল শাখা অতি সুনামের সাথে পরিচালনা হচ্ছিল। এতে গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষ খুবই আনন্দিত ছিলেন। দুঃখের বিষয় বেশ কিছুদিন যাবৎ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কার্যালয় সেবা গ্রহীতাদের কাছে আজাবের দপ্তর হয়ে উঠেছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে কানুনগো মুজিবর রহমান, অফিস সহকারী বিল্লাল শরীফ, নাইট গার্ড নয়ন পাইক, এম.এল. এস.এস মাছুমা ও নাহিদ মিলে অফিসটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। দপ্তরটিতে ঘুষ ছাড়া মিলছে না নামজারি সহ ভূমি সংক্রান্তে অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা।

জেলা প্রশাসকের কাছে করা লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে আমাদের প্রতিনিধি ভূমি দপ্তরটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ও বিভিন্ন সেবা গ্রহীতাদের সাথে কথা বলে ঘুষ গ্ৰহনের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সেবা গ্ৰহীতা আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, সকল ধরনের কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও নামজারি করতে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা হতে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে মাসের পর মাস ভূমি অফিসের বারান্দায় ঘুরে ঘুরে নাজেহাল হতে হয়। এছাড়াও কাগজপত্রে সাধারণ ত্রুটি থাকলে ৫০ হাজার হতে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাবি করে। এই ঘুষ লেনদেনের নেতৃত্ব দেয় কানুনগো মুজিবর রহমান, অফিস সহকারী বিল্লাল শরীফ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জানান, সহকারী কমিশনার ভূমির দপ্তরে যা কিছুই ঘটুক এসি ল্যান্ডের নির্দেশেই ঘটে। সকল অনিয়মের সাথেই বর্তমান এসি ল্যান্ড জড়িত। কিছুদিন পূর্বে এসি ল্যান্ড মিজ বাবলী শবনম তার অফিসে বসে একজন বয়স্ক লোকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তৎকালীন সময় উক্ত বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। তিনি প্রচুর বদমেজাজি একজন অফিসার। ভুক্তভোগীরা আক্ষেপ করে বলেন, ভূমি অফিসে নিয়োজিত কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দৃশ্যমান ও প্রমাণিত হওয়ার পরেও জেলা প্রশাসন তাদেরকে শাস্তি স্বরূপ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বদলি করেই দায় সারা কাজ করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ওই সকল অসাধু কর্মকর্তা- কর্মচারীরা বছরের পর বছর নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির সাথে জড়িয়ে পড়ছেন।

এ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে কানুনগো মুজিবর রহমান, অফিস সহকারী বিল্লাল শরীফ, নাইট গার্ড নয়ন পাইক, এম.এল.এস.এস মাছুমা ও নাহিদের কাছে জানতে চাইলে তারা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজ বাবলী শবনম সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ গুলো উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা ,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমার দপ্তরে কোন অনিয়ম পেলে আগে আমাকে জানাবেন। আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবো, আমি যদি ব্যবস্থা না নেই তখন আপনারা রিপোর্ট করবেন।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) এম. রকিবুল হাসান বলেন, এধরনের কোন অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব জেলা প্রশাসক মহোদয় এখন পর্যন্ত আমাকে দেয়নি। আমি তদন্তের দায়িত্ব পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।